Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
February 6, 2025
হেডলাইন
Homeআন্তর্জাতিকশ্রীলঙ্কানরা দেশ ছাড়তে দলে দলে পাসপোর্ট নিচ্ছেন

শ্রীলঙ্কানরা দেশ ছাড়তে দলে দলে পাসপোর্ট নিচ্ছেন

শ্রীলঙ্কানরা দেশ ছাড়তে দলে দলে পাসপোর্ট নিচ্ছেন

অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অভাব জেঁকে ধরছে শ্রীলঙ্কার নাগরিকদের। দুবেলা খাবার যোগাড় করাই কঠিন হয়ে গেছে দেশটিতে। ফলে দেশে থাকার আগ্রহ হারাচ্ছেন শ্রীলঙ্কানরা। মোটামুটি সব সেক্টরেই অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাব পড়ায় উন্নত জীবনের আশায় বিদেশে পাড়ি জমাতে চাচ্ছেন তারা। এই লক্ষ্যে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির পাসপোর্ট অফিসে দেখা দিয়েছে ব্যাপক ভিড়।

এমনকি পাসপোর্ট প্রাপ্তির জন্য শ্রীলঙ্কান নাগরিকদের দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে লাইনে। এতে করে ভয়াবহ দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর.এম.আর লেনোরা নামে এক নারী গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার ইমিগ্রেশন বিভাগের সদর দপ্তরের বাইরে সাপের মতো এঁকে বেঁকে যাওয়া একটি লাইনে দুই দিন ধরে দাঁড়িয়েছিলেন একটি পাসপোর্ট পাওয়ার আশায়। অর্থনৈতিক সংকটের থাকা দেশ ছেড়ে যাওয়ার সুযোগের আশায় এতো কষ্ট সহ্য করেও সেখানে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।

পেশায় গামেন্টস কর্মী লেনোরার স্বামী শ্রীলঙ্কায় একটি ছোট রেস্তোরাঁয় রান্নার কাজ করতেন। কিন্তু চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ওই রেস্তোরাঁ থেকে তার স্বামীকে ছাঁটাই করা হয়। আর এরপরই কুয়েতে গৃহকর্মীর চাকরির জন্য আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেন ৩৩ বছর বয়সী লেনোরা।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘রেস্তোরাঁয় রান্নার গ্যাস নেই। অন্যদিকে খাবারের খরচ আকাশ ছুঁয়েছে। আর এই কারণেই আমার স্বামী চাকরি হারিয়েছেন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কাজ খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন এবং বেতন খুব কম।’

লেনোরা বলেন, দিনে প্রায় ২৫০০ শ্রীলঙ্কান রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬৩৪ টাকা) উপার্জন করেন তিনি। এই টাকায় দুই সন্তান নিয়ে জীপনযাপন করা অসম্ভব।

গত সপ্তাহে নয়ারা এলিয়া শহর থেকে ১৭০ কিলোমিটার ভ্রমণ করে বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোয় পৌঁছান আর.এম.আর লেনোরা। সেখানে পৌঁছানোর পর প্রয়োজনীয় কাগজ হাতে নিজের প্রথম পাসপোর্টর জন্য লাইনে দাঁড়ান তিনি।

রয়টার্স বলছে, পাসপোর্টের ওই লাইনে লেনোরার সঙ্গে শ্রমিক, দোকানের মালিক, কৃষক, সরকারি কর্মচারী এবং গৃহিণীরাও ছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন যারা কেবল পাসপোর্ট পাওয়ার আশায় সারা রাত ধরে লাইনে অবস্থান করেছেন। মূলত তাদের সবাই গত সাত দশকের মধ্যে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে খারাপ আর্থিক সংকট থেকে বাঁচতে চান। একটু উন্নত জীবনের আশায় বিদেশে পাড়ি জমাতে চান।

শ্রীলঙ্কার সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের প্রথম পাঁচ মাসে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৬৪৫টি পাসপোর্ট ইস্যু করেছে শ্রীলঙ্কান সরকার। অন্যদিকে গত বছরের একইসময়ে পাসপোর্ট ইস্যুর এই সংখ্যাটি ছিল ৯১ হাজার ৩৩১টি। অর্থাৎ অর্থনৈতিক সংকট থেকে বাঁচতে গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি মানুষ পাসপোর্ট পেতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

প্রসঙ্গত, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। আর এর ফলে দ্বীপরাষ্ট্রটির ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ খাদ্য, রান্নার গ্যাস, জ্বালানি এবং ওষুধের প্রকট সংকটের মধ্যে পড়েছেন।

এর সঙ্গে যোগ দিয়েছে ডলারের বিপরীতে নিজস্ব মুদ্রার অবমূল্যায়ন, ৩৩ শতাংশের বেশি মূল্যস্ফীতি। সঙ্গে আছে দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার উদ্বেগও। আর এই বিষয়গুলোই শ্রীলঙ্কার বহু মানুষকে দেশান্তরিত হওয়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

আর এ জন্যই নিজের ও নিজের সন্তানদের একটি উন্নত জীবনের জন্য যা করা প্রয়োজন তা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ লেনোরা। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আমি কুয়েতে দুই বছর কাটাতে চাই। তারপর আমি নিশ্চিত যে, আমি আয় করতে পারব এবং ফিরে আসার জন্য যথেষ্ট সঞ্চয়ও করতে পারব।’

লেনোরার কাছে সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তার ভাষায়, ‘আমি আমার মেয়েদের শিক্ষিত করতে চাই। এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment