Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
November 21, 2024
হেডলাইন
Homeকথকতাবাজার পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মজুরি ঘোষণা করা উচিত

বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মজুরি ঘোষণা করা উচিত

বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মজুরি ঘোষণা করা উচিত

গার্মেন্ট শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরির জন্য আন্দোলন করছেন। সরকার ঘোষিত মজুরি শ্রমিকরা মেনে না নেয়ায় গার্মেন্ট খাতে এখনো অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষের জের ধরে পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। মালিক পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ঘোষিত মজুরি দেয়াই কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। কিন্তু বর্তমান দুর্মূল্যের বাজার বিবেচনায় এ মজুরি অগ্রহণযোগ্য বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা। কারণ ৫৬ শতাংশ বেতন বাড়লেও বর্তমান উচ্চ খাদ্যমূল্যস্ফীতির ফলে বাজারে জিনিসপত্রের দাম ১৫০-২০০ শতাংশ বেড়েছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশ, কারখানা শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছেন। এর ধারাবাহিকতায় মজুরি বোর্ড ঘোষিত সর্বনিম্ন মজুরি প্রত্যাখ্যান করে গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড় এলাকায় আন্দোলনরত কারখানা শ্রমিকদের সঙ্গে ফের সংঘর্ষ হয়েছে পুলিশের। শ্রমিকরা মহাসড়কে কাঠ, গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

এর আগের দিন সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ দেখান পোশাক শ্রমিকরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক নারী শ্রমিক নিহত হন। স্বজনদের দাবি, পুলিশের গুলিতে তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আরো এক শ্রমিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার, যা আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। শ্রমিকদের একটি অংশ তা প্রত্যাখ্যান করে ন্যূনতম বেতন ২৩ হাজার টাকার দাবিতে বুধবার সকালে কোনাবাড়ীতে রাস্তায় নামেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

পোশাক খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি খাতের বেতন ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। ১৯৯৪ সালে প্রথম মজুরি বোর্ড হওয়ার ১২ বছর পর মজুরি নির্ধারণ করা হয়। এর চার বছর পর বেতন বাড়ানো হয়। তিন বছর পর ওয়েজ বোর্ড হয়। তারপর ২০১৮ সালে আবার ওয়েজ বোর্ড হয়। তখন পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ঠিক করা হয়েছিল ৮ হাজার টাকা। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে চলতি বছরের শুরু থেকেই বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছিলেন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।

এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন মজুরি কাঠামো নির্ধারণের জন্য গত এপ্রিলে নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে সরকার। গত অক্টোবরে বোর্ডের চতুর্থ সভায় ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতম মজুরি দাবি করে শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধিরা প্রস্তাব দেন। অন্যদিকে কারখানা মালিকদের পক্ষ থেকে ১০ হাজার ৪০০ টাকা মজুরি নির্ধারণের প্রস্তাব আসে।

মালিক পক্ষের এ মজুরি প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২৩ অক্টোবর গাজীপুরের কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে এটি মিরপুর, আশুলিয়া, সাভারসহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। মালিক পক্ষের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে মূল মজুরি ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণ করে বাংলাদেশ সরকার। তবে গত ২২ অক্টোবর ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের চতুর্থ সভায় শ্রমিক প্রতিনিধিরা ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা মজুরি দাবি করেছিলেন।

আবার এক পর্যালোচনা অনুযায়ী, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি কার্যত ৩৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ বাড়াতে হবে। কারণ ২০১৮ সালে মজুরি কাঠামো ঘোষণার পর প্রতি বছরই শ্রমিকদের মজুরি ৫ শতাংশ বেড়েছে। হিসাব করে দেখা গেছে, প্রতি বছর ৫ শতাংশ বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করলে নতুন কাঠামোয় শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়বে ৩ হাজার ১৫৫ টাকা। তাত্ত্বিকভাবে হিসাব করলে মজুরি বৃদ্ধির হার এটিই হবে।

শ্রমিকদের দাবি, ৭ নভেম্বর নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী যে মজুরি ঘোষণা করা হয়েছে তা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ধারা ১৪১-এর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। ধারা ১৪১ অনুযায়ী শ্রমিকের জীবনযাপন ব্যয়, জীবনযাত্রার মান, উৎপাদন খরচ, উৎপাদনশীলতা, উৎপাদিত পণ্যের মূল্য, মূল্যস্ফীতি, কাজের ধরন, ঝুঁকি ও মান, ব্যবসায়িক সামর্থ্য, দেশ এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করে দেখার বিধান রয়েছে।

শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী মজুরি বাড়ানো হলে তা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারত। এতে শ্রমিকদের কর্মস্পৃহা ও উৎপাদনশীলতা বাড়ত। তাই উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সরাসরি সম্পৃক্ত শ্রমিকদের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করা প্রয়োজন। এতে আখেরে গার্মেন্ট খাতেরই উন্নতি হবে।

বণিক বার্তার সৌজন্যে

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment