ট্রাম্পের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্কের বর্ণনা দিলেন প্লেবয় মডেল কারেন
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ১০ মাসের অন্তরঙ্গ সম্পর্কের কথা বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন প্লেবয় ম্যাগাজিনের সাবেক মডেল কারেন ম্যাকডোগাল। বৃটেনের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কারেন বলেন, ২০০৬ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে তার এই সম্পর্ক ছিল। তার ভাষায়- আমি তাকে ভালবাসতাম। তিনিও আমাকে ভালবাসতেন। আমি এটা জেনেছি, কারণ সব সময়ই তিনি আমাকে এটা বলতেন। তিনি আমাকে সব সময় ‘বেবি’ বলে ডাকতেন। বলতেন, তোমাকে ভালবাসি। তিনি আমাকে তার বন্ধুদের সামনে শো-অফ করতেন।
কারেন ম্যাকডোগালের বয়স এখন ৫২ বছর। তিনি বলেন, যখন জানতে পারেন মেলানিয়া ট্রাম্পকে বিয়ে করেছেন ট্রাম্প এবং ব্যারোন নামে একটি পুত্রসন্তান জন্ম দিয়েছেন মেলানিয়া, তখন তিনি এই সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন। নতুন করে প্রেম করেন ব্রুস উইলিসের সঙ্গে। ওয়েস্ট হলিউডে একটি বিলাসবহুল হোটেলের স্যুটে তার ওই সাক্ষাৎকার নেয় পত্রিকাটি।
তারা লিখেছে, গাউন পরা কারেনকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল কেন তিনি একজন ধনী, শক্তিধর এবং বয়স্ক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তার মধ্যে অন্যতম যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ এনেছেন কারেন ম্যাকডোগাল এবং সাবেক প্লেবয় তারকা স্টর্মি ডানিয়েলস। এই দুই নারীর অভিযোগ নিয়ে এখন ৭৬ বছর বয়সী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে ম্যানহাটান ডিস্ট্রিক্ট এটর্নির অফিস। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, যার বিরুদ্ধে ৩৪টি ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছে। যদিও তিনি এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রথমে অভিযোগ আনেন স্টর্মি ডানিয়েলস। তাকে ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন এক লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়ে মুখ বন্ধ করিয়েছিলেন। এ নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হয়েছে। ফলে স্টর্মি ডানিয়েল খুব বেশি পরিচিতি পেয়েছেন। তবে কারেন ম্যাকডোগালের কথা কম মানুষই শুনেছেন।
কারেন ম্যাকডোগালের কাহিনীও প্রায় একইভাবে এক লাখ ৫০ হাজার ডলার দিয়ে কবর দিয়েছিল একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকা। ট্রাম্পের বিষয়ে অভিযোগ এনেছেন স্টর্মি ডানিয়েলস। বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তার জীবনের সবচেয়ে খারাপ ৯০-সেকেন্ড সময় কেটেছে যৌনতায়। তবে কারেন ম্যাকডোগাল সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল বাস্তব এবং ভালবাসাময়।
এ বিষয়ে তার কাছে সাংবাদিক জানতে চান, ট্রাম্প তো এই ১০ মাসের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন। তিনি কারেন ম্যাকডোগাল এবং স্টর্মি ডানিয়েলসের সঙ্গে সম্পর্কের কথাকে রাবিশ বলেন। তিনি দাবি করেন সামনেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার নির্বাচন বন্ধ করাতে এসব ফৌজদারি অভিযোগ হলো রাজনৈতিক জাদুবিদ্যা।
এমন প্রশ্নের জবাবে কারেন ম্যাকডোগাল বলেন, তার (ট্রাম্প) লোকজন এসব অস্বীকার করেছে। কিন্তু তিনি তো কখনো অস্বীকার করেননি। কারেন বলেন, একজন সাংবাদিক ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেছিলেন- কারেন ম্যাকডোগালের সঙ্গে কি আপনার কোনো সম্পর্ক ছিল? ট্রাম্প উত্তরে শুধু বলেছেন, আমি কোনো অন্যায় করিনি। কারেন বলেন, এর কারণ ট্রাম্প জানেন আমি সত্য বলছি।
কারেন ম্যাকডোগালের জন্য একটি ভাল পয়েন্ট আছে। স্টর্মি ডানিয়েলস সম্পর্কে অনেক আজেবাজে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। কলামিস্ট ই. জ্যাঁ ক্যারোলকে গত সপ্তাহে আদালত ৫০ লাখ ডলার দেয়ার রায় দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কারেন ম্যাকডোগাল সম্পর্কে কোনো অবমাননাকর মন্তব্য করেননি ট্রাম্প।
কারেন ম্যাকডোগাল এক সময় ট্রাম্পকে ছেড়ে আসেন। এর কারণ, তিনি বলেন, আমার মনে হচ্ছিল আমি একজন অপরাধী নারী। আসলে আমি তো তা নই। তাই আমি সম্পর্ক ভেঙে দিই। তারপর আমার পরিবারের একজন সদস্য শহরে এলেন। আমরা একটি বার-এ গেলাম। সেখানে চমৎকার মানুষ ব্রুস উইলিসের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো। তার সঙ্গে ছবি তুললাম। হাতে হাত রাখলাম। ২০০৭ সালের শেষের দিকে কয়েক মাসের জন্য ইতালিতে অবকাশ যাপনে গেলাম। তার সঙ্গে ৬ মাস ডেটিং করলাম। এর মধ্য দিয়ে আমি ট্রাম্পের সঙ্গে কোনো প্রতারণা করিনি। কিন্তু ব্রুস এবং আমি ফোনে দীর্ঘ সময় কথা বলতাম। তখন ব্রুস ছিল একজন চমৎকার পুরুষ এবং সিঙ্গেল। এমন একজন পুরুষকে বাদ দিয়ে আমি কেন একজন বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে থাকবো?