মোদিকে প্রিয়াংকার প্রশ্ন: ‘চোর বলায় জেল, শহীদের ছেলেকে মীর জাফর বললে নয় কেন?’
মোদিকে চোর বলায় জেল, শহীদের ছেলেকে মীর জাফর বললে নয় কেন? রাহুল গান্ধীকে নিয়ে বিজেপির বক্তব্যের প্রতিবাদে রোববার নরেন্দ্র মোদি ও তার দল বিজেপির উদ্দেশে ওই প্রশ্ন ছুড়ে দেন কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। রাহুল গান্ধীকে ‘শহীদের সন্তান’ অভিহিত করে তার বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘বিজেপি প্রতিদিন তাকে (রাহুল) অপমান করে। এমনকি নেহেরু-গান্ধী পরিবারকেও তারা রেহাই দেয়নি।’
গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে বিজেপির বেপরোয়া আক্রমণের নেতৃত্বে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আছেন বলে অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি বলেন, কাশ্মীরি পন্ডিত বংশকেও অপমান করেছেন মোদি।
রাহুল গান্ধীকে সাংসদীয় আসন থেকে অযোগ্য ঘোষণার প্রতিবাদে রোববার ভারতজুড়ে দিনব্যাপী বিক্ষোভ করছে কংগ্রেস। প্রথমে মহাত্মা গান্ধী স্মৃতিসৌধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করলে, পুলিশ তাতে বাধা দেয়। পরে পার্টির সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং কংগ্রেস প্রধান খারগে দিল্লির রাজঘাটের বাইরে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন।
প্রিয়াঙ্কা বলেন, আমার ভাই একজন শহীদের সন্তান। আপনি আমার ভাইকে বিশ্বাসঘাতক এবং মীরজাফর বলছেন। আপনি তার মাকে অপমান করেছেন। আপনার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, রাহুল গান্ধী জানেন না তার মা কে। আপনি প্রতিদিন আমার পরিবারকে অপমান করেন, কিন্তু কোনো মামলা হয় না। তিনি আরও বলেন, আপনার প্রধানমন্ত্রী ভরা পার্লামেন্টে বলেছেন, কেন এই পরিবার নেহেরু নামটি ব্যবহার করে না। তিনি (মোদি) কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পুরো পরিবারকে অপমান করেছেন।
উল্লেখ্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অপমান করায় গুজরাট আদালতে দোষী প্রমাণিত হন রাহুল। ওবিসি (পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী) সম্প্রদায়কে অপমান করার দায়ে কংগ্রেস নেতাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। সাজা পাওয়ায় ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, এমপি পদ হারান রাহুল।
কংগ্রেস সভাপতি খাড়গে বলেন, রাহুল গান্ধী কেবল কালো টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়াদের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। কংগ্রেস আজকের মতো সারা দেশে শত শত বিক্ষোভ করবে। আমরা বাকস্বাধীনতা রক্ষার জন্য লড়াই করবো। রাহুল গান্ধীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি সব বিরোধীদলকে ধন্যবাদ জানাই।
এ সময় কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা পি চিদাম্বরম, জয়রাম রমেশ, সালমান খুরশিদ, প্রমোদ তিওয়ারি, অজয় মাকেন, মুকুল ওয়াসনিক এবং অধীর রঞ্জন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। যদিও গোটা এলাকা কঠোর নজরদারিতে রেখেছে দিল্লি পুলিশ। রাজ ঘাটের আশপাশে বড় জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে তারা।
একদিন আগে রাহুল গান্ধী তার বক্তৃতায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার বক্তৃতায় ভয় পেয়েছিলেন বলে আমাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। আমি তার চোখে ভয় দেখেছি। সে কারণেই তারা চান না আমি সংসদে কথা বলি। তিনি বলেন, আমার নাম সাভারকার না। আমি একজন গান্ধী। আমি ক্ষমা চাইবো না।
গত সপ্তাহে গুজরাটের আদালত রাহুলের জামিন মঞ্জুর করে। সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ দিয়ে ৩০ দিনের জন্য সাজা স্থগিত করেন বিচারক। রাহুলের আইনজীবীরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন। এর পর পর কেরালার ওয়েনাদে রাহুলের নির্বাচনি এলাকা শূন্য ঘোষণা করে লোকসভা। নির্বাচন কমিশন এখন আসনটির জন্য বিশেষ নির্বাচনের ঘোষণা দিতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার পত্রিকা