Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
December 23, 2024
হেডলাইন
Homeপ্রধান সংবাদপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন আজ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন আজ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন আজ

ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দীর্ঘ যাত্রায় পার করেছেন নানা চড়াই-উতরাই। কারাভোগ করেছেন, একাধিকবার গৃহবন্দী ছিলেন। চারবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড গড়েছেন। প্রায় চার দশক ধরে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। আজ তার ৭৫তম জন্মদিন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনার জন্ম ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। শৈশব-কৈশোর কেটেছে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। ৫৪-র নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা বাবা-মার সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা ঘাতকদের গুলিতে নিহত হন। তখন বিদেশে ছিলেন শেখ হাসিনা ও ছোট বোন শেখ রেহানা।

রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে ছাত্রজীবন থেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি। ১৯৮১ সালে দলের সম্মেলনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ওই বছর ১৭ মে দেশে ফিরেই দলীয় প্রধানের দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা। এরপর চার দশক ধরে দেশের এই প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিয়ে রাজনীতির মূল স্রোতধারার প্রধান নেতা হিসেবে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।

১৯৯৬ সালে তার নেতৃত্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা। এরপর ২০০৮ সালে দ্বিতীয়, ২০১৪ সালে তৃতীয় ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন তিনি।

বর্তমানে শুধু জাতীয় নেতাই নন, শেখ হাসিনা আজ তৃতীয় বিশ্বের একজন বিচক্ষণ বিশ্বনেতা হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছেন নতুন ভূমিকায়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি সম্পাদন, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি, ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণসহ জাতীয় জীবনের বহুক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি।

স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে অনন্য ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরপর তিনবার এবং এ পর্যন্ত চারবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। নিজের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সাহসী কর্মকাণ্ড দিয়ে আরও আগেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে তার বিচক্ষণ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব জাতি হিসেবে আমাদের গৌরবান্বিত করেছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠতে যে শর্ত দরকার, তা পূরণ করায় আবেদন করার যোগ্য হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ।

শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয় টুঙ্গীপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন ঢাকার বকশীবাজারের পূর্বতন ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে। ঐ বছরই ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কলেজছাত্রী সংসদের সহ-সভানেত্রী পদে নির্বাচিত হন। তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলন এবং ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

কারাবন্দী পিতার আগ্রহে ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম হয়। ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্ম নেন তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।

সহজ সারল্যে ভরা ব্যক্তিগত জীবন মেধা-মনন, কঠোর পরিশ্রম, সাহস, ধৈর্য, দেশপ্রেম ও ত্যাগের আদর্শে গড়ে উঠেছে তার আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব। পোশাকে-আশাকে, জীবন-যাত্রায় কোথাও তার বিলাসিতা বা কৃত্রিমতার কোনো ছাপ নেই। নিষ্ঠাবান ধার্মিক তিনি। বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া তার স্বামী।

শেখ হাসিনার অর্জন : শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশকে ২০২১ সালে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপে দেখার স্বপ্ন নিয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে। ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তবতা। বিশ্বের সবচাইতে দ্রুত বর্ধমান ডিজিটাল অর্থনীতির অংশ আজ বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ, কৃষক রক্ষা এবং সন্ত্রাস দমন।

এছাড়া শান্তি, গণতন্ত্র, স্বাস্থ্য ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, দারিদ্র্য বিমোচন, উন্নয়ন এবং দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য ভূষিত হয়েছেন মর্যাদাপূর্ণ অসংখ্য পদক ও পুরস্কারে। অতি সম্প্রতি মিয়ানমার সরকারের ভয়াবহ নির্যাতনে আশ্রয়হীন ৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে নাড়িয়ে দিয়েছেন বিশ্বকে। আজ সারা বিশ্বেই শেখ হাসিনার নাম আলোচিত হচ্ছে ‘বিশ্ব মানবতার বিবেক’ হিসেবে।

মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার অবিচারের গ্লানি বয়ে বেড়ানো বাংলাদেশকে কলঙ্কমুক্ত করতে এগিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কল্যাণে স্বাধীন বাংলাদেশের বুকে শাস্তি পায় যুদ্ধাপরাধীরা। সেই সঙ্গে এই যুদ্ধাপরাধীদের মাধ্যমে জঙ্গি অর্থায়ন ও সন্ত্রাসবাদের সূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। তার দৃঢ় নেতৃত্বে আজ বিশ্বের বুকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে অন্যতম সফল রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে বাংলাদেশ।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে অগ্রণী ভূমিকার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনামূলক সন্ত্রাসবাদ রিপোর্টে (কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেররিজম) বিশেষ প্রশংসায় ভূষিত হয়েছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে সুদীর্ঘ ২৫ বছরের গৃহযুদ্ধ অবসানের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কো তাকে ‘হুপে-বোয়ানি’ শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতা ও দূরদর্শিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের রানডলপ ম্যাকন উইমেন্স কলেজ ২০০০ সালের ৯ এপ্রিল মর্যাদাসূচক ‘পার্ল এস. বাক ৯৯’ পুরস্কারে ভূষিত করে।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ক্ষুধার বিরুদ্ধে আন্দোলনে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শেখ হাসিনাকে সম্মানজনক ‘সেরেস’ মেডেল প্রদান করে। সর্বভারতীয় শান্তিসংঘ শেখ হাসিনাকে ১৯৯৮ সালে ‘মাদার তেরেসা’ পদক প্রদান করে। একই বছর আন্তর্জাতিক রোটারি ফাউন্ডেশন তাকে ‘পল হ্যারিস’ ফেলোশিপ প্রদান করে। পশ্চিমবঙ্গ সর্বভারতীয় কংগ্রেস ১৯৯৭ সালে তাকে প্রদান করে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু স্মৃতিপদক। আন্তর্জাতিক লায়ন্স ক্লাব ১৯৯৬-৯৭ সালে তাকে ‘মেডেল অব ডিসটিংশন’ ও ১৯৯৬-৯৭ সালে ‘হেড অব স্টেট’ পদক প্রদান করে।

শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের কিছুদিন পরেই শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অসামান্য ভূমিকা পালনে ভারতের ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে লাভ করেন ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার। এ ছাড়া তিনি ব্রিটেনের গ্লোবাল ডাইভারসিটি পুরস্কার এবং দু’বার সাউথ সাউথ পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৪ সালে ইউনেস্কো তাকে ‘শান্তির বৃক্ষ’ এবং ২০১৫ সালে উইমেন ইন পার্লামেন্টস গ্লোবাল ফোরাম নারীর ক্ষমতায়নের জন্য তাকে রিজিওনাল লিডারশিপ পুরস্কার এবং গ্লোবাল সাউথ-সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো-২০১৪ ভিশনারি পুরস্কারে ভূষিত করে।

খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে অবদানের জন্য আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৫ সালে তাকে সম্মাননা সনদ প্রদান করে। জাতিসংঘ পরিবেশ উন্নয়ন কর্মসূচি দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিবেশ এবং টেকসই উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য লিডারশিপ ক্যাটাগরিতে শেখ হাসিনাকে তাদের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ-২০১৫’ প্রদান করে। এ ছাড়া টেকসই ডিজিটাল কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) শেখ হাসিনাকে ‘আইসিটিস ইন সাসটেইন্যাবল ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড-২০১৫’ প্রদান করে। শুধু তাই নয়; শেখ হাসিনা প্রথমবার সরকার গঠনের পর ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ভারতের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি করে। এ ছাড়াও ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি করে বিশ্বের বুকে নতুন করে নিজেকে পরিচিত করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকাকালে ২০১৫ সালে নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত স্থায়ী আদালতে ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে বিরোধপূর্ণ ২৫ হাজার ৬০২ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ১৯ হাজার ৪৬৭ হাজার পরিমাণ অঞ্চল জিতে নেয়। ২০১২ সালে বাংলাদেশ সফলভাবে মিয়ানমারের সঙ্গেও বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমার মামলা জয় করে। শেখ হাসিনার কূটনৈতিক সফলতার কারণে মিটেছে ৩৫ বছর ধরে অমিমাংসিত থাকা বাংলাদেশ-ভারত স্থল সীমান্ত নিয়ে জিইয়ে থাকা সমস্যা। বিশ্বে বাংলাদেশ সেই অল্পসংখ্যক দেশের মধ্যে একটি, যারা মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) বাস্তবায়নে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে। এই সাফল্যের জন্য অনুমিতভাবেই বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। ২০১৫ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। এ সবকিছু সম্ভব হয়েছে ১৬ কোটি বাংলাদেশির ‘চ্যাম্পিয়ন’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণে।

