বাইডেন-পুতিন ফোনালাপ: রাশিয়ার সৈন্য সরানোর আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ইউক্রেন ইস্যুতে চরম উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, রাশিয়া যেকোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে।
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
হোয়াইস হাউস জানিয়েছে, বাইডেন ও পুতিন ভিডিওকলে কথা বলেন। ফোনে পুতিনকে সতর্ক করে জো বাইডেন বলেন, ইউক্রেনে হামলা চালালে রাশিয়াকে চড়া মূল্য দিতে হবে। খবর আল জাজিরার।
বাইডেন ও পুতিনের মধ্যে প্রায় ঘণ্টাখানেক কথা হয়। এ সময় বাইডেন পুতিনের উদ্দেশে বলেন, সামরিক আগ্রাসনের ফলে ইউক্রেনে বড় ধরনের মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে। এর ফলে রাশিয়ার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। আর হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্ররা দ্রুত এ কড়া জবাব দেবে। রাশিয়াকে এজন্য চড়া মূল্য দিতে হবে।
এর আগে গত শুক্রবার ওয়াশিংটন জানায়, রাশিয়া ইউক্রেনে যেকোনো সময় বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালানোর জন্য যথেষ্ট সেনা ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েন করেছে। সম্ভাব্য রুশ সামরিক অভিযানের আশঙ্কা থেকে নিজেদের নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন ছাড়তে বলা হয়।
এর পরপরই হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, বাইডেন ও পুতিন ফোনে কথা বলবেন। তিনি বলেন, রাশিয়া আগামী সোমবার এ ফোনালাপের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমরা শনিবারের প্রস্তাব দিই। আমাদের প্রস্তাবে পরে তারা রাজি হয়।
এদিকে বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপের আগে পুতিন শনিবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানায়, চলমান উত্তেজনা দ্রুত নিরসন না হলে কূটনৈতিক পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হবে না বলে পুতিনকে জানিয়েছেন ম্যাক্রো।
যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, ইউক্রেন সীমান্তে লাখো বেশি সেনার সমাবেশ মোতায়েন করেছে রাশিয়া। যেকোনো সময় ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাতে পারে দেশটি। তবে রাশিয়া বরাবরই পশ্চিমাদের তোলা এ অভিযোগ অস্বীকার করছে। দেশটি বলছে, ইউক্রেনে হামলা চালানোর কোনো পরিকল্পনা মস্কোর নেই।
এদিকে পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনৈতিক চেষ্টা যেমন চলছে, তেমনি থেমে নেই ইউক্রেইনকে ঘিরে রাশিয়ার সমর সজ্জাও। নিজেদের সীমান্ত সংলগ্ন দেশটির তিন দিকেই দিনে দিনে শক্তি বাড়িয়েছে পুতিনের দেশটি।
পশ্চিমা দেশগুলোর যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কার মধ্যেই ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাছে সমুদ্রে বড় ধরনের নৌ মহড়া করছে রাশিয়া।
যুদ্ধ এড়ানোর লক্ষ্যে মরিয়া কূটনৈতিক চেষ্টার মধ্যে রাশিয়ার এমন সমর সজ্জাকে ইউক্রেনের জন্য আসন্ন হুমকি হিসেবে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা।
তবে হামলা শুরু হলে কোন এলাকা থেকে শুরু হতে পারে সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে সিএনএন এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের ওপর তিন দিক থেকে চাপ সৃষ্টি করেছে রাশিয়া।
এর মধ্যে দক্ষিণ দিক থেকে ক্রিমিয়ায়, দুই দেশের সীমান্তবর্তী রাশিয়ার অংশ এবং উত্তরে বেলারুশে সেনা শক্তি বাড়িয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
ইউক্রেন এবং পশ্চিমা গোয়েন্দারা এ তিন এলাকাকে রণক্ষেত্র হিসেবে নজরে রাখছেন। এর প্রত্যেকটি এলাকাতেই রুশ সামরিক বাহিনীর অবস্থান পরিবর্তন চিহ্নিত করা হয়েছে।