Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
November 22, 2024
হেডলাইন
Homeপ্রধান সংবাদরমনা বটমূলে বোমা হামলার ২২ বছর

রমনা বটমূলে বোমা হামলার ২২ বছর

রমনা বটমূলে বোমা হামলার ২২ বছর

২২ বছর আগে পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালায় এক দল দুর্বৃত্ত। এতে নিহত হন ১০ জন। আহত হন অনেকে। এ ঘটনায় করা দুটি মামলার মধ্যে হত্যা মামলার বিচার শেষ হয়েছে অধস্তন আদালতে। বর্তমানে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স ৯ বছর ধরে হাইকোর্টে বিচারাধীন। এই আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য ২০২১ সালের ২৪ জুন শেষবারের মতো রাষ্ট্রপক্ষকে সময় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেদিন রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এএসএম আব্দুল মবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৪ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। আদালত সেদিন বলেছিলেন, রাষ্ট্রপক্ষকে শেষ সুযোগ হিসেবে এই সময় আবেদন মঞ্জুর করা হলো। কিন্তু এরপর ওই বেঞ্চ ভেঙে যাওয়ায় পরে আর শুনানি হয়নি। নতুন বেঞ্চও গঠন হয়নি।

ওই বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান কালবেলাকে বলেন, ‘শেষবারের মতো সময় দেওয়ার পর আমরা শুনানির প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। এ মামলার আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের একটি সারসংক্ষেপ অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে জমাও দিয়েছি। কিন্তু পরে বেঞ্চ ভেঙে যাওয়ায় আর শুনানি হয়নি। তিনি বলেন, বেঞ্চ ভেঙে যাওয়ার পর নতুন বেঞ্চ গঠনের দায়িত্ব প্রধান বিচারপতির। কিন্তু আমার জানা মতে আর নতুন বেঞ্চ গঠন হয়নি। ফলে বিষয়টি সেভাবেই পড়ে আছে।’

এদিকে রমনা বটমূলে হামলার ওই ঘটনায় করা বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলাটির বিচার অধস্তন আদালতের গণ্ডিই পেরোতে পারেনি। এক বছর আগে এ মামলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। গত বছর ২৭ মার্চ আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন শেষে যুক্তিতর্কের দিন ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু ১৩৫ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে না পারায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে ফের মামলাটি ঢাকার প্রথম মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ফেরত পাঠানো হয়। এতে তীরে এসে ঝুলে রয়েছে বিস্ফোরক মামলার বিচার। তবে আগামী মে মাসের মধ্যে এ মামলার বিচার নিষ্পত্তির প্রত্যাশা রাষ্ট্রপক্ষের।

এ বিষয়ে আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মাহবুবুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ‘মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয় না। তাদের ভার্চুয়ালি কারাগার থেকে আদালতে উপস্থাপনের জন্য চেষ্টা করছি। আশা করছি, আগামী মে মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি হবে।’

close
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল (পহেলা বৈশাখ ১৪০৮ বঙ্গাব্দ) ভোরে রমনার বটমূলে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানস্থলে দুটি বোমা পুঁতে রাখা হয় এবং পরে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে সেগুলোর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ওইদিন বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলাকালে সকাল ৮টা ৫ মিনিটে একটি ও ১০টা ১৫ মিনিটের পর অন্য বোমাটি বিস্ফোরিত হয়। নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নৃশংস ওই বোমা হামলায় প্রাণ হারান ১০ জন। আহত হন আরও অনেকেই। এ ঘটনায় হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনকে আসামি করে ওইদিনই রমনা থানার পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে আলাদা দুটি মামলা করেন।

২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর শীর্ষ হুজি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে সিআইডির পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফ আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে আলাদা দুটি সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমিন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে আদালত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—মুফতি আব্দুল হান্নান, মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে মাওলানা হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মাওলানা আবদুল হাই ও মাওলানা শফিকুর রহমান। আসামিদের মধ্যে সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী হত্যা মামলায় এ মামলার অন্যতম আসামি মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয় ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে। এ ছাড়া মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন ও মাওলানা আবু বকর ওরফে মাওলানা হাফেজ সেলিম হাওলাদার কারাগারে এবং বাকিরা পলাতক। এ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, মাওলানা সাব্বির, শেখ ফরিদ, মাওলানা আব্দুর রউফ, মাওলানা ইয়াহিয়া ও মাওলানা আবু তাহের। নিম্ন আদালতের রায়ের পর মামলাটি নিয়ম অনুসারে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পাঠানো হয়। পাশাপাশি অধস্তন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল দায়ের করেন। এসব আপিল ও ডেথ রেফারেন্স এখন বিচারাধীন।

অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। গত বছর ২১ মার্চ এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। মামলাটিতে মোট ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। ওই বছরের ৩ এপ্রিল আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন সাত আসামি। অপর আসামিরা পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাননি। ওইদিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ১১ আগস্ট দিন ধার্য করেন। পরবর্তী সময় কোনো কার্যক্রম ছাড়াই ২০২২ সালের ২৮ জুলাই ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর আদালত মামলাটি আগের আদালতে ফেরত পাঠান।

বর্তমানে মামলাটি ঢাকার প্রথম মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ এ মামলায় আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়নি। এজন্য আদালত এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আগামী ১৭ মে দিন ধার্য করা হয়েছে। মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর করার পর বর্তমানে এ মামলায় মোট ১১ জন আসামি রয়েছেন। আসামিরা হলেন—মাওলানা তাজউদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মুফতি আব্দুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান, মাওলানা আবু বকর, হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা আকবর হোসাইন, মাওলানা শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির ও মাওলানা শওকত ওসমান। তাদের মধ্যে তাজউদ্দিন, আবদুল হাই ও জাহাঙ্গীর পলাতক রয়েছে।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যারা নিহত হয়েছিলেন
চট্টগ্রাম জেলার সন্দিপ থানার দুবলা গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৩৫), বরগুনা জেলার বামনা থানার বাইজোরা গ্রামের আবুল হোসেন ওরফে এনায়েত হোসেনের ছেলে জসিম (২৩), কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার বিরামকান্দি গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে এমরান (৩২), পটুয়াখালীর সদর থানার ছোট বিমাই গ্রামের মৃত অনবী ভূষণ সরকারের ছেলে শ্যামলী পরিবহনের অসীম চন্দ্র সরকার (২৫), পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার কাজীপাড়া গ্রামের আবুল কাশেম গাজীর ছেলে মামুন (২৫), একই গ্রামের সামছুল হক কাজীর ছেলে রিয়াজ (২৫), একই এলাকার আবুল হাশেম গাজীর মেয়ে শিল্পী (২০), নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার রথি রুহিত রামপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে ইসমাইল হোসেন স্বপন (২৭), ঢাকার দোহার থানার চরনটসোলা গ্রামের মৃত আয়নাল খাঁর ছেলে আফসার (৩৫) ও অন্য একজন অজ্ঞাত পুরুষ ব্যক্তি।

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment