ভারতে ‘বুলডোজার’ অভিযান চলবে: সুপ্রিম কোর্ট
ভারতের উত্তরপ্রদেশে ‘বুলডোজার অভিযান’সহ দেশের অন্যত্র চলা উচ্ছেদ অভিযানে স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতের দুই বিচারপতি বিআর গাভাই এবং পিএস নরসিমহা গতকাল বুধবার এই সংক্রান্ত মামলায় বলেন, ‘আমরা শুনানি চলাকালে উচ্ছেদ অভিযানে স্থগিতাদেশ জারি করতে পারি না। তাতে প্রশাসনিক সংস্থার কাজে হস্তক্ষেপ করা হয়। উচ্ছেদ অভিযান আইন মেনে হবেসেটাই কাম্য।’
কয়েক মাস ধরে উত্তরপ্রদেশসহ বিজেপি শাসিত বেশকিছু রাজ্যে বেআইনি দখলদারি উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। ধর্ষণ, খুন ও প্রতিবাদের নামে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টিকারীদের সরকারি সম্পদ ধ্বংসের অভিযোগে অভিযুক্তদের ঘরবাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে প্রশাসন। ওই অভিযান ঘিরে তীব্র সমালোচনা দেখা দিয়েছে। মুসলমানদের একাধিক সংগঠনের বক্তব্য, এই অভিযানের মাধ্যমে পরিকল্পনা করে মুসলিমদের টার্গেট করা হচ্ছে। অপরাধীকে সাজা দিতে গিয়ে পুরো পরিবারকে নিরাশ্রয় করার পাশাপাশি মানবাধিকার মারাত্মকভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে।
অরাজনৈতিক সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ বুলডোজার অভিযান বন্ধের দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। গতকাল বুধবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আবেদনকারীদের বক্তব্য ১০ আগস্ট শোনা হবে। তার আগে অন্য সব পক্ষের বক্তব্য শুনবে আদালত।
সুপ্রিম কোর্টে এই ইস্যুতে আলাদা মামলা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ১০০ দিন পূর্ণ করেছে যোগী সরকার। নির্বাচনের আগে দেওয়া ঘোষণা মতো দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেই বুলডোজার দিয়ে অপরাধীদের ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়ার কাজ শুরু করে তার সরকার। অভিযোগ উঠেছে, এই অভিযানে বিশেষভাবে টার্গেট করা হয়েছে মুসলমানদের। তা নিয়ে বিরোধী দল, এমনকি আদালতেরও প্রশ্নের মুখে পড়েছে সরকার। কিন্তু ১০০ দিনের কাজের খতিয়ান হিসাবে অপারেশন বুলডোজারকেই হাতিয়ার করেছেন যোগী। দ্বিতীয় সরকারের শততম দিনে জানানো হয়েছে, ১০০ দিনে ৬৮ হাজার বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দিয়েছে সরকার। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৮৪৪ কোটি টাকার সম্পত্তি।
এমতাবস্থায় বুধবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্বস্তি পেল যোগী সরকার। তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে, সুপ্রিম কোর্ট দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরী এলাকায় উচ্ছেদের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও এবং বিআর গাভাইয়ের বেঞ্চ তখন নির্দেশ দেয়, অভিযানের আগে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে কিনা তা আগে খতিয়ে দেখা হোক।