সৌদি আরব-রাশিয়া সমঝোতা ব্যর্থ, তেলের বাজারে ধ্বস
তেলের উৎপাদন কমানোর বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় ব্যর্থ হয়ে শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরবের তেলের দাম কমানোর পর বিশ্ববাজারে ব্যাপক দরপতন হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে।
মার্কেট শেয়ার বাড়াতে বাজারে ক্রুড অয়েলের যোগান বাড়িয়ে দিয়েছে সৌদি আরব। এতে যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম কমেছে ৩৪ শতাংশ। প্রতি ব্যারেলের দাম দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৩৪ মার্কিন ডলারে, যা দেশটির গত চার বছরের ইতিহাসে সর্বনিম্ন।
ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ২৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৪৭ মার্কিন ডলার প্রতি ব্যারেল। বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৯১ সালের পর এ প্রথম তেলের দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে।
তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর শীর্ষ সংগঠন ওপেকের সঙ্গে মিত্র শক্তি রাশিয়ার দর যুদ্ধ শুরুর এই শঙ্কার ধাক্কা লেগেছে নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এশিয়াসহ বিশ্ব পুঁজিবাজারেও।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাস চীন থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার বড় আঘাত বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়ার শঙ্কার মধ্যে চীনের রপ্তানিতে ধ্বস ও জাপানের মন্দা পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের এমনিতেই শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে।
এর মধ্যেই সোমবার লন্ডনে দিনের লেনদেনের শুরুতেই বাজারে দরপতন হয়- শীর্ষ সূচক এফটিএসই ১০০ আট শতাংশ পড়েছে।
এদিকে জাপানের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক নিক্কেই-২২৫ পাঁচ শতাংশের বেশি পড়েছে, যেখানে অস্ট্রেলিয়ার প্রধান সূচক এএসএক্স ২০০ পড়েছে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, যা ২০০৮ সালের পর সবচেয়ে বড় পতন।
চীনের প্রধান সূচক সাংহাই কম্পোজিট সূচকে দুই শতাংশের বেশি দরপতন হয়েছে, যেখানে হংকংয়ে হ্যাং সেং সূচক পড়েছে সাড়ে ৩ শতাংশ।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার অর্থনৈতিক ঘাত মোকাবেলায় জেরবার চীন শনিবার বছরের প্রথম দুই মাসের আমদানি ও রপ্তানির যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাকে ৭১০ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সময়ে দেশটির রপ্তানি আয় কমেছে ১৭ দশমিক ২ শতাংশ, যেখানে আমদানি কমেছে ৪ শতাংশ।
৬ মার্চ শুক্রবার অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় এক আলোচনা সভায় তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর সংগঠনের (ওপেক) সঙ্গে বিবাদ তৈরি হয় রাশিয়ার। করোনাভাইরাসের কারণে ক্রমশ নিম্নমুখী বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় ওপেক, এতে সম্মত হয় নি রাশিয়া। শুক্রবার ওপেক ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনার পরই তেলের দাম কমে ১০ শতাংশ।
করোনাভাইরাসের কারণে ক্রুড অয়েলের চাহিদা আগেই নিম্নমুখী ছিল। এরই মধ্যে সৌদি আরবের সিদ্ধান্তে তেলের বাজার আরও উত্তপ্ত হলো। আগামী এপ্রিল মাসে তেল বিক্রির দর ছয় থেকে আট মার্কিন ডলার কমিয়েছে দেশটি। মার্কেট শেয়ার বাড়ানো ও রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টির জন্যই দেশটি এ কাজ করেছে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। ♦