Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
December 22, 2024
হেডলাইন
Homeনিউ ইয়র্কনিউ ইয়র্কে আরও একজন প্রবাসী বাংলাদেশি মারা গেলেন

নিউ ইয়র্কে আরও একজন প্রবাসী বাংলাদেশি মারা গেলেন

নিউ ইয়র্কে আরও একজন প্রবাসী বাংলাদেশি মারা গেলেন

নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের (এনওয়াইপিডি) ডিটেকটিভ জামিল সারোয়ার জনির দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শরীরে ঢুকেছে করোনাভাইরাস।

পরীক্ষায় যখন পজিটিভ ধরা পড়ল ততক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। ঘরে বসে আক্রান্ত হয়েছেন ডিটেকটিভ জামিলের বাবা। মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালের নেওয়ার পর স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরে বাবা অ্যাডভোকেট সারোয়ার হোসেন মারা যান।

ডিটেকটিভ জামিলের বাবার সেবা করায় তার এখন মা অধ্যক্ষ রেনু সুলতানাও অসুস্থ। এখনও মায়ের কোভিড-১৯ পরীক্ষা সম্পন্ন হয় নি। স্বামীর মৃত্যুর খবরও জানানো হয় নি তাকে।

এদিকে বাবার মৃত্যু সংবাদেও কাঁদতে পারছেন না ডিটেকটিভ জামিল। কেননা তাতে মা যদি জেনে যেতে পারেন। অসুস্থ মাকে বাবার মৃত্যু সংবাদ দেওয়া ঝুঁকি নিতে পারছেন না ডিটেকটিভ জামিল।

ইতোমধ্যে জামিলের সহকর্মীরা বাবার মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করছেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে অ্যাডভোকেট সারোয়ার হোসেনের সন্তান হিসেবে কিছুই করতে পারছেন না ডিটেকটিভ জনি।

নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি অনেক পরিবারে ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস এভাবেই ছোবল দিয়েছে। কেড়ে নিয়েছে বহু বাংলাদেশির প্রাণ। লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে অনেক পরিবারকে। হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন অনেক বাংলাদেশি।

ডিটেকটিভ জামিল সারোয়ার জনির পরিবারের করুণ এই অসহায়ত্বের কথা শুনে তার সুহৃদসহ বাংলাদেশি কমিউনিটির অনেকেই মুষড়ে পড়েছেন।

লম্বা ছুটি কাটিয়ে স্ত্রী ও কন্যাকে বাংলাদেশে রেখে ইমিগ্রান্ট বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় এক মাস আগে নিউ ইয়র্কে ফিরে কর্মস্থলে যোগ দেন ডিটেকটিভ জামিল সারোয়ার জনি। নিউ ইয়র্ক পুলিশের ‘হিরো’ উপাধি পাওয়া ডিটেকটিভ জামিল সারোয়ার জনি বর্তমানে ইন্টেলিজেন্স উইংয়ে কর্মরত।

পেশাগত কারণে সাদা পোশাকে (আন্ডারকভার) অনেক জায়গায় যেতে হয় তাকে। পুরো নিউ ইয়র্ক যখন লকডাউন তখনও দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। হঠাৎ একদিন বাসায় ফিরে অসুস্থবোধ করেন জনি। গলা ব্যথা ও তীব্র জ্বরের লক্ষণ শরীরে।

এরপর নিজেই গাড়ি চালিয়ে কোভিড-১৯ এর পরীক্ষা করিয়ে আসেন। ফার্স্ট রেসপন্ডার হিসাবে দ্রুত জানতে পারেন তার শরীরে ঢুকে পড়েছে কোভিড-১৯ ভাইরাস। কিন্তু শরীরের ইমিউন সিস্টেমের সঙ্গে লড়াই করে প্রায় দুসপ্তাহ পর সুস্থ হয়ে ওঠেন জনি।

অন্যদিকে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বাবা সারোয়ার হোসেন। হাসপাতালে নেওয়ারও পরিবেশ নেই। শরীরে কোভিড-১৯ ধরা পড়লেও সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছিল না। বাসায় রেখেই চিকিৎসা চলছিল তার।

এরইমধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স কল করে সারোয়ার হোসেনকে নিয়ে যাওয়া হয় বাসার কাছের এলমহার্স্ট হাসপাতালে। এই হাসপাতালটি এখন অনেকটা মৃত্যুপুরী হিসাবে চিহ্নিত হয়ে গেছে। নিউইয়র্ক সিটিতে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড এই হাসপাতালেই।

স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টায় হাসপাতালে মারা যান ডিটেকটিভ জনির বাবা অ্যাডভোকেট সারোয়ার হোসেন। তার মরদেহ এখনও হাসপাতালে অস্থায়ী হিমঘরে রয়েছে। মরদেহ বুঝে পেলে ফিউনারেল হোমের সহযোগিতায় মরদেহ দাফন করা হবে লং আইল্যান্ডের ওয়াশিংটন মেমোরিয়াল মুসলিম কবরস্থানে। আইন অনুযায়ী ৫-৭ জন অংশ নিতে পারবেন জানাজা ও দাফন কার্যক্রমে।

ডিটেকটিভ জনি জানান, তার মা আগের চেয়ে এখন কিছুটা সুস্থ। তিনি হাসপাতালেও যেতে চাইছেন না। বাবাকে হারিয়ে তিনি কাঁদতেও পারছেন না, যদি মা জেনে যান এই আশঙ্কায়। তাহলে হয়ত মাকেও হারাতে হতে পারে।

ডিটেকটিভ জনির সহকর্মী নিউইয়র্ক পুলিশের অফিসার আব্দুল লতিফ জানান, এলমহার্স্ট হাসপাতালে শুধু লাশ আর লাশ। কখন জনির বাবার মরদেহ বুঝে পাব জানি না। মরদেহ পাবার পর দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, জনির বাবার মৃত্যুতে আমরা সহকর্মীরা গভীরভাবে শোকাহত।

ডিটেকটিভ জামিল সারোয়ার জনির বাবা অ্যাডভোকেট সারোয়ার হোসেন পিরোজপুর শহরের সিনিয়র আইনজীবী ছিলেন। তার সহধর্মিণী রেনু সুলতানা পিরোজপুর সরকারি মহিলা কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। ছোট ছেলে জনির আবেদনে তারা যুক্তরাষ্ট্রে ইমিগ্র্যান্ট হয়েছেন। 

উল্লেখ্য, নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত শতাধিক বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আক্রান্ত হাজার হাজার। কিন্তু আক্রান্ত ও মারা যাওয়ার সঠিক কোনও হিসেব নেই কারো কাছে।◉

 

 

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment