শেখ হাসিনা-মোদির করোনা মোকাবেলা একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার
করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ-ভারত একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বুধবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফোন করলে তারা এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এর আগে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টেফ্যান লোফভেন।
দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রায় ১৫ মিনিট করোনা পরিস্থিতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত নিয়ে কথা বলেন। এ সময় শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশ সুইডেনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ক্রেতার তৈরি পোশাক সংক্রান্ত ক্রয়াদেশ পূরণ করতে সক্ষম হবে। অন্যদিকে বাংলাদেশের পোশাক খাতের কোনো অর্ডার সুইডেন বাতিল করবে না বলে জানান স্টেফ্যান লোফভেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে তাকে ও বাংলাদেশের জনগণকে বাংলা নববর্ষ এবং পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং ওই দেশের জনগণকে মাহে রমজানের মোবারকবাদ জানান।
১২ মিনিটের টেলিফোন কথোপকথনে উভয় নেতা করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবেলায় দুই দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে গৃহীত পদক্ষেপসমূহের উল্লেখ করেন। প্রয়োজনে উৎপাদন বৃদ্ধিতে উভয়ে একযোগে কাজ করবে বলে জানান প্রেস সচিব।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার আশঙ্কা এই পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হতে পারে। ‘কাজেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় এই অঞ্চলের সব দেশের একযোগে কাজ করতে হবে। উভয় প্রধানমন্ত্রীই করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় দুই দেশের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন এবং এ বিষয়ে একযোগে কাজ করার বিষয়ে তাদের অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করেন।
দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীই করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে গত মাসে অনুষ্ঠিত ভিডিও কনফারেন্সে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে গৃহীত সার্কভুক্ত দেশগুলোর উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সম্মত হন। শেখ হাসিনা এ সময় কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ওষুধ এবং অন্যান্য মেডিকেল সামগ্রী পাঠানোয় নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানান।
এদিন প্রেস সচিব ইহসানুল করিম আলাদা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টেফ্যান লোফভেন। সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী দুপুর ২টার দিকে টেলিফোনে শেখ হাসিনার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। প্রায় পনেরো মিনিটের আলাপে উভয় নেতা ব্যবসা-বাণিজ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত নিয়ে কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া সত্ত্বেও আমরা আশা করি সুইডেনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ক্রেতার তৈরি পোশাক সংক্রান্ত ক্রয়াদেশ পূরণ করতে সক্ষম হব। এ প্রসঙ্গে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করে বলেন, তার দেশ তৈরি পোশাক সম্পর্কিত বাংলাদেশের কোনো ক্রয়াদেশ বাতিল করবে না।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি অব্যাহত রাখব। এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের মালিকরা স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে তাদের কারখানা চালু করেছেন।
প্রেস সচিব আরও জানান, দুই দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতিও উভয় নেতার আলোচনায় উঠে আসে। উভয় প্রধানমন্ত্রী করোনা মহামারী মোকাবেলায় দুই দেশের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একযোগে কাজ করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।◉