ব্রিটেনের কাছ থেকে রোজেটা স্টোন ফেরত চায় মিশর
হায়ারোগ্লিফিক লিপির রহস্য উন্মোচন ও মিশরবিদ্যার জন্ম দেয়া রোজেটা স্টোনকে মিশরের কাছে ফিরিয়ে দিতে ব্রিটেনের কাছে আবারও আহবান জানিয়েছেন মিশরীয় প্রত্নতত্ত্ববিদরা।
বুধবার (৫ অক্টোবর) রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে মিশরীয় প্রত্নতত্ত্ববিদদের একটি অনলাইন কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার মানুষ সই করেছেন।
মিশরের আসওয়ান শহরের আর্কিওলজি কলেজের ডিন মনিকা হ্যানা জানিয়েছেন, মিশরের মানুষের কাছ থেকে কী নিয়ে নেয়া হয়েছে তা তাদেরকে জানাতেই এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
রোজেটা স্টোন একটি প্রাচীন পাথরের ফলক, যার জন্ম খ্রিস্টের জন্মেরও ১৯৬ বছর আগে। ১৭৯৯ সালে নেপোলিয়নের সেনাবাহিনী এটি মিশরে আবিষ্কার করে।
ব্রিটেনের কাছে নেপোলিয়নের পরাজয়ের পর ১৮০১ সালে আলেকজান্দ্রিয়ার চুক্তি অনুযায়ী রোজেটা স্টোন ব্রিটেনের দখলে চলে যায়। ১৮০২ সাল থেকে এটি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত রয়েছে।
রোজেটা স্টোনে হারারোগ্লিফ, ডেমোটিক ও প্রাচীন গ্রিক লিপিতে লেখা রয়েছে। ১৮২২ সাল থেকে এটির পাঠোদ্ধার শুরু করেন ফরাসি ভাষাতত্ত্ববিদ জিন-ফ্রাঁসোয়া শ্যাম্পোলিয়ন। এর ফলে প্রাচীন মিশরীয় ভাষা ও সংস্কৃতি বোঝার পথ সুগম হয়।
এর আগেও রোজেটা স্টোন ফেরত দেয়ার দাবি জানিয়েছেন মিশরীয় প্রত্নতত্ত্ববিদরা। তবে উপনিবেশদের কাছ থেকে কেড়ে নেয়া প্রাচীন প্রত্নবস্তু ফিরিয়ে দেয়ার যে চর্চা সম্প্রতি শুরু হয়েছে, তা এবার তাদের দাবির পালে হাওয়া লাগাবে বলে আশা করছেন তারা।
মনিকা হ্যানা বলেন, এক সময় না এক সময় এ সব বস্তুই ফিরিয়ে দেয়া হবে, কেননা জাদুঘরগুলোর নৈতিক আদর্শের পরিবর্তন হচ্ছে। এখন শুধু প্রশ্ন হচ্ছে কবে সেটা ঘটবে।
‘এই পাথরটি সাংস্কৃতিক সহিংসতার প্রতীক, সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদের প্রতীক। সুতরাং এটিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে পরিবর্তনের প্রতীক’- যোগ করেন তিনি।
তবে এটিকে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে মিশরের সরকারের কাছ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ মিউজিয়ামের এক মুখপাত্র।
ব্রিটিশ মিউজিয়ামের এক ইমেইল বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ১৭৯৯ সালে এরকম ২২টি পাথরের ফলক আবিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে রোজেটা বাদে বাকি সবগুলো এখনও মিশরেই রয়েছে।
মিশরজুড়ে সহকর্মীদের সাথে ইতিবাচক সহযোগিতাকে ব্রিটিশ মিউজিয়াম ব্যাপক মূল্য দেয় বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।