ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো বিশ্বভারতীতে ঈদ ‘প্রার্থনা’
সম্প্রীতির নজির গড়ল বিশ্বভারতী। শতাব্দীপ্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই প্রথমবার মুসলমান সম্প্রদায়ের ঈদ উৎসবের দিন আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচালিত হলো বিশেষ প্রার্থনা। বিশ্বভারতীর ভাষায় এই আনুষ্ঠানিকতাকে বলা হয় ‘মন্দির’। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এ আয়োজন করে বলেন, ‘বিশ্বভারতীর ইতিহাসে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটছে। এখানে খ্রিস্ট উৎসবে বিশেষ মন্দির হতো। এবার থেকে ঈদেও হবে।’
অবশ্য বিশেষ অনুষ্ঠানও বিতর্কহীন থাকেনি। উপাসনাগৃহে বসেই উপাচার্য কটাক্ষ করে বলেন, ‘বিশ্বভারতীতে যা কিছু সমস্যা হচ্ছে সব কিছুতেই সম্প্রীতির অভাব রয়েছে। আমি বললেই ভুল আর বিখ্যাত পরিবারের কোনো সদস্য যদি ভুল বলেন বা ভুল কিছু করেন, সেটিকে সবাই ঠিক বলে।’
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শান্তিনিকেতনের উপাসনা মন্দিরে পালিত হয় বিশেষ ‘মন্দির’। সেই কাচঘরে উপাসনার পর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘বিশ্বভারতীতে খ্রিস্ট উৎসবে মন্দির হয়। ঈদ নিয়ে কোনো দিনই বিশ্বভারতীতে মন্দির হতো না। গত বছর আমরা আলোকসজ্জা করেছিলাম। এ বছর থেকে উপাসনা মন্দিরেও বিশেষ প্রার্থনা করলাম। বিশ্বভারতী ইতিহাসে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটছে। এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদ পালন করা হচ্ছে বিশ্বভারতীতে।’
এরপরই উপাচার্যের খোঁচা, ‘বিশ্বভারতীতে যা কিছু সমস্যা হচ্ছে সব কিছুতেই সম্প্রীতির অভাব রয়েছে। আমি বললেই ভুল আর বিখ্যাত পরিবারের কোনো সদস্য যদি ভুল বলেন বা ভুল কিছু করেন সেটিকে সবাই ঠিক বলে।’ সম্প্রীতি নিয়ে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর প্রশ্ন, ‘যে সম্প্রীতির কথা বলেছেন গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই সম্প্রীতি আজ কোথায়? আগামী প্রজন্মকে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভাবতে হবে।’ নাম না করে অমর্ত্য সেনকে আক্রমণ করে উপাচার্যের সংযোজন, ‘কোনো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।’
শান্তিনিকেতনের ব্রহ্ম মন্দির বা উপাসনাগৃহ ১৩৫ বছর ধরে ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। ব্রহ্ম উপাসনার জন্যই গড়ে উঠেছিল এই মন্দির। প্রতি বুধবার বিশেষ প্রার্থনা করার ব্যবস্থা রয়েছে। এই উপাসনাগৃহ শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের অধীনস্থ। সেখানে বসে সাধারণত উপাসনা ছাড়াও আশ্রমিক এবং উপাচার্যের সঙ্গে মতবিনিময় হয়।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন