ইলন মাস্ক টুইটার কেনায় আনন্দিত ডোনাল্ড ট্রাম্প
ইলন মাস্ক টুইটার কিনে নেওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেছেন, জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি এখন সুস্থমস্তিষ্ক মানুষের হাতে রয়েছে। তবে আজীবন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলে প্ল্যাটফর্মটিতে ফিরবেন কি না তা স্পষ্ট করেননি সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ইলন মাস্ক বলেছিলেন, (ট্রাম্পের বিরুদ্ধে) তিনি সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবেন।
টুইটারকে বাম-পক্ষপাতমূলক বলে অভিযুক্ত করেছিলেন মাস্ক। টুইটার অধিগ্রহণের পর গত বৃহস্পতিবার তিনি প্রধান নির্বাহীকে বরখাস্ত করেছেন।
ইলন মাস্ক আগেই বলেছিলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে (টুইটারে) নিষিদ্ধ করার বিষয়টি ঠিক নয়। চলতি বছরