Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
March 12, 2025
হেডলাইন
Homeপ্রধান সংবাদশীতে সারা দেশে ৫০ জনের মৃত্যু, শৈত্যপ্রবাহ আরও ৩ দিন

শীতে সারা দেশে ৫০ জনের মৃত্যু, শৈত্যপ্রবাহ আরও ৩ দিন

শীতে সারা দেশে ৫০ জনের মৃত্যু, শৈত্যপ্রবাহ আরও ৩ দিন

সারা দেশে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। উত্তরাঞ্চলসহ দেশের কয়েকটি এলাকায় শনিবার শীতের প্রকোপ আগের কয়েকদিনের চেয়ে আরও বেড়ে যায়। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ পরিণত হয় মাঝারিতে।
 
ফলে বেড়ে যায় শীতের অনুভূতি। এদিকে শীতজনিত রোগে সারা দেশে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ১৯৬ জন। শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় দিনাজপুরে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী তিন দিন শীতের একই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের (বিএমডি) কর্মকর্তারা।
 
শুক্রবারের ধারাবাহিকতায় শনিবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে ছিল হিমালয় থেকে আসা শীতল বায়ুর প্রবাহ। মেঘমুক্ত আকাশে উর্ধ্ব আকাশ থেকে নেমে আসা শীতল বায়ু শৈত্যপ্রবাহকে আরও প্রভাবিত করে। এ কারণে বেড়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। এদিকে শীতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। বেশি দুরবস্থার মধ্যে আছেন হতদরিদ্ররা। অনেকে নানা রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন। এক্ষেত্রে শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা বেশি শোচনীয়। শনিবার দিনে বৃষ্টি হলেও সূর্যের মুখ দেখা গেছে বিভিন্ন এলাকায়।
 
ফলে উষ্ণ হওয়ার সুযোগ পেয়েছে ধরণী। দিনের তাপমাত্রা বিভিন্ন এলাকায় বেড়ে যায়। কিন্তু সূর্য ডোবার পর সারা দেশেই রাতে শীতের প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে বলে বিএমডির একজন ডিউটি কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা বলেন, বৃষ্টি হলে আকাশ থাকে মেঘমুক্ত। এতে ঊর্ধ্বাকাশের শীতল বায়ু নিম্নাকাশে বা পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসে অনায়াসে। এছাড়া রাতের ব্যাপ্তিকাল বেশি। সূর্য ঠিকমতো ধরণী উষ্ণ করতে না পারায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে গেছে। সাধারণত এ দুয়ের ব্যবধান ১০ ডিগ্রির কম হয়ে গেলে হাড় কাঁপানো শীতের অনুভূতি হয়ে থাকে।
 
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ বলে। তাপমাত্রা যদি ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। আর ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে বলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এ হিসাবে চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলসহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
 
এদিকে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে কুয়াশা। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত পড়েছে ঘন কুয়াশা। এতে এমন হয়েছে যে, কোথাও সন্ধ্যায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো পড়েছে কুয়াশা। ঘন কুয়াশায় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। দিনে গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়েও বেশি দূরের জিনিস দেখা যাচ্ছে না। দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় রেল চলাচলেও বিঘ্ন ঘটেছে। আজকে কুয়াশার প্রকোপ আরও বেড়ে যেতে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদর থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বিএমডি।
 
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামে শীতের অনুভূতি অনেক বেশি। শীতে রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কমে গেছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় কোনও কোনদিন ঠিকমতো সূর্যের মুখ দেখা যায় না।
 
শীতজনিত রোগে ৫০ জনের মৃত্যু : শীতজনিত রোগে এ পর্যন্ত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে (এআরআই) মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের ও ডায়রিয়ায় মারা গেছেন ৪ জন। বাকি ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে শীতজনিত অন্যান্য রোগ- যেমন জন্ডিস, আমাশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ, জ্বর ইত্যাদিতে। এ তথ্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের।
 
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার জানান, এআরআই-এ যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে মাদারীপুরে ২ জন, বান্দরবানে ১ জন, খাগড়াছড়িতে ১০ জন, পাবনায় ১ জন, নীলফামারীতে ২ জন ও ভোলায় ১ জন। ডায়রিয়ায় মৃতদের মধ্যে খাগড়াছড়িতে ১ জন, লক্ষ্মীপুরে ১, চাঁদপুরে ১ ও ঠাকুরগাঁওয়ে ১ জন। অন্যান্য রোগে মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৪ জন, চট্টগ্রামে ৮ জন, রাজশাহীতে ৩ জন, রংপুরে ১০ জন ও বরিশালে ৪ জন।
 
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আরও ৪ হাজার ১৯৬ জন আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৩৯ জন, এআরআই-এ (অ্যাকিউট রেসপারেটরি ইনফেকশন) আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬৬৮ জন ও অন্যান্য রোগে (জন্ডিস, আমাশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ ও জ্বর) আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ৮৮৯ জন।
 
শীতজনিত রোগ প্রসঙ্গে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ডা. একেএম শামছুজ্জামান বলেন, তাপমাত্রার সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন জীবাণুগুলো শীতকালে সক্রিয় হয়ে ওঠে। এ সময় এরা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং মানুষের মধ্যে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ ঘটায়। ফলে এ সময় বিশেষ ধরনের রোগে মানুষ আক্রান্ত হয়। সাধারণত বৃদ্ধ ও শিশুরা এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, হাঁপানি, টনসিলোটাইসিস, ব্রঙ্কিওলাইটিস, সাইনোসাইটিস, বাত, আর্থ্রাইটিস, চামড়ার শুষ্কতা অন্যতম। এসব রোগ থেকে সুরক্ষায় শীত এড়িয়ে চলতে হবে। খাওয়া ও গোসলের ক্ষেত্রে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment