Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
March 29, 2024
Homeবাংলাদেশ২৬৪ স্কুল ছুটি দিয়ে প্রতিমন্ত্রীর পুত্রের বিয়েতে শিক্ষকরা

২৬৪ স্কুল ছুটি দিয়ে প্রতিমন্ত্রীর পুত্রের বিয়েতে শিক্ষকরা

২৬৪ স্কুল ছুটি দিয়ে প্রতিমন্ত্রীর পুত্রের বিয়েতে শিক্ষকরা

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এমপির পুত্র সাফায়াত বিন জাকিরের (সৌরভ) বিবাহোত্তর বৌ-ভাতের দাওয়াত পালনের জন্য রোববার রৌমারী রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলার ২৬৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘোষণা করা হয় সাধারণ ছুটি। এ নিয়ে বইছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়েছে প্রশাসন।

অভিযোগে জানা যায়, শিক্ষকদের বাধ্যতামূলক দিতে হয়েছে ৫০০ টাকা করে চাঁদা। এক হাজার তিনশ শিক্ষকের কাছ থেকে উত্তোলন করা হয়েছে প্রায় ৬ লাখ টাকা। এ টাকায় ফ্রিজ, স্বর্ণসহ দেওয়া হয় দামি দামি উপহার।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম নিজেও মন্ত্রীর ছেলের বিয়ের দাওয়াত পালনের কথা স্বীকার করে বলেন, এই তিন উপজেলায় শৈত্যপ্রবাহ বিদ্যমান থাকায় কোমলমতি শিশুদের কষ্টের কথা চিন্তা করে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা নিজেদের ক্ষমতায় একদিনের সংরক্ষিত ছুটি ঘোষণা করেছেন। প্রধান শিক্ষকগণ বছরে ৩ দিন ছুটি দেয়ার ক্ষমতা রাখেন। সেই সংরক্ষিত ছুটি থেকে আজকের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিষয়টি শিক্ষা বিভাগ অবহিত আছে।

তবে অফিসিয়ালি কেউ স্বীকার করছেন না- মন্ত্রী মহোদয়ের ছেলের বিয়ে উৎসবের কারণে এ সাধারণ ছুটি।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলছেন, অজ্ঞাত কারণে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে ঝুলছে তালা। শিক্ষকরা বলছেন প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে স্কুল ছুটি। এসব নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, ৮ জানুয়ারি রোববার সরকারি ছুটির দিন না থাকলেও অজ্ঞাত কারণে চিলমারী উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ঝুলছে তালা। অভিযোগ উঠছে কোন দিবস বা জরুরি কারণ ছাড়াই বিদ্যালয় বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা ভিন্ন ভিন্ন কারণ দেখালেও এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা বলছে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের ছেলের বিয়ে উপলক্ষে বন্ধ দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিন রোববার মজাইডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ রাধাবল্লভ, রাণীগঞ্জ বাজার, ফকিরেরহাট, খালেদা শওকত পাটওয়ারী, চর খরখরিয়া, নিরিশিং ভাজ, রানীগঞ্জ মদন মোহন, খরখরিয়া ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে একই চিত্র পাওয়া গেছে। সব প্রতিষ্ঠানে ঝুলছে তালা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে ফোনে কথা হলে অনেকে বলেন শৈত্যপ্রবাহের কারণে, আবার অনেকে বলেন সংরক্ষিত ছুটি, আবার কেউ কেউ স্বীকার করেছেন প্রতিমন্ত্রী ছেলের বিয়ের দাওয়াতের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে । তবে কোনো শিক্ষকই নিজের নাম পরিচয় প্রকাশে রাজি হননি।

ফকিরেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী বিপুল, আমির হোসেনসহ বেশ কিছু বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলে- প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের ছেলের বিয়ের জন্য বন্ধ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের বাড়ি কুড়িগ্রামের রৌমারীতে। তিনি কুড়িগ্রাম-৪ আসনের (রৌমারী, রাজীবপুর ও চিলমারী) সরকারদলীয় সংসদ সদস্য। রোববার (৮ জানুয়ারি) প্রতিমন্ত্রীর রৌমারীস্থ বাসভবনে তার একমাত্র ছেলে সাফায়েত বিন জাকিরের বিবাহোত্তর বৌভাত অনুষ্ঠিত হয়।

চিলমারী উপজেলার বালাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাসিন্দা আব্দুল হাই সরকার বলেন, আজ কোনো সরকারি ছুটি নয়। তারপরও স্কুলে ক্লাস হয়নি। প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বিয়েতে স্কুল বন্ধ রেখে দাওয়াত খেতে যাওয়ায় স্কুল বন্ধ। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। সরকারের তো একটা নিয়ম আছে। কিন্তু এখানে ক্ষমতার নিয়মই বড় হয়েছে।

মদন মোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার অভিভাবক দিলিপ কুমার ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, শিক্ষক খুঁজতে আইছেন তাহলে রৌমারী যান। আজ কোনো শিক্ষককে বিয়ে বাড়ি ছাড়া পাওয়া যাবে না। কারণ বিয়েতে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। আর এ জন্য শিক্ষকদের চাঁদাও দিতে হয়েছে জন প্রতি ৫০০ টাকা।

আরেক শিক্ষক বলেন, আমাদের বলা হয়েছে একটা ক্লাস নিয়ে দাওয়াতে যেতে। তবে কোনো ক্লাস নেওয়া হয়নি। বিয়ের উপহার কেনার জন্য সবার কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে চাওয়া হয়েছিল। পরে ৩০০ টাকা করে নেওয়া হয়।

চিলমারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু সালেহ সরকার বলেন, আমি রৌমারীতে মন্ত্রীর ছেলের বিয়ের দাওয়াতে আছি। এখন ব্যস্ত আছি পরে কথা বলব।

চিলমারী উপজেলা সরকারি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক আনছারী স্বীকার করেন, শিক্ষা অফিসারের সম্মতিতে প্রধান শিক্ষকগণ স্ব-স্ব বিদ্যালয়ে সংরক্ষিত ছুটি থেকে একদিনের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সব শিক্ষক চাঁদা তুলে বিয়ের দাওয়াত খেতে যাই।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, তিন উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটি চলছে তা তিনি অবহিত হয়েছেন। তিনি বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় উপ-পরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষকদের হাতে বছরে তিন দিন সংরক্ষিত ছুটি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তারা বছরের যে কোনো সময় এই ছুটি দিতে পারেন।

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment