স্বাধীনতা অর্জনের ৪৮ বছর পূর্তিতে বঙ্গভবনে সংবর্ধনা
স্বাধীনতা অর্জনের ৪৮ বছর পূর্তিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শীর্ষস্থানীয়দের উপস্থিতিতে মিলন মেলায় রূপ নেয় বঙ্গভবনের সবুজ চত্বর। বিজয় দিবসে বরাবরের মতো গতকাল সোমবার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে প্রতিবারের মতো এবারও কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত হন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
অতিথিদের মধ্যে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিক, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, বিদেশি কূটনীতিক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা ছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া ভারত ও রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও এ উদযাপনের সঙ্গী হয়েছেন।
খবর বাসস ও বিডিনিউজের।
বরেণ্য শিল্পীদের দেশাত্মবোধক ও লোকগান, শিশুশিল্পী আর সশস্ত্র বাহিনীর বাদক দলের পরিবেশনা উদযাপনে এনে দেয় ভিন্নমাত্রা। বিকেল পৌনে ৪টার দিকে স্ত্রী রাশিদা খানমকে সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থল বঙ্গভবনের মাঠে আসেন রাষ্ট্রপতি। এর কিছুক্ষণ আগে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি ও তার স্ত্রী মঞ্চে আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় জাতীয় সংগীত। পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন আবদুল হামিদ। এরপর বেলুন উড়িয়ে ‘বিজয় উৎসব’ পালন করা হয়। বঙ্গভবনের মাঠ থেকে কয়েকশ’ লাল-সবুজ বেলুন উড়িয়ে দেওয়া হয়।
লাল-সবুজ পাতা দিয়ে তৈরি একটি পতাকা এ আয়োজনে এনে দেয় বৈচিত্র্যের ছোঁয়া। পরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবারের সদস্যসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং তাদের সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন। ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল ও মালদ্বীপের ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের সদস্যদের সঙ্গেও কুশল বিনিময় করেন তারা।
অনুষ্ঠান মাঠের ভিভিআইপি এনক্লোজারে বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কেক কাটেন। পরে তারা মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, বিদেশি অতিথি, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধানরাসহ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ পরে মাঠে ঘুরে ঘুরে অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে ছিলেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
কূটনৈতিক কোরের ডিন ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রদূত জর্জ কোচেরি, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার, ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পোসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে শিল্পী শাহীন সামাদ, তিমির নন্দী, ফাহমিদা নবী, বশিরুজ্জামান সাব্বির, অনুপমা মুক্তি ও আবু বকর সিদ্দিক গান গেয়ে শোনান। এছাড়া শিশু একাডেমির শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করে।