বিজয় সমাবেশে নিউইয়র্কে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা
বিজয়ের চেতনায় দেশ বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন প্রবাসের বীর মুক্তিযোদ্ধারা। একইসাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলার পক্ষে সকল প্রবাসীকে ঐক্যবদ্ধ রাখার অঙ্গীকারও করা হয় ‘জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে। ১৮ ডিসেম্বর নিউইয়র্কে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের ‘বিজয়ের সংবর্ধনা সমাবেশ’-এর এ আয়োজন করেছিল ‘সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ’৭১’র যুক্তরাষ্ট্র চ্যাপ্টার। এ আয়োজনে সহায়তা দেয় ‘মুক্তিযোদ্ধা সন্তান-প্রজন্ম ফোরাম’ এবং ‘বিশ্ববাংলা টোয়েন্টিফোর’ টিভি।
হোস্ট সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদের সভাপতিত্বে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা-সাংবাদিক লাবলু আনসারের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত কন্সাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসান। যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানের একাত্তরের স্মৃতিচারণ এবং সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেন বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব:) মঞ্জুর আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন তালুকদার, কণ্ঠযোদ্ধা শহীদ হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মুজিবুল হক, ফোরামের সেক্রেটারি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারি, বিশ্ববাংলা টোয়েন্টিফোর টিভির সিইও এবং সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কোষাধ্যক্ষ আলিম খান আকাশ এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তান-প্রজন্ম ফোরামের আহবায়ক আশরাব আলী খান লিটন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাজমুল হাসান বলেন, ‘এটা সকল বাঙালির জন্যে পরম সৌভাগ্যের বিষয় যে, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারিরা মানচিত্র থেকে বাংলাদেশকে মুছে ফেলার কথা ভেবেছিল। কিন্তু জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীর্ঘদিন পর হলেও বাংলাদেশ পুনরায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরেছে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই অনেকটা অগ্রগতিসাধিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদানের সময় উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয়। সম্মাননা ক্রেস্টসমূহ হস্তান্তর করেন মুক্তিযোদ্ধা-প্রজন্ম আলিম খান আকাশ এবং আশরাব আলী খান লিটন। মুক্তিযোদ্ধাগণের মধ্যে ছিলেন মেজর (অব:) মঞ্জুর আহমেদ, শহীদ হাসান, রথীন্দ্রনাথ রায়, রাশেদ আহমেদ, রেজাউল বারি, লাবলু আনসার, মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, আব্দুর রহমান, শহীদুল ইসলাম, নাজিম উদ্দিন, মকবুল হোসেন তালুকদার, এনামুল হক, ফিরোজুল ইসলাম পাটোয়ারি, এমদাদুল হক, রফিক আহমেদ, আবুল বাশার ভূইয়া, শামসুল আলম চৌধুরী, হাজী আব্দুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, মিজানুর রহমান চৌধুরী, ড. মজিবুল হক, মনজুর আহমেদ, মলিন চন্দ্র সাহা প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শুরু হয় সবিতা দাস এবং উইলি নন্দির নেতৃত্বে সমবেত কণ্ঠে দেশের গানের মধ্য দিয়ে। সমাপনী ঘটে কণ্ঠযোদ্ধা শহীদ হাসানের বিজয়ের আমেজে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের কালজয়ী গানের মধ্য দিয়ে। এর আগে প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী শাহ মাহবুবের কণ্ঠেও মুক্তিযুদ্ধের দামামা-সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। তবলায় ছিলেন সজীব মোদক। দেশের গানের সাথে নৃত্য পরিবেশন করে এ প্রজন্মের প্রেয়তী পাল। ছিল বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কবিতা পাঠের আসরও।
অনুষ্ঠানের শেষপর্বে ‘মুক্তিযুদ্ধে আলেম সমাজ’ গ্রন্থের কপি মুক্তিযোদ্ধাগণকে প্রদান করেন লেখক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ। এ সময় মুুিক্তযোদ্ধাগণের পক্ষ থেকে এই লেখককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
তথ্য সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন