টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২০ কোটি ইমেইল ফাঁস করেছে হ্যাকাররা
২০ কোটির বেশি টুইটার ব্যবহারকারীর ইমেল ঠিকানা ফাঁস হয়েছে। একদল হ্যাকার জনপ্রিয় মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এসব ইমেল ঠিকানা হাতিয়ে নেয়। ইতোমধ্যে একটি অনলাইন হ্যাকিং ফোরামে ঠিকানাগুলো পোস্ট করা হয়েছে। ইসরাইলের এক সাইবার নিরাপত্তা গবেষক বৃহস্পতিবার এ কথা বলেন। খবর বিবিসি, আলজাজিরা ও টাইমস অব ইসরাইল অনলাইনের।
ইসরাইলের সাইবার নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণকারী কোম্পানি হাডসন রকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যালন গ্যাল প্রথম সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ করেন। গ্যাল লিংকডইনে লেখেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রচুর হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটেছে, গ্রাহকের তথ্য চুরি করা হয়েছে। টুইটারে এ হ্যাকিংয়ের ঘটনাকে তার দেখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁসের ঘটনাগুলোর একটি বলে উল্লেখ করেছেন।
তবে গ্যালের বক্তব্য নিয়ে টুইটার কোনো মন্তব্য করেনি এবং হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটলেও তারা কী পদক্ষেপ নিয়েছিল, সে ব্যাপারে কিছুই জানায়নি। যে অনলাইন ফোরামে চুরিকৃত তথ্যগুলো ফাঁস করা হয়েছে, সেখান থেকে নেওয়া কিছু স্ক্রিন শট এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে। এ ছাড়া কখন কোন সময় টুইটার হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছিল, সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
খবরে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের শুরুতে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তখন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক টুইটারের মালিক ছিলেন না। এদিকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে খবর বের হয়েছিল টুইটারের ৪০ কোটি ব্যবহারকারীর ইমেইল অ্যাড্রেস এবং ফোন নাম্বারের তথ্য চুরি হয়েছে। এখন নতুন যে সংখ্যাটি বলা হচ্ছে আগের সংখ্যার সঙ্গে অনেক তফাৎ রয়েছে। টুইটারে এত বড় ধরনের হ্যাকিংয়ের ঘটনায় আটলান্টিক মহাসাগরের দু’পাশের নিয়ন্ত্রকরা নড়েচড়ে বসতে পারেন। আয়ারল্যান্ডে টুইটারের ইউরোপীয় সদর দপ্তর অবস্থিত।
আয়ারল্যান্ডের ডাটা প্রটেকশন কমিশন এবং মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন ইলন মাস্কের মালিকানাধীন কোম্পানিটিতে নজরদারির দায়িত্ব পালন করছে। ইউরোপীয় তথ্য সুরক্ষা বিধি এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিধিগুলোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রতিষ্ঠানটি চলছে কি না, তা নিশ্চিত করে তারা। বৃহস্পতিবার এ দুই নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানকে বার্তা পাঠিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাৎক্ষণিক সাড়া পাওয়া যায়নি। টুইটার কেনার পর থেকে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেন বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের ইলন মাস্ক। আয় বাড়াতে ব্লুটিকের জন্য অর্থ নেন। এবার টাকার বিনিময়ে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেওয়ার সুবিধা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইলন মাস্ক। টুইটারে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেওয়ার সুবিধা বন্ধ করা হয় ২০১৯ সালে। টুইটারের প্রতিষ্ঠাতা এবং তৎকালীন প্রধান নির্বাহী জ্যাক ডোর্সি সে সময় বলেছিলেন, রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনগুলো ভোটারদের প্রভাবিত করে। কিন্তু বুধবার ‘টুইটার সেফটি’ থেকে এক বার্তায় বলা হয়, ‘আমরা বিশ্বাস করি, বিজ্ঞাপন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে সাধারণ মানুষকে আলোচনার সুযোগ করে দেয়। তাই আমরা আগামী দিনে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেওয়ার পরিকল্পনা করছি।
২০২২ সালের অক্টোবরে মাস্ক টুইটারের মালিকানা কিনে নেন। টুইটার কেনার খরচ মেটাতে তাকে অনেক কিছু বিক্রি করতে হয়েছে। মাস্কের টুইটার কেনার পর থেকেই বিজ্ঞাপন থেকে টুইটারের আয় কমেছে। কর্মী ছাঁটাই, ঘৃণামূলক বক্তব্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে বিজ্ঞাপনদাতারা টুইটারে বিজ্ঞাপন দেওয়া থেকে সরে আসেন। তাই এবার আয় বাড়াতে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল টুইটার কর্তৃপক্ষ।