Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
December 22, 2024
হেডলাইন
Homeবাংলাদেশমৌমিতা হত্যা মামলা, গ্রেপ্তার ১

মৌমিতা হত্যা মামলা, গ্রেপ্তার ১

মৌমিতা হত্যা মামলা, গ্রেপ্তার ১

রাজধানীর কলাবাগান থানা এলাকায় ভবনের নিচ থেকে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী তাজরিন মোস্তফা মৌমিতার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মৌমিতার পরিবার সোমবার রাতে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার বাদী হন মৌমিতার বাবা কামাল মোস্তফা খান ওরফে শামীম।

এ মামলায় আদনান নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আদনান শুক্রবার ঘটনার পর থেকেই পুলিশ হেফাজতে ছিলেন।

মামলার এজাহারে হত্যায় জড়িত রয়েছে সন্দিগ্ধ হিসেবে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়। অভিযোগ করা হয়েছে বাসার ছাদে উঠলেই মৌমিতাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করত ফাইজার ও তার বন্ধুরা।

প্রতিবেশী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৌমিতাকে ‘উত্ত্যক্ত করার বিষয়টি সবারই জানা ছিল’। বাসার নিচে নামলেও অনেকবার মৌমিতাকে উত্ত্যক্ত করেছে ফাইজার ও তার বন্ধুরা।

কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিতোষ চন্দ গণমাধ্যমকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহত মৌমিতার বাবার করা মামলায় আদনানকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ডে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

তিনি বলেন, মামলার এজাহারে বাদী বলেছেন, আসামিদের বিষয়ে তার দৃঢ় সন্দেহ হয়। এ ধরনের এজাহারকে বলা হয় সাসপেক্টেড। অর্থাৎ সন্ধিগ্ধ হিসেবে দিয়েছে এদের নাম।

তিনি বলেন, যেদিন থেকে ঘটনা ঘটেছে সেদিন থেকেই তদন্ত করছি। সোমবার এজাহার দায়ের হয়েছে। এজাহারে সন্দিগ্ধ হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, এগুলোর বিষয়ে আমাদের তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের বিষয়টি চলমান রয়েছে। আমাদের তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজন হলে এদের গ্রেপ্তার, পুলিশ রিমান্ড বা অন্যান্য যে সব কার্যক্রম আছে সেগুলো আমাদের তদন্তের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে পরিচালিত করব।

তিনি বলেন, পরিবারের অভিযোগের বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। এই মুহূর্তে তদন্তের স্বার্থে এর বেশি বলা যাবে না।

নিহত মৌমিতা এশিয়ান প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির মালয়শিয়া শাখায় পড়ালেখা করছিলেন। করোনার প্রভাবে গত বছর দেশে আসেন। এরপর থেকে মৌমিতা ও তার পরিবার কলাবাগান ৮ নম্বর রোডের ২ নম্বর বাড়ির চতুর্থ তলায় বসবাস করছিলেন। শুক্রবার বিকেলে মৌমিতা সাততলা ভবনটির ছাদে ওঠেন। সন্ধ্যার পর মৌমিতা ছাদ থেকে নিচে পড়ে গেছেন এমন খবর পায় পরিবার।

এ ঘটনায় কলাবাগান থানায় করা মামলার এজাহারে মৌমিতার বাবা কামাল মোস্তফা খান ওরফে শামীম উল্লেখ করেন, আমার মেঝ মেয়ে তাজরিয়ান মোস্তফা মৌমিতা (১৯) এশিয়ান প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির (এপিইউ) কুয়ালালামপুর শাখায় বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে (আইটি) ২য় বর্ষে পড়াশোনা করছিল। করোনাভাইরাসের কারণে আমার মেয়ে দেশে ফিরে আসে। ঘটনার দিন ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৪টরি দিকে আমার মেয়ে তাজরিয়ান মোস্তফা মৌমিতা একাকী আমার বাসার ভবনের ছাদের ওপর ঘুরতে যায়। আমি তাকে বিকাল ৪টা ৩৭ মিনিটে দ্রুত ছাদ থেকে বাসায় ফিরে আসার জন্য মেসেজ করি। সে মেসেজ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে উত্তরে আসছি বলে আমাকে মেসেজ পাঠায়। এরপরও আমার মেয়ে ফিরে না আসায় বিকাল অনুমান ৪টা ৪৫ মিনিটে আমার মেয়েকে ডাকার জন্য আমার বাসার কাজের ছেলে মুজাহিদকে (১০) পাঠাই। একটু পর সে ফিরে এসে জানায় ছাদে যাওয়ার দরজা ভেতর থেকে আটকান আছে, তাই সে ছাদে যেতে পারে নাই। তবে দরজার ভেতরে অর্থাৎ ছাদে আমার মেয়ে মৌমিতাসহ আরো অনেকের হৈ চৈ এবং খেলাধুলা করার শব্দ পেয়েছে।

তিরি উল্লেখ করেন, সন্ধ্যা ৬টা ২২ মিনিটে আমার স্ত্রীর মেসেঞ্জার ব্যবহার করে আমার ছোট মেয়ে আমাকে কল করে চিৎকার করে কান্নাকাটি করে এবং আমাকে দ্রুত গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যেতে বলে। আমি তৎক্ষণাৎ আমার অফিসিয়াল কাজ-কর্ম ফেলে দ্রুত গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে আসি। সেখানে এসে আমার মেয়ে তাজরিয়ান মোস্তফা মৌমিতাকে অচেতন অবস্থায় স্ট্রেচারের দেখি এবং তার কিছুক্ষণ পর ৬টা ৩২ মিনিটে কর্তব্যরত ডাক্তার আমার মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেন। আমি পরবর্তীতে আমার মেয়ের মৃত্যুর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহকালে জানতে পারি, একই ভবনের বি-৫ ফ্ল্যাটের মালিক অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিনের ছেলে ফারযাদ আহমেদ ওরফে ফাইজার ও তার বন্ধু আদনান, তানভীর, ত্রিনয়, ফাইজারের বান্ধবী অপরাজিতাসহ ফাইজারের আরো কিছু অজ্ঞাতনামা বাইরের বন্ধু ফাইজারের নেতৃত্বে নিয়মিত ভাবে ছাদে এসে আড্ডা দিত, ক্রিকেট খেলত এবং উশৃঙ্খলভাবে সময় কাটাত। আমার মেয়ে মৌমিতা করোনার কারণে একটানা বাসার ভেতরে থাকাতে একঘেয়েমিতার কারণে মাঝে মাঝে ছাদে যেত। সেই সুযোগে ফারজাদ আহমেদ ওরফে ফাইজার ও তার বন্ধু আদনানের সঙ্গে আমার মেয়ের পরিচয় হয়। সেই পরিচিতির সুযোগে তারা আমার মেয়েকে ছাদে গেলেই বিভিন্নভাবে ডিস্টার্ব করতো। গত সপ্তাহে আমার স্ত্রী আমার মেয়ের কাছ থেকে বিষয়টি অবগত হয়ে সমাধানের জন্য ফাইযারের মাকে জানালে তিনি কোনো প্রতিকার না করে তিনি আমার স্ত্রীকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। সে কারণে হয়তো কামাল উদ্দিনের ছেলে ফারযাদ আহমেদ ওরফে ফাইজার ও তার বন্ধু-বান্ধবী উত্তেজিত হয়ে প্রতিহিংসাবশঃত এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে। আমার দৃঢ় সন্দেহ বিকাল আনুমানিক ৫টা ২০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যবর্তী সময়ে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ও পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমার মেয়ে মৌমিতাকে বাসার ছাদের ওপর থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে। এ হত্যাকাণ্ডে উপরোক্ত ফারযাদ আহমেদ ওরফে ফাইজার, আদনান, তানভীর, ত্রিনয়, অপরাজিতাসহ আরো অজ্ঞাতনামাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা থাকতে পারে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে ফাইজারের বাবা কামাল উদ্দিন আহম্মেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে একতরফাভাবে বক্তব্য আসছে। এখন মিটিংয়ে আছি পরে ফোন করেন।’

পরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।❐

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment