‘ভুয়ো ভিডিও এবং মিথ্যে অভিযোগ আনছে বিরোধীরাঃ নরেন্দ্র মোদি
দিল্লির রামলীলা ময়দানের এক সমাবেশে বক্তব্য রাখার সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিরোধীদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনে বলেন, ‘ভুয়ো ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে। মিথ্যে অভিযোগ কেন আনছে বিরোধীরা? বিরোধীরা দেশকে বদনাম করার ষড়যন্ত্র করছে। কাদের ভয় পাচ্ছেন ওঁরা? কংগ্রেস যে পথে এগিয়েছিল, আমরা তো সেকথাই বলছি।’
তিনি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জি এনারসি নিয়ে আরও বলেন, ‘দেশের কোনও মুসলিমকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে না। এনআরসি বা নাগরিকত্ব আইনের ফলে এদেশে জন্ম নেওয়া মুসলিম নাগরিকদের কোনও অসুবিধা হবে না। একথা জানা সত্ত্বেও মুসলিমদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর বিষয়ে মিথ্যে প্রচার হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এই আইনে অনুপ্রবেশকারীরা ভয় পাচ্ছে। এই আইন সেই সকল শরণার্থীদের জন্য যাঁরা বহু বছর এ দেশে রয়েছেন।সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কারও নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য নয়। শরণার্থীরা বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। আমরা শরণার্থীদের সাহায্য করছি। প্রতিবেশি দেশে যাঁরা ধর্মের কারণে নির্যাতিত, তাঁদের সাহায্য করা হবে।’
এদিকে আজ (রোববার) পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায় বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশের নেতৃত্ব দেন সিএপিএম নেতা ও সাবেক এমপি মুহাম্মাদ সেলিম। তিনি গণমাধ্যমে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘সংশোধিত আইনের নামে, এনআরসির নামে, এনপিআর-এর নামে একটার পর একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার। ওরা মনে করেছিল ধর্মের উন্মাদনা তৈরি করা মানুষকে ভাগ করবে। বিভেদধর্মীর বিরুদ্ধে মিলনধর্মী নাগরিক সমাজ, মানুষ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে যারা বিবেক সম্পন্ন মানুষ তাঁরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। আজকে গোটা দেশ উত্তাল। ওঁরা ইন্টারনেট বন্ধ করে, ১৪৪ ধারা জারি করে, সাম্প্রদায়িক রং চড়িয়ে, পুলিশের লাঠিচার্জের মধ্য দিয়ে উত্তর প্রদেশ, দিল্লি, অসম সহ গোটা দেশে জরুরি অবস্থার চেয়েও খারাপ অবস্থা তৈরি করেছে। খবরের কাগজ, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যে কোনটা সরকারের পক্ষে সেটা বলবে এবং কোনটা বলবে না। বিজেপি-আরএসএস মানুষের মন বিষিয়ে দেওয়ার জন্য নানাভাবে ফটোশপের মাধ্যমে মিথ্যে ছবি ও ভিডিও করে চেষ্টা করছে যাতে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করা যায়। কিন্তু ওঁরা এভাবে যতবেশি চেষ্টা করছে মানুষ ততবেশি ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে।’
অন্যদিকে আজ ভারতের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধি এমপি সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার বার্তায় কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘প্রিয় ভারতের যুবসমাজ। মোদি এবং শাহ আপনাদের ভবিষ্যৎ শেষ করে দিয়েছে। বেকারত্ব এবং অর্থনীতি ইস্যুতে ওঁরা আপনাদের ক্রোধের সম্মুখীন হতে পারবে না। সেজন্যই, ওঁরা আমাদের প্রিয় দেশকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছে ও ঘৃণার আড়ালে নিজেদের লুকিয়ে রাখছেন।’ ওদের বিরুদ্ধে লড়াই করার একমাত্র উপায় হল, প্রত্যেক ভারতীয়কে ভালবাসা বলেও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি মন্তব্য করেন।