বিদেশ থেকে টাকা ফেরত আসবে: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘বিভিন্ন সময় নানাভাবে যদি কেউ দেশ থেকে টাকা বিদেশে নিয়ে থাকে সেগুলো দেশে ফেরত আসবে। এমন সুবিধা দেবো, যেন সবাই টাকা নিয়ে ফিরে আসে।’
বৃহস্পতিবার (১২ মে) রাজধানীর খামার বাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ ও ২০২০ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ।
অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মোহাম্মদ নাছের।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা, ইউরোপের অনেক দেশে এখন টাকা রাখলে কমিশন দিতে হয়। এখন আর সুদ পায় না। তাই যে কোনো উপায়েই হোক বাংলাদেশ টাকা চলে আসবে। কারণ, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে টাকা রাখলে বেনিফিট পাওয়া যায়।’
অনুষ্ঠানের প্রবাসীরা ওয়েজ আর্নার বন্ডের বিনিয়োগ সীমা বাড়ানোর দাবি জানালে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব। আশা করছি প্রবাসীদের স্বার্থে ইতিবাচক সাড়া পাব। তবে আপনারা বেশি করে রেমিট্যান্স পাঠাবেন। আমরা আপনাদের সাপোর্ট দিব আপনারা দেশকে সাপোর্ট দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বযোদ্ধের পর এখন সবচেয়ে খারাপ সময় যাচ্ছে। করোনায় বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। এই করোনা ব্যবস্থাপনায় বিশ্বে পঞ্চম, এশিয়ায় প্রথম হয়েছে বাংলাদেশ। আমরা কাজ করি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য।’
প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনাদের রেমিট্যান্স পাঠানোর অনেক সোর্স আছে। কিন্তু সরকারি মাধ্যম ছাড়া অন্য কোনো উপায় গ্রহণযোগ্য নয়। আপনারা রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সহায়তা করবেন। রেমিট্যান্সের উপরে প্রণোদনা দিয়ে স্বীকৃতি দিয়েছি। রেমিট্যান্স আনতে যারা কাজ করছে তাদের স্বীকৃতি দেয়া যায় কিনা আমরা ভেবে দেখব।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ‘আরকো পেমেন্ট পরিশোধের পরেও গতকাল বুধবার পর্যন্ত ৪২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ আছে। সরকারের প্রণোদনা দেওয়ার কারণে রেমিট্যান্স বেড়েছে।’
প্রবাসীরা সরাসরি আসার কারণে করোনাকালীন রেমিট্যান্স বেশি বেড়েছে। ডিজিটাল হুন্ডির কারণে নয়। রেমিট্যান্স ২০ বিলিয়নের কাছাকাছি যাবে বলে আশা করছি।
ডাচ বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মোহাম্মদ শিরিন বলেন, ‘রেমিট্যান্স ব্যবস্থায় এক্সচেঞ্জ রেট গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংকের চেয়ে হুন্ডি রেট বেশি দিলে ব্যাংকে টাকা পাঠায় না। তাই আমরা প্রস্তাব করছি, এক দেশ এক রেট হওয়া উচিত।’
তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক একটি রেট দিলে আমরা পরিপালন করি অন্য যারা করছে না তারা রেমিট্যান্স বেশি পায়। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তাই যে কোনো নিয়ম করলে যাতে সবাই পরিপালন করে সেই ব্যবস্থা করা উচিত।’
অগ্রনী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ শামস- উল-ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মানতে গিয়ে আমরা পিছিয়ে পড়ছি। আমদানি চাহিদা বাড়ছে রেমিট্যান্স কমেছে। রেমিট্যান্সের সুবিধা কীভাবে বাড়ানো যায় সেদিকে নজর দেওয়া উচিত। তার জন্য একটা সুষ্ঠু পরিকল্পনা করে এগিয়ে যেতে হবে।’
এবার ৬৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈধ পথে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) দেশে পাঠাতে উৎসাহ দিতেই সপ্তমবারের মতো এই আয়োজন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।