জয় নিয়ে মমতা-শাহ বাগযুদ্ধ
পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ৩০ আসনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর তৃণমূল ও বিজেপি কে কটি আসনে জয় পাবে তা নিয়ে বাগযুদ্ধ শুরু হয়েছে।
ভোট শেষ হতেই শনিবার স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন, ভূমিধস বিজয় আসছে। যে কটা সিটে ভোট হয়েছে সেখানে বাক্স খুললে শুধুই তৃণমূলের জয় আসবে। চারদিকে জিতছে তৃণমূল, ফুটছে জোড়াফুল।
এরপর রোববার দিল্লিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে বিজেপির শীর্ষনেতা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বললেন, বাংলায় আসল পরিবর্তন হচ্ছেই। যে ৩০টি আসনে ভোট হয়েছে তার মধ্যে ২৬টিতে বিজেপির পদ্মফুল ফুটছেই। নানাভাবে ভোট সমীকরণের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন বিজেপির এ নেতা।
অমিত শাহর দাবি, পশ্চিমবঙ্গে ২৯৪ আসনের মধ্যে বিজেপি নিজেদের পূর্ব নির্ধারিত ২০০ আসনের টার্গেট পূরণ করতে চলেছে। প্রথম দফা ভোটের পরই সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়েছে।
যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ দাবির ঘণ্টা দুয়েক পর চণ্ডিপুরে এক জনসভায় মমতা বিজেপির ২৬ আসন পাওয়া নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। মমতা বলেন, ভোট দিয়েছেন মা-বোনেরা, গ্রামের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। আমাকে যদি প্রশ্ন করেন কত আসন তৃণমূল পাবে, আমি তা কী করে বলব? ওটা তো আগে থেকে জানা সম্ভব নয়। কিন্তু এক বিজেপি নেতা বলে দিলেন ওরা নাকি ৩০টির মধ্যে ২৬টি আসন পাবে। কিভাবে বললেন জানি না। তা হলে বাকি চারটে কে পাবে, কংগ্রেস (সিপিএম)?
প্রথম দফার নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন সহিংসতা প্রসঙ্গে এদিন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে একহাত নিলেন মমতা। তাদের কাজের এখতিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাজ রাজ্য পুলিশের কথা শুনে কাজ করা। কিন্তু তা না করে ওরা সাধারণ ভোটারদের ওপর অত্যাচার করেছে। অনেককে নানারকম অজুহাতে ভোট দিতে না দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে।
দ্বিতীয় দফায় ১ এপ্রিল যে ৩০ আসনে নির্বাচন তার মধ্যে রয়েছে চণ্ডিপুর ও নন্দীগ্রাম। রোববার টলিউডের প্রখ্যাত অভিনেতা ও তারকা প্রার্থী সোহমের হয়ে জনসভা করেন মমতা। কাল মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর হয়ে রোডশো করতে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দোলের দিন বিকালেই নন্দীগ্রামে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
থাকবেন ১ এপ্রিল, ভোটগ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত। স্থানীয় বিজেপি নেতা প্রলয় পালকে ফোন করে মুখ্যমন্ত্রীর ভোটে সাহায্যের আবেদনের একটি কথোপকথনের রেকর্ড প্রকাশ্যে এনেছেন বিজেপি নেতারা। প্রলয়ের সেই রেকর্ডই আপাতত আলোচনার কেন্দ্রে।
স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও এ ফোনের কথা স্বীকার করে বলেছেন, দলের পুরনো কর্মীকে ঘরে ফিরতে আবেদন করা রাজনীতিরই অঙ্গ। যদিও বিজেপি বলেছে, মুখ্যমন্ত্রী ভোটে হারবেন জেনে এমন অসহায় হয়ে বিজেপি নেতার কাছে নির্বাচনে সাহায্য চাইছেন। ১০ মার্চ মমতা এই নন্দীগ্রামেই আহত হন।
তারপর তাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েক দিন হাসপাতালে কাটানোর পর বাম পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে, হুইল চেয়ারে বসে ভোটপ্রচারে বিভিন্ন জেলায় সফরে গেলেও নন্দীগ্রামে আর আসেননি মমতা। ঠিক ১৮ দিনের মাথায় দোলপূর্ণিমার দিন তিনি ফের নিজের কেন্দ্রে এলেন।❐