৫ সন্তানকে হত্যায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মা বেছে নিলেন ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’
১৬ বছর আগে একে একে হত্যা করেন নিজের পাঁচ সন্তানকে। পরে তাকে বিচারের মুখোমুখি করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। কিন্তু তীব্র মানসিক যন্ত্রণা সইতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত বেছে নিয়েছেন ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নিজের পছন্দমতো উপায়ে মৃত্যুবরণের সুযোগ দেয়া হয় বেলজিয়ামের ওই নারীকে। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিজের এক ছেলে ও চার মেয়েকে হত্যা করেন জেনেভিভ লারমিট নামে ওই নারী। হত্যার শিকার পাঁচ সন্তানের বয়স তখন তিন বছর থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। সন্তানদের হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন লারমিট। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়ে জরুরি সেবার নম্বরে কল দেন। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ২০০৮ সালে ৫৬ বছর বয়সী ওই নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। পরে ২০১৯ সালে তার মানসিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়।
বেলজিয়ামের আইনে তীব্র মানসিক এবং শারীরিক যন্ত্রণায় ভোগা মানুষের জন্য ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’র অনুমতি রয়েছে। যা ‘ইউথানেশিয়া’ নামে পরিচিত। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি তার মৃত্যুর জন্য পছন্দমতো উপায় বেছে নিতে পারেন। তবে অবশ্যই এর জন্য ‘গ্রহণযোগ্য কারণ’ উল্লেখ করতে হবে।
লারমিটের আইনজীবী জানান, তার এই পথ বেছে নেয়ার অনুমতি পেতে বিভিন্ন চিকিৎসকদের মতামত নেয়া হয়েছে।
এমিলি ম্যারিয়ট নামে এক মনোবিজ্ঞানী বলেন, ‘লারমিট তার মৃত্যুর জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি দিনটিকেই বেছে নিয়েছিলেন। কারণ ওই তারিখেই তিনি তার সন্তানদের হত্যা করেছিলেন। হয়ত এর মাধ্যমে তিনি তার সন্তানদের আত্মার প্রতি প্রতীকীভাবে সম্মান জানাতে চেয়েছিলেন। তাছাড়া যেহেতু ২০০৭ সালের ওই দিনে তিনি নিজেকেও শেষ করতে চেয়েছিলেন, তাই এই দিনে মারা যাওয়াকে ১৬ বছর পরে হলেও সেই দিনের কাজের সমাপ্তি হিসেবে দেখতে চেয়েছেন।’
বিবিসি জানায়, ২০২২ সালে বেলজিয়ামে দুই হাজার ৯৬৬ জন এমন পথ বেছে নিয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ক্যানসার আক্রান্ত ছিলেন। তীব্র যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে স্বেচ্ছামৃত্যুবরণ করেন তারা। ২০১৪ সাল থেকে বেলজিয়ামে মারাত্মকভাবে অসুস্থ রোগীদের এভাবে মৃত্যুর বিষয়টির অনুমোদন দেয়া হয়।