Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
February 5, 2025
হেডলাইন
Homeআন্তর্জাতিকআবারও উত্তাল ইরান

আবারও উত্তাল ইরান

আবারও উত্তাল ইরান

আরসা পানাহি। উত্তরপশ্চিম ইরানের আরদাবিল শহরের ছাত্রী। ১৬ বছর বয়সি পানাহিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। মাহসার পর এবার আরসার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানে বিক্ষোভ আরো তীব্র হয়েছে। ছাত্রীদের বিক্ষোভ থামাতে পুলিশ আরো কড়া হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, পুলিশ তাকে মারেনি। তার হৃদযন্ত্রের সমস্যা ছিল। তাতেই সে মারা গেছে।

২২ বছর বয়সি মাহসা আমিনি-র মৃত্যুর ক্ষেত্রেও একই যুক্তি দিয়েছিল পুলিশ। হিজাব না পরার অপরাধে পুলিশ যাকে ধরে নিয়ে যায় এবং পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যু হয়। তারপর বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে ইরান। মাহসার মৃত্যু নিয়ে বিক্ষোভের মধ্যেই আরসার মৃত্যুর খবর এসেছে। ফলে বিক্ষোভ আরো জোরদার হয়েছে।

পানাহির মৃত্যু নিয়ে যা জানা গেছে
গত ১৩ অক্টোবর পুলিশ আরদাবিলের স্কুলে যায় এবং ছাত্রীদের ইসলামিক রিপাবলিকের প্রশস্তিতে গান গাইতে বলে।কিছু পড়ুয়া তা গাইতে অস্বীকার করে। তাদের প্রচণ্ড মারধর করা হয়। আরসা ছিল তাদের মধ্যে একজন। শুক্রবার হাসপাতালে সে মারা যায়। আরসার মৃত্যুর খবর দাবানলের মতো ইরানে ছড়িয়ে পড়ে।

ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডের ঘনিষ্ঠ সংবাদসংস্থা তাসনিম জানিয়েছে, আরসার কাকা বলেছেন, সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। কিন্তু এরপরই সুইমিং ফেডারেশনের ওয়েবসাইটের একটি তথ্য ভাইরাল হয়। সেখানে বলা ছিল, আরসা ১২ বছর বয়সে ওই অঞ্চলের সাঁতার প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছে। পরে ওই তথ্য ফেডারেশনের ওয়েবসাইট থেকে মুছে ফেলা হয়।

আরদাবিলের মেয়র নতুন তত্ত্ব নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেছেন, আরসার বাড়িতে গোলমাল চলছিল। সে ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।

পুলিশের মারে তিন ছাত্রীর মৃত্যু
সাবেক ফুটবল প্লেয়ার আলি দায়েই ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ”আপনারা সত্যি কথা বলছেন না। আমি জানি আমার শহরে কী হয়েছে।” ৫৩ বছর বয়সি আলি জার্মানির বুন্দেশলিগায় বেশ কয়েকটি দলের হয়ে খেলেছেন।

আরসার ঘটনাই প্রথম নয়, গত চার সপ্তাহ ধরে কর্তৃপক্ষ এরকম আরো কয়েকটি মৃত্যুর কথা অস্বীকার করেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ইরান বিশেষজ্ঞ রাহা বাহরেইনি ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ”আমাদের কাছে এই তথ্য আছে যে, আরো তিনজন ছাত্রী পুলিশের মারের ফলে মারা গেছেন। তাদের মাথায় আঘাত করা হয়েছিল।”

তাদের দাবি, ”২০ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিক্ষোভ-সমাবেশে পুলিশের মারে ২৩ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক মারা গেছে। তার মধ্যে ২০ জন ছেলে, তাদের বয়স ১৭ থেকে ২০-র মধ্যে এবং তিনজন মেয়ে। একটি মেয়ের বয়স ছিল ১৭, বাকি দুইজনের ১৬। ছেলেদের অধিকাংশই গুলি লেগে মারা গেছে। আর মেয়েদের মাথায় আঘাত করা হয়েছিল। তার জেরে তাদের মৃত্যু হয়েছে।”

বাচ্চাদের পরিবারকে পুলিশ ভয় দেখিয়ে বলেছে, তাদের বলতে হবে অসুস্থতার জন্য তারা মারা গেছে বা আত্মহত্যা করেছে।

১৭ বছর বয়সি নিকা শাহকার্মির মা জানিয়েছেন, সন্তানের মৃত্যুর পর তাদের ভয় দেখানো হয়েছিল। ইরানের কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, নিকা বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছিল। তাতেই তার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তার মা পরে বলেছেন, এ সবই মিথ্যা তথ্য। নিজেদের বাঁচানোর জন্য নিরাপত্তা বাহিনী যথেচ্ছাচার করছে।

বিক্ষোভে স্কুলছাত্রীরা
ইরানে যে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে, তার পুরোভাগে আছে স্কুলের ছাত্রীরা। পড়ুয়ারা স্কুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। হিজাব পরছে না। সরকার-বিরোধী স্লোগান দিচ্ছে। তাদের বিক্ষোভের ছবি নেটমাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে।

এই বিক্ষোভ দমন করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনী স্কুলে যাচ্ছে। কখনো স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে খবর পেয়ে যাচ্ছে, কখনো অন্য সূত্রে খবর পেয়ে যাচ্ছে। সাদা পোশাকের পুলিশ অফিসাররা গিয়ে জোর করে স্কুলের ক্লাসে ঢুকে পড়ছে। তারপর ছাত্রীদের গ্রেপ্তার করছে।

কিছু ক্ষেত্রে স্কুলে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়েছে পুলিশ। সোমবার ইরানের টিচার্স ইউনিয়ন এভাবে ছাত্রীদের গ্রেপ্তার করার প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা বলেছে, অমানবিক ও বর্বরোচিতভাবে স্কুলে তল্লাশি করছে পুলিশ।

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment