যুক্তরাষ্ট্রে ইনফ্লুয়েঞ্জায় দেড় কোটি আক্রান্ত, ছড়াচ্ছে আতঙ্ক
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে নতুন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ইনফ্লুয়েঞ্জা। যদিও এটি মহামারী নতুন নয়। গত কয়েক বছর ধরেই সেখানে ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ২০২০ সালের প্রথম দু’সপ্তাহের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ইনফ্লুঞ্জেয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা আবারো বাড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে ইউএস সেন্টারস অফ ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সিএনএন এ সংবাদ প্রকাশ করেছে।
প্রতিষ্ঠানটি সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ ফ্লু আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে। গত এক মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রে এই ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন ৮ হাজার ২০০ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ভাইরাস-ঘটিত একধরনের সংক্রামক সর্দিজ্বর। এই মহামারী যুক্তরাষ্ট্রে নতুন নয়। গত কয়েক বছর ধরেই সেখানে ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
সিএনএন-এর প্রতিবেদনে জাতীয় অ্যালার্জি এবং সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউটের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ২০১৯-২০২০ ইনফ্লুয়েঞ্জা মৌসুমটি গত দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ছিল। সারা বছরে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ ফ্লু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফ্লুয়ের প্রাদুর্ভাব যে দিন দিন বেড়েই চলেছে, এই বিপুল সংখ্যক আক্রান্তের সংখ্যা সেটাই প্রমাণ করে।
সংক্রামক রোগ বিষয়ক জার্নাল কনটাজিওন লাইভ জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে ১৫টি শিশুর ফ্লু আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শিশুদের ক্ষেত্রে ফ্লু মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে, যার ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই মৌসুমে ইনফ্লুয়েঞ্জা বি ভাইরাস বেশি প্রভাব বিস্তার করছে। আক্রান্তরা অধিকাংশই ২৫ বছরের কম বয়সী।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল জানিয়েছে, এখন থেকে প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লু-তে আক্রান্ত কমপক্ষে ১২ হাজার মানুষের মৃত্যু হবে। ২০১৭-২০১৮ মৌসুমে ফ্লু সংক্রমণে ৬১ হাজার আমেরিকানের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে আরও সাড়ে ৪ কোটি।
যুক্তরাষ্ট্রের টেম্পল ইউনিভার্সিটির লুইস কাৎজ স্কুল অব মেডিসিনের ফ্যামিলি অ্যান্ড কমিউনিটি মেডিসিনের প্রধান ড. মার্গোট সেভয় বলেছেন, ফ্লু আমেরিকানদের জীবনে একটি নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে দিন দিন এটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকরা।
ইউনিভার্সি অব মিনেসোটা মেডিকেল স্কুলের চিকিৎসক নাথান কোমিলো বলেন, লোকজনের এটাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত। ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে একটি আশঙ্কাজনক বিষয় হচ্ছে ভাইরাসগুলোতে প্রতি বছর পরিবর্তন আসছে। যার ফলে ভাইরাস শনাক্ত ও এর চিকিৎসায়ও পরিবর্তন আনতে হচ্ছে।