ব্যবসায়ীকে ক্রসফায়ারের হুমকি: ওসিসহ চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে ব্যবসায়ীকে ক্রসফায়ার, চাঁদা দাবি ও মারধরের অভিযোগে থানার ওসিসহ চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে পুলিশের হুমকিতে আত্মগোপনে রয়েছেন মামলার বাদী। গত বৃহস্পতিবার বগুড়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন কাপড় ব্যবসায়ী আ ফ ম হানযালা।
তিনি উপজেলার সদর ইউপির দিঘলকান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে এবং সারিয়াকান্দি তরফদার মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী।
মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা হলেন সারিয়াকান্দি থানার ওসি মিজানুর রহমান, এসআই রবিউল করিম, মাহবুব হাসান ও সারিয়াকান্দি চন্দনবাইশা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সাবেক এসআই রবিউল ইসলাম। বর্তমানে রাজশাহীর বাঘা থানায় এসআই রবিউল ইসলাম কর্মরত আছেন। আদালত এজাহার আমলে নিয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সেই তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ধার্য তারিখে আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৫ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সারিয়াকান্দির গোল্ডেন।
চাইনিজ রেস্টুরেন্ট থেকে সারিয়াকান্দি থানার এসআই রবিউল করিম ও মাহবুব হানযালাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান । এরপর মধ্যরাতে তাকে হাজত থেকে বের করে থানার এসআইদের রুমে নিয়ে গিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। মারধর করার আগে গামছা দিয়ে হানযালার চোখ বাঁধা হয়েছিল। মারধর শেষে তার চোখের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। ওই সময় ওসি মিজানুর বলেন, এসব বিষয়ে মুখ খুললে ক্রসফায়ারে তাকে মেরে ফেলা হবে। তার কাছে চাঁদাও দাবি করা হয়। পরে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। পরের দিন ২৬ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে দুটি মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। পরে হানযালা জামিনে মুক্ত হন। মুক্তি পাওয়ার কয়েক দিন পরে তিনি মামলাটি করেন।
আইনজীবী জাকিউল আলম সোহেল জানান, পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন হানযালা। তার ওপর প্রচুর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। আতঙ্কে বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন হানযালা। পুলিশের ভয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইলও বন্ধ করে রেখেছেন।
মামলার অভিযোগ সম্পর্কে সারিয়াকান্দি থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, ‘সুনির্দিষ্ট মামলায় হানযালাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পরদিনই তাকে আদালতে পাঠানো হয়। তাকে মারধর করা হয়নি। তাকে কোনো মিথ্যা মামলাও দেওয়া হয়নি। তার কাছে চাঁদা দাবির বিষয়টিও সম্পূর্ণ মিথ্যা।’