Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
December 22, 2024
হেডলাইন
Homeবাংলাদেশসিলেটের বন্যায় ৪ লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত

সিলেটের বন্যায় ৪ লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত

সিলেটের বন্যায় ৪ লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত

শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন সিলেটবাসী। লাখো মানুষ ঘর-বাড়ি, খেতের ফসল, গবাদিপশু, পুকুরের মাছ হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন।

পানি ধীরে ধীরে নেমে যাওয়ার পর ভেসে উঠছে ভয়াবহ ক্ষতচিহ্ন। মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করলেও অনেকে নিজের বাড়িতে গিয়েও এখন আশ্রয়হীন। বানের পানিতে তাদের কারওর ঘর ভেঙেছে, কারওর বা ভেসে গেছে বসতবাড়ি।

শনিবার সিলেট জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার পর্যন্ত সিলেট সিটি করপোরেশনের আংশিক এলাকা, জেলার ১৩টি উপজেলা ও ৫টি পৌরসভায় ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৩২০ পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২২ হাজার ১৫০টি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ফসল নষ্ট হয়েছে ২৮ হাজার ৯৪৫ হেক্টর জমির।

সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁওয়ের আক্কাস আলী জানান, পরিবারের সবাইকে নিয়ে ৫ দিন আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন। পানি নেমে যাওয়ায় শুক্রবার আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু বাড়িতে গিয়েও তিনি আশ্রয়হীন। তার টিনের বসতঘর বন্যার পানির তোড়ে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। চালের টিন খুলে গিয়ে গাছে আটকে আছে। এগুলো কুড়িয়ে এনে কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে থাকার একটা ব্যবস্থা করছেন।

আক্কাস আলী বলেন, পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই নেই, বানের পানি সব নিয়ে গেছে, আমাদের এখন সবচেয়ে বেশি দরকার থাকার জন্য একটি ঘর।

মইয়ারচর গ্রামের তাহেরা বেগম জানান, তিনি পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাদাঘাট উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন। শনিবার বাড়ি ফিরে দেখেন সব ভেঙে বিধ্বস্ত। ঘর মেরামতের জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন।

এদিকে, সিলেট মহানগরীর বেশির ভাগ এলাকাগুলো থেকে পানি নেমে গেছে। সড়ক, দোকান, বাসাবাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। অনেকের বাসাবাড়ির সামনে আটকে আছে ময়লা-আবর্জনাযুক্ত কালো পানি। এ অবস্থায় এসব এলাকার বাসিন্দারা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। নগরের চারপাশে ময়লা-আবর্জনা আর দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। ড্রেনে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা ভাসছে পানিতে। অনেকের বাসাবাড়ির ভেতরেও ময়লার স্তূপ। এগুলো পরিষ্কার করতে হিমশিম খাচ্ছেন মানুষ।

শনিবার সরেজমিন নগরের যতরপুর, উপশহর, সাদাটিকর, সোবহানীঘাট, মির্জাজাঙ্গাল, তালতলা, জামতলা, লালাদিঘিরপাড় ঘুরে দেখা গেছে- এসব জায়গার বেশির ভাগ স্থানের পানি নেমে গেছে। তবে রাস্তার নিচু জায়গার কোথাও কোথাও পানি জমে রয়েছে। অনেকের বাসাবাড়ির সামনে জমে আছে নোংরা পানি ও ময়লা-আবর্জনার স্তূপ।

নগরের যতরপুর এলাকার আবদুল হাকিম বলেন, পানি কমে যাওয়ায় নতুন করে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে আমাদের। চারপাশে ময়লা-আবর্জনা আর দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। চারদিকে দুর্বিষহ অবস্থা।

এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, পানি নেমে যাওয়ার পর সিটি করপোরেশন আবর্জনা পরিষ্কার শুরু করেছে। দুর্গন্ধ দূর করতে ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হচ্ছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, জেলার সব নদ-নদীর পানি কমছে। জেলার উত্তর-পূর্ব দিকের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জে পানি কমছে। তবে জেলার কুশিয়ারা তীরবর্তী বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। কিছু এলাকায় শনিবারও পানি বেড়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, উপজেলাগুলোর বেশির ভাগেই এখনো বন্যার পানি রয়েছে। তবে পানি ধীরে ধীরে নামছে। তিনি বলেন, বন্যার্তদের মধ্যে এখন ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment