শুক্রবারের বিক্ষোভে নিহত ৬, উত্তাল ভারত
প্রতিবাদে উত্তাল ভারত। উত্তর প্রদেশের সমগ্র রাজ্য জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি, ১৫ জেলাতে বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। শুধু শুক্রবারের বিক্ষোভে দেশটির উত্তর প্রদেশে ৬ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অনেকে। এছাড়া রাজ্যজুড়ে ৩ হাজার ব্যক্তিকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ।
জ্বলছে পুরো ভারত। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যুজুড়ে। বৃহস্পতিবার উত্তর প্রদেশের লখনউ এবং সম্বলে প্রচণ্ড সহিংসতার পর শুক্রবার দিনভর উত্তেজনা থাকে। সকাল থেকেই কার্যত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দিল্লির মসজিদ এলাকা। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উত্তরপ্রদেশ লখনউ, সম্বলপুর, বিজনোর, ফিরোজাবাদসহ একাধিক এলাকা।
এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একাধিক জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই আইনের বিরুদ্ধে ও জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের ‘নির্যাতনের’ প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছে।
শুক্রবারের জুম্মার নামাজ আদায়ের পড়ে মসজিদ থেকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয়। সেই বিক্ষোভে অংশ নেয় ভিম আর্মি সংগঠনের প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ। এরপর দুপুরে দিল্লির জামা মসজিদ থেকে জন্তর মন্তর পর্যন্ত একটি বিশাল প্রতিবাদী মিছিল এগোতে থাকলে তাদের গতিপথ আটকায় পুলিশ। এই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন চন্দ্রশেখর আজাদ। মিছিলটি যন্তর-মন্তর এর সামনে পৌছানোর পরই পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী সেটিকে আটকায়। যদিও পুলিশের চোখকে কার্যত ফাঁকি দিয়ে পালাতে সক্ষম হয় আজাদ। এই ঘটনায় কয়েক শতাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়। উত্তর-পূর্ব দিল্লির ১২টি পুলিশ স্টেশনে সর্তকতা জারি করা হয়েছে। ওই সকল এলাকায় এদিন পুলিশকে ফ্ল্যাগ মার্চ করতে দেখা যায়। অশান্তি ঠেকাতে দিল্লির এগারোটি মেট্রো স্টেশন শুক্রবার বন্ধ রাখা হয়।
উত্তর প্রদেশের ডিরেক্টর জেনারেল পুলিশ ওপি সিং বলেছেন, নিহতদের কেউ পুলিশের গুলিতে মারা যায় নি। তিনি আরো বলেন, আমরা একটি গুলিও চালাই নি। আরেক পুলিশ অফিসার বলেন, যদি গুলি ছোঁড়ার ঘটনা ঘটে তা বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকেই কেউ তা চালিয়েছে।
দেশটির পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিজনরে দুই বিক্ষোভকারী ও সম্ভাল, ফিরোজবাদ, মেরুত এবং কানপুরে এক জন করে বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। এই মুহূর্তে উত্তর প্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে, বন্ধ রাখা হয়েছে ১৫ টি জেলার ইন্টারনেট পরিষেবা।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাজ্যজুড়ে সহিংসতার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন। এছাড়াও তিনি সকল মানুষকে শান্ত থাকতে আবেদন করেছেন।
নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে গত কয়েক দিন থেকেই উত্তাল ভারত। এমন পরিস্থিতি ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলিতে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্স।