এছাড়া বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন জনগণের প্রতি নিজের প্রতিশ্রুতি থেকে। মেট্রোরেল ও পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো বড় বড় মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ দমন, জলবায়ুসহ একাধিকে ইস্যুতে জাতিসংঘ অধিবেশনে তার দেওয়া প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিবসহ বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। এ সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ।

১৯৯৯, ২০০০ এবং ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর সবমিলিয়ে মোট ১৮ বার জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যতবারই শেখ হাসিনা জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছেন, ততবারই এর সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ও দায়িত্ববান সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার বিশ্ববাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ, দারিদ্র, পরিবেশ বিপর্যয়, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যু সমাধানের দাবি যেমন জানিয়েছেন, তেমনি জাতিসংঘের সূক্ষ্ণ সমালোচনায়ও শামিল হয়েছেন বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত ও শরণার্থী মানুষের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে। চোখে আঙুল দিয়ে বলেছেন, এ জাতীয় ঘটনাকে অগ্রাহ্য করে শান্তিপূর্ণ, ন্যায্য ও টেকসই সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম জাতিসংঘে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রায় প্রতিবারই বাবার বক্তব্য উদ্ধৃত করতে দেখা গেছে কন্যা শেখ হাসিনাকে। আপ্লুত হয়েছেন ১৫ অগাস্ট, ১৯৭১-এ হারিয়ে ফেলা বাবা-মা, ভাই-ভাবী, চাচা-ফুফার নৃশংস হত্যার গল্প শোনাতে গিয়ে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিজের প্রতিবাদের কথাও বলেছেন অবলীলায়। ১৯৯৯ সালে ৫৪ তম অধিবেশনে তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী সরকার আমার ওপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন করেছে, আমি বারবার কারাবরণ করেছি এবং বেশ কয়েকবার আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমার লক্ষ্য থেকে কোনো কিছুই আমাকে বিরত করতে পারেনি।”

শেখ হাসিনা এভাবেই বিরতিহীন কাজ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা হিসেবে দেশ-বিদেশে নিজের সঙ্গে সঙ্গে সুনাম ছড়িয়েছেন দেশেরও। তার জন্মদিনে তাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল এক বাণীতে তাকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, পিতার মতোই শেখ হাসিনা গণমানুষের নেতা। তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, গতিশীল নেতৃত্ব, মানবিক মূল্যবোধ দিয়ে তিনি শুধু দেশেই নন, বহির্বিশ্বেও অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

ভারতের শুভেচ্ছা: জন্মদিন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের হাইকমিশনার শ্রী বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নরেন্দ্র মোদির শুভেচ্ছা হিসেবে পাঠানো একটি চিঠি এবং একটি ফুলের তোড়া হস্তান্তর করেছেন।

চিঠিতে সুস্বাস্থ্য এবং মঙ্গল কামনা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ‘আপনার (শেখ হাসিনা) দূরদর্শী নেতৃত্ব বাংলাদেশকে ব্যাপক সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জনে সহায়তা করেছে এবং সমানভাবে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপনার অবদান অত্যন্ত আকর্ষণীয় ছিল।’

সিপিসির শুভেচ্ছা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)। সিপিসির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী সং তাও এক চিঠিতে বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

আওয়ামী লীগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলের সভাপতির জন্মদিনে দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচির কথা জানিয়েছে। আজ বেলা সাড়ে তিনটায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হবে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে বাদ জোহর এবং দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হচ্ছে। মন্দির, গির্জা ও বৌদ্ধবিহারে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ প্রার্থনা।

একই দিন ঢাকাসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও সব সহযোগী সংগঠন আলোচনা সভা, দোয়া ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। সব নেতা-কর্মীকে যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে দিবসটি পালন করার অনুরোধ জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment