সাত নোবেল শান্তি বিজয়ীর গণহত্যাসহ সব অপরাধের ফৌজদারি জবাবদিহির দাবি
অং সান সু চি-কে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চালানো গণহত্যাসহ সব অপরাধের জন্য মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও তার সেনা অধিনায়কদের ফৌজদারি বিধিতে জবাবদিহির দাবি জানিয়েছেন শান্তিতে সাত নোবেল বিজয়ী।
এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন ‘শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে আমরা নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণকারী অং সান সু চি-কে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চালানো গণহত্যাসহ সব অপরাধ জনসম্মুখে স্বীকার করার আহ্বান জানাই।’
মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর পরিচালিত গণহত্যার আচরণ বন্ধে জরুরি পদক্ষেপের নির্দেশ চেয়ে জাতিসংঘের এ আদালতে মামলা করে গাম্বিয়া। এ আদালতে মামলার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার নেদাল্যান্ডসের দ্য হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) শুনানি শুরু হয়েছে।
সু চি-কে একসময় যারা গৃহবন্দী করে রেখেছিল সেই সামরিক শক্তির পক্ষে বুধবার জাতিসংঘের আদালতে যুক্তি তুলে ধরবেন তিনি।
নোবলে বিজয়ীরা তাদের বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে অপরাধের নিন্দা না করে বরং অং সান সু চি সক্রিয়ভাবে অস্বীকার করে যাচ্ছেন যে এসব অপরাধ এমন কি কখনও ঘটে নি।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা শান্তিতে সাত নোবেল বিজয়ী হলেন- ইরানের শিরিন এবাদি (২০০৩), লাইবেরিয়ার লেমাহ গবোই (২০১১), ইয়েমেনের তাওয়াক্কল কারমান (২০১১), উত্তর আয়ারল্যান্ডের মেরেইড ম্যাগুয়ার (১৯৭৬), গুয়াতেমালার রিগোবার্টা মেনচা তুম (১৯৯২), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জোডি উইলিয়ামস (১৯৯৭) এবংভারতের কৈলাশ সত্যার্থী (২০১৪)।
গাম্বিয়া গেল নভেম্বরে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মিয়ানমারে বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।
নোবেল বিজয়ীরা বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের পরিচালিত অভিযানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে গাম্বিয়ার মামলা করা এবং অপরাধের বিচারের বিষয়ে এগিয়ে আসায় তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
অভিযোগ দায়ের করার কয়েক দিন পরই আইসিজে জানায়, তারা রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো অপরাধের তদন্ত করবে।
মিয়ানমারের সরকার রাখাইন রাজ্যের মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের স্বীকৃতি না দেওয়ায় তারা যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘শান্তিবাদী মানুষ হিসেবে শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সু চি-কে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা, ভূমির মালিকানা, চলাফেরার স্বাধীনতা এবং মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের বিষয়ে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
তারা বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের প্রতি সু চি-কে তার ব্যক্তিগত ও নৈতিক দায়িত্ব পালন এবং সংঘটিত গণহত্যাকে মেনে নেওয়া ও নিন্দা জানানোর আবেদন জানাচ্ছি।’
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে শান্তিতে নোবেল জয়ী তিন নারী শিরিন এবাদি, তাওয়াক্কল কারমান ও মেরেইড ম্যাগুয়ার কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন এবং ১০০ রোহিঙ্গা নারীর সাথে কথা বলেন।