ইকুয়েডরে করোনায় মৃতদের লাশ রাস্তায় ফেলা হচ্ছে
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরও করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিপর্যস্ত। পিছিয়ে নেই।
ইকুয়েডরের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর গুয়ায়াকিলে করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। জনশূন্য রাস্তাঘাটে যেখানে সেখানে পড়ে আছে মানুষের মরদেহ।
কিছু মানুষ রাস্তা দিয়ে হেটে গেলেও কেউ এগিয়ে যাচ্ছেন না মৃতদেহের দিকে। দেশটির কর্তৃপক্ষ পড়ে থাকা সেসব মরদেহ বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করছেন।
সিএনএনের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করায় জনবহুল এই শহরটিতে সব ধরনের সেবা ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতালে অসুস্থ রোগীদের রাখার মতো কোনও বেড খালি নেই । মর্গে, কবরস্থানে জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। এখানকার অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, মরদেহ রাস্তায় ফেলে রাখা ছাড়া তাদের কোনও উপায় নেই।
ঠিক কতজন শহরটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তার কোনও সঠিক তথ্য নেই। অনেক পরিবার জানিয়েছে, তাদের স্বজনদের দেহে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ দেখা দিচ্ছে।
কিন্তু তারা এটাও জানেন, যারা অসুস্থ হবেন তারা চিকিৎসা পাবেন না। কারণ গুয়ায়াকিলে বেশিরভাগ হাসপাতালেই এখন রোগীর চাপ উপচে পড়ছে।হাসপাতালে জায়গা না পাওয়ায় অনেকে বিনা চিকিৎসায় বাড়িতেই মারা যাচ্ছেন।
দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২৩ থেকে ৩০ মার্চের মধ্যে শহরটির বিভিন্ন বাড়ি থেকে ৩০০ টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে ইকুয়েডরের ন্যাশনাল সার্ভিস অব রিস্ক এন্ড ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ জানিয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত দেশটিতে ৩ হাজার ৩৬৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ১৪৫ জন।
এর মধ্যে ১০২ জনই গুয়ায়িকি প্রদেশের, যেখানে গুয়ায়াকিল শহরটির অবস্থান। তবে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা এর তুলনায় অনেক বেশি বলেই অনেকে মত দিয়েছেন।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এই মাসে শুধু গুয়ায়াকিল শহরেই ২ হাজার ৫০০ থেকে শুরু করে ৩ হাজার ৫০০ জনের মৃত্যু হতে পারে।
জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সিস্টেম সায়েন্সেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (সিএসএসই) তথ্য অনুযায়ী, শনিবার দুপুর পর্যন্ত বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬০ হাজার ১৪৭ জনের।
আর বিশ্বে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৩০ হাজার ৫৯১ জন। এদের মধ্যে ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯১ জন।◉