জাতিসংঘের আন্ত:ধর্মীয় সম্প্রীতি সপ্তাহে রাবাব ফাতিমা বললেন বাংলাদেশের কথা
গেল ৪ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা, জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ‘বৈষম্য, বৈরিতা ও সহিংসতা বন্ধে ঘৃণাত্বক বক্তব্য মোকাবিলা ও উষ্কানি প্রতিরোধ: জাতিসংঘ ব্যবস্থাপনার মধ্যে সমন্বয়’ শীর্ষক এক সাইড ইভেন্টে বক্তব্য প্রদানকালে বাংলাদেশে বিদ্যমান আন্ত:ধর্মীয় সম্প্রীতির কথা তুলে ধরেন।
আন্ত:ধর্মীয় সম্প্রীতি সপ্তাহ উপলক্ষে জাতিসংঘের জেনোসাইড প্রিভেনশন ও রেসপন্সিবিলিটি টু প্রটেক্ট কার্যালয় এই সাইড-ইভেন্টের আয়োজন করে। এতে সহ-আয়োজক ছিল বাংলাদেশ, মরক্কো ও ইতালি।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয় উক্তি ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ উদ্ধৃত করে কিভাবে বাংলাদেশে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃষ্টান শান্তি ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে মিলে-মিশে বসবাস করছে তা তুলে ধরেন।
স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ধর্মীয় নেতা ও শিক্ষকগণকে আমাদের সমাজে সর্বোচ্চ সম্মানের চোখে দেখা হয় এবং একারণে আমরা তাদেরকে সামনের সারিতে রেখে সমাজ থেকে ধর্মের অপব্যবহার, ঘৃণাত্বক বক্তব্য, অসিহষ্ণুতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
এক্ষেত্রে তিনি ধর্মীয় নেতা, মসজিদসহ ধর্মীয় উপসানলয় ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশগ্রহণের বেশকিছু উদাহরণ তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা, সন্ত্রাসবাদ, সহিংস উগ্রবাদ ও মৌলবাদ নির্মূলে বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি এবং এক্ষেত্রে সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা এলক্ষ্যে ‘সমগ্র সমাজ’ দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করে বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছি।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বহুপাক্ষিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের নানা দিক উল্লেখ করে বলেন, আমরা সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধে গঠিত ‘গ্লোবাল কমিউনিটি এনগেজমেন্ট এন্ড রেজিলিয়েন্স ফান্ড (জিসিআরইএফ) এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং আন্ত:ধর্মীয় প্রচারণা, আন্ত:সাংস্কৃতিক সংলাপ ও সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধ বিষয়ক গ্রুপ অব ফ্রেন্ডসের সদস্য। এছাড়া আমরা বাংলাদেশের ফ্লাগশীপ রেজুলেশন ‘শান্তির সংস্কৃতি’র মাধ্যমে আন্ত:ধর্মীয় ও আন্ত:সাংস্কৃতিক সংলাপের প্রসারে নিরবচ্ছিনভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
ঘৃণাত্বক বক্তব্য রোধে কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়নসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জাতিসংঘের চলমান পদক্ষেপকে এগিয়ে নিতে বেশকিছু সুপারিশের কথা উল্লেখ করেন স্থায়ী প্রতিনিধি। এক্ষেত্রে তিনি রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টি তুলে ধরেন।
গণহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত অ্যাডামা ডিয়েং ইভেন্টটির সঞ্চালনা করেন।
সম্প্রতি, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আনুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্র ছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সিভিল সোসাইটি প্রতিষ্ঠানসমূহ অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করেন।