করোনাভাইরাসের সাক্ষাৎকার নেওয়া মুফতি ইব্রাহীমের সাক্ষাৎকার
প্রশ্ন: জি ভালো।আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু জানতে চাই…
মুফতি ইব্রাহীম: আমি আসলে একা। আমি সারাজীবন একা একজন মানুষ। আমি কোনও দলে নাই, রাজনীতি করি নাই কখনও।যদি এক কথা বলি আমি একজন কিতাবি মানুষ। আমার দাদা ছিলেন নোয়াখালীর আলিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল। কোলকাতা আলিয়ার বড় ডিগ্রিধারী।
হাটহাজারী মাদ্রাসার উৎপত্তি হয়েছে আমার নানাকে দিয়ে। আমার নানা সারাজীবন হাটহাজারী মাদরাসার মজলিসে সূরা সদস্য ছিলেন। আমার মামা মুফতি আব্দুল মুইযকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বায়তুল মোকাররম মসজিদের প্রথম খতিব হিসেবে নিয়োগ দেন। লালবাগ মাদরাসার মুফতি ছিলেন মামা।
বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা পরবর্তী সময় মামাকে নিয়ে এসে বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব হিসেবে নিয়োগ দেন। স্বাধীন বাংলার বায়তুল মোকাররমের প্রথম খতিব তিনি। আমরণ খতিব ছিলেন বায়তুল মোকাররমে। বায়তুল মোকাররমের বর্তমান খতিব সালাহুদ্দিন সাহেব ইনি আমার বাবার ছাত্র ছিলেন। খুবই প্রিয় ছাত্র ছিলেন। আমরা তিনশ’ বছর থেকে ধর্মীয় শিক্ষা, ধর্মীয় দাওয়াত এসব কাজে নিয়োজিত আছি।
প্রশ্ন: সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাচ্ছিলাম-
মুফতি ইব্রাহীম: মানুষ বিভিন্ন সময় ধারণা করে। সেই ধারণা ভুল হতে পারে সেটা আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ সত্যি হতে পারে। বিভিন্ন কারণ থেকে মানুষ কথা বলে কিন্তু এইসব তো রোখার সাধ্য নেই কারও। মানুষ নিজের পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে কথাগুলো বলে। যেমন, অনেকেই মন্তব্য করেছে ভাইরাস আবার কথা বলে নাকি?
কিন্তু সে জানে না পৃথিবীর সকল সৃষ্টিরাই কথা বলার পাওয়ার রাখে। হাশরের দিন এই মাটির পৃথিবী সমস্ত সংবাদ পরিবেশন করবে। মাটি কথা বলবে, কোরআনে একটা সুরাই আছে আন নামল, নামল অর্থ পিঁপড়া। সোলাইমান (আঃ) তার বিশাল বাহিনী নিয়ে যাচ্ছে। সে সময় একটা পিঁপড়ার দল যাচ্ছিল।
হঠাৎ কমান্ডার পিঁপড়া বলল, হে পিঁপড়ার সমাজ তোমরা তোমাদের গৃহে ঢুকে পড়। তোমরা যদি গৃহে না প্রবেশ কর তাহলে সোলাইমান তোমাদের পদপিষ্ট করে মেরে ফেলবে। ওরা তো জানবেও না যে তোমার তাদের পায়ের তলে পরে পিষ্ট হচ্ছ। অর্থাৎ এই মহাবিশ্বের সবকিছুই বক্তব্য দিতে পারবে। কেয়ামত যত ঘনিয়ে আসবে বাঁশের কঞ্চিও কথা বলবে।
প্রশ্ন: মামুন মারুফের বরাত দিয়ে আপনি কথা বলেন, কে মামুন মারুফ?
প্রশ্ন: মামুনের সাথে কী কথা হয়েছে আপনার?
মুফতি ইব্রাহীম: ফেব্রুয়ারি নাগাদ সে স্বপ্ন দেখেছে, করোনাভাইরাস তাকে নানান কথা বলেছে। আমরা তো স্বপ্নের কথা বুঝতে পারি সেটা মেকি, বানোয়াট না আর্টিফিসিয়াল। তার স্বপ্নটা শুনে মনে হলো সে সাদামাটা টাইপের একটা ছেলে। তার স্বপ্নটা সত্য হওয়ার সম্ভাবনাই আমার কাছে নাইন্টি নাইন পার্সেন্ট মনে হলো।
আমি দেখলাম এতে খারাপ কিছু নাই, স্বপ্নকে সামনে রেখে জাতিকে যদি সতর্ক করা যায় তাহলে এতে তো ক্ষতি কিছু নাই। আমরা তো ভালো যে মানুষকে আগেভাগেই ইনফর্ম করছি। যখন কেয়ামত ঘনিয়ে আসবে মোমিনের স্বপ্ন মিথ্যা হবে না। স্বপ্ন যে কোনও মানুষই দেখতে পারে সে মুমিন হোক বা না হোক।
প্রশ্ন: 1.q7+6=13 এই সূত্রের অর্থ কী? আপনি তো ওয়াজ মাহফিলে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সূত্র বলেছেন।
মুফতি ইব্রাহীম: এইটা একটা জটিল বিষয়। এইটার আলোকে ও (মামুন) চেষ্টা করতেছে কোনও ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা যায় কিনা। 1 মানে আল্লাহ এক। এক আল্লাহর প্রতি ফেইথ থাকতে হবে। ফেইথ যদি না থাকে ঈমান যদি না থাকে তাহলে কোনও কিছুই কাজে আসবে না। অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার প্রতি অবিচল থাকতে হবে।
qমানে কোরআন। q7 হলো কোরআনের সুরা ফাতিহার ৭টি আয়াত। এই ৭ টি আয়াত তো এমনিই শেফা, ৭ বার সুরা ফাতিহা পড়লে যে কোনও রোগব্যাধি থেকে এমনিতেই মুক্তি আসে। এইটা বিশাল একটা সূত্র। এর অনেক ব্যাখ্যা আছে। আমাকে সে (মামুন) যে কথাগুলো বলেছে তা প্রত্যেকটি সায়েন্টিক বলে মনে হয়েছে। আমরা তো ওষুধ কম্পানিও না, সেইটা বানানোর মতো ক্ষমতাও নাই। সে যদি পারে ব্যক্তিগতভাবে তাহলে উপকার করার চেষ্টা করবে, এই আরকি…
প্রশ্ন: সৌদি আরব, ইরানেও তো সংক্রমণ করেছে…
মুফতি ইব্রাহীম: সৌদি আরবে তাদেরই হয়েছে যারা অশালীন, ওখানের ভেতরের অবস্থা তো খুবই খারাপ। আমি যাই তো, দেখেছি। দুবাইকে দেখলে তো মনে হয় না ওটা কোনও মুসলিমের দেশ। কী হয় না সেখানে? ইরানে তো ম্যাসাকার অবস্থা, ৫ জন মন্ত্রীও তো মনে হয় মারা গেছে। ওরা যেহেতু আল্লাহর ধর্মকে বিকৃত করেছে। আমি বলেছি আমাদের দেশে দেরি করে আসবে। আমাদের মতো কাউকে আক্রমণ করবে না।
করোনা আক্রমণ করবে পাপিয়ার মতো মানুষদের। আমাদের ভয়ের কিছু নেই। মামুন স্বপ্নে জানতে পেরেছে আমাদের দেশের যারা অসৎ কাজ করে, নেশা করে ঘুষ খায়, দুর্নীতি করে তাদের ধরবে করোনা। যুগে যুগে এসব অপরাধ যারা করে তাদের ওপরই গজব এসেছিল।
প্রশ্ন: আপনি তো ইসলামী বক্তা, এর বাইরে কী করেন?
দৈনিক কালের কণ্ঠের সৌজন্যে।