সংক্রমণের কারণে চীনের উহান নগরীতে আটকেপড়া ৩৬১ জন বাংলাদেশি ফিরছে আজ
নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে চীনের উহান নগরীতে আটকেপড়া ৩৬১ জন বাংলাদেশিকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
শুক্রবার মধ্যরাতের দিকে কোনো এক সময় ঢাকা ফেরার পর তাদের সবাইকে আশকোনো হজ ক্যাম্পে ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। নিরাপত্তার দায়িত্বে পুলিশের সঙ্গে সেনা সদস্যরাও থাকবেন।
চীনে অবস্থানকারী শিক্ষার্থী ও পরিবারগুলোর সদস্যদের বিষয়ে নিয়মিত খোঁজ রাখা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, চীনে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে যারা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন এবং ফেরত আসতে আগ্রহী এমন ৩৬১ জনকে ফেরত আনা হচ্ছে। তবে দেশটির কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন তাদের কেউ করোনা আক্রান্ত নন। আশা করি আমাদের কোনও নাগরিক আক্রান্ত হবেন না। যাদের ফেরত আনা হবে তাদের যথাযথ মনিটরিং এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শুক্রবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চীন থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত আনা এবং তাদের চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণ বিষয়ে জানাতে প্রেস ব্রিফিং করা হয়।
ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, উহান প্রদেশ থেকে ৩৬১ জন বাংলাদেশিকে নিয়ে আসা হবে। ফেরত আসাদের মধ্যে ১৯টি পরিবার, ১৮ জন শিশু ও দুই বছরের নিচে আরও দুই শিশু রয়েছে। বাংলাদেশে বিমানের বিশেষ একটি ফ্লাইট তাদের নিয়ে আসা হবে। আনুমানিক বিকাল ৫টার দিকে ফ্লাইটটি রওনা হবে। রাত ২টার মধ্যে তাদের বাংলাদেশে নিয়ে আসা হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে আনার পর ফেরত আসা নাগরিকদের প্রথমে বিমানবন্দর আশকোনা হজক্যাম্পে নেওয়া হবে। সেখানে ১৪ দিন তাদের কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হবে। এসময় তারা স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। এরমধ্যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। এক্ষেত্রে সিএমএইচ অথবা কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হবে।
ফেরত আসাদের চিকিৎসার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, করোনা মোকবিলায় আমাদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের চিকিৎসক এবং সাপোর্ট স্টাফরা প্রস্তুত। যারা ফেরত আসবেন তাদের ১৪ দিন পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরমধ্যে কেউ আক্রান্ত হলে তাদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, ‘খুব সেনসিটিভলি এদের হ্যান্ডেল করব, কোয়ারেন্টাইনে রাখব। এই সময় পরিবারের কেউ যেন দেখা করার চেষ্টা না করেন। এরা কেউ অসুস্থ না, কিন্তু আমরা জানি না… ভ্যাকসিন তৈরি হয়নি।’
মধ্য চীনের উহান শহরে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়। এ ভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়ম এর লক্ষণগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত।
নভেল করোনাভাইরাস এর কোনও টিকা বা ভ্যাকসিন এখনও তৈরি হয় নি। ফলে এমন কোনও চিকিৎসা এখনও মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। আপাতত একমাত্র উপায় হলো, যারা ইতোমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন বা এ ভাইরাস বহন করছেন- তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা এবং কিছু স্বাস্থ্য বিধি ও পরিচ্ছন্নতার নিয়ম মেনে চলা।