১৯ বছর পর এবার শ্রাবণ ৫৯ দিন!
শ্রাবণ মাস হলো মহাদেবের মাস। এই মাসে দেব-দেবীদের বিশেষ আরাধনা করে থাকেন ভক্তরা। এটি ভারত জুড়ে এবং বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় লাখ লাখ হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য আধ্যাত্মিক ভক্তি, উপবাস ও উদযাপনের একটি সময়। সাধারণত, ভারতে বর্ষা ঋতুর আগমনের সময় জুলাই এবং আগস্ট মাসে এ পুজা হয়। বৃষ্টিকে শিবের আশীর্বাদ এবং জীবনের পুনর্নবীকরণের প্রতীক বলে বিশ্বাস করা হয়।
কবে শুরু হবে শ্রাবণ ২০২৩?
এ বছর শ্রাবণ মাস শুরু হবে ৪ জুলাই থেকে এবং শেষ হবে ৩১শে আগস্ট। অর্থাৎ শ্রাবণ মাস ৩০ দিনের পরিবর্তে ৫৯ দিনের হবে। এই কারণে এ বছর ৪টির পরিবর্তে ৮টি শ্রাবণ সোমবার পড়তে চলেছে।
কেন এই বছরের শ্রাবণ বিশেষ? ১৯ বছর পর কি বিরল ঘটনা ঘটছে?
এবার শ্রাবণ মাসে ১৯ বছর পর মলমাসও পড়তে চলেছে। সেক্ষেত্রে শ্রাবণ শুরুর প্রথম ১৩ দিন অর্থাৎ ৪ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত চলার পর, ১৮ জুলাই থেকে ১৬ অগাস্ট পর্যন্ত মালমাস চলবে। মলমাস শেষ হবে অমাবস্যায়। এর পরে ১৭ অগাস্ট থেকে ফের শ্রাবণ শুরু হবে, যা ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত চলবে। অর্থাৎ এই বছর শ্রাবণ চলবে পুরো দু-মাস ধরে।
২০২৩ সালের শ্রাবণ মাসের সোমবার এবং তারিখগুলো
শ্রাবণের প্রথম সোমবার – ১০ জুলাই ২০২৩
শ্রাবণের দ্বিতীয় সোমবার – ১৭ জুলাই ২০২৩
শ্রাবণের তৃতীয় সোমবার – ২৪ জুলাই ২০২৩
শ্রাবণের চতুর্থ সোমবার – ৩১ জুলাই ২০২৩
শ্রাবণের পঞ্চম সোমবার – ৭ আগস্ট ২০২৩
শ্রাবণের ষষ্ঠ সোমবার – ১৪ অগাস্ট ২০২৩
শ্রাবণের সপ্তম সোমবার – ২১ আগস্ট ২০২৩
শ্রাবণের অষ্টম সোমবার – ২৮ আগস্ট ২০২৩
শ্রাবণ উদযাপন
অনেক লোক সারা শ্রাবণ মাসে উপবাস পালন করে। বিশেষ করে সোমবারে, যা ভগবান শিবের জন্য অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। ভক্তরা নির্দিষ্ট খাদ্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে এবং কঠোর নিরামিষ খাদ্য বজায় রাখে। কিছু মানুষ আবার সম্পূর্ণ নির্জলা উপবাসও পালন করে।
শ্রাবণে উপবাস ছাড়াও, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভগবান শিব এবং মা পার্বতীকে উত্সর্গীকৃত কানওয়ার যাত্রাও শ্রাবণ মাসে উদযাপন করা হয়। এই আচারে ভগবান শিবের ভক্তরা জল ভরতির কলসির বাঁক কাঁধে নিয়ে যাত্রা করে। জাফরান রঙের পোশাক পরে এবং শিবের মন্দিরগুলোতে পায়ে হেঁটে যায়।
ভক্তরা মন্দিরে শিবের মূর্তি বা শিব লিঙ্গে দুধ, জল এবং বেল পাতা দিয়ে পুজো করে। শিব মন্দিরে ভগবান শিবকে বিভিন্ন পবিত্র পদার্থ যেমন দুধ, দই, মধু, ঘি এবং পবিত্র জল দিয়ে স্নান করিয়ে রুদ্রাভিষেক করা হয়। এর সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থনা এবং মন্ত্র উচ্চারণ করে।
ভক্তদের ভক্তিমূলক গান অর্থাৎ ভজন গাইতে শোনা যায়। ভগবান শিবকে উত্সর্গীকৃত ধর্মীয় বক্তৃতায় এবং কীর্তনে অংশ নিতে মন্দির বা বাড়িতে জড়ো হন ভক্তরা।
কিছু অঞ্চলে, এই সময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা এবং শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানগুলির মধ্যে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য, সঙ্গীত পরিবেশনা এবং ভগবান শিবের সঙ্গে সম্পর্কিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রদর্শন করা।
শ্রাবণ মাসে শিবের মন্দিরগুলো ফুল, আলো এবং শোভাময় জিনিস দিয়ে সাজানো হয়। ভক্তরা প্রার্থনা করতে এবং দেবতার আশীর্বাদ পেতে এই তীর্থস্থানগুলোতে যান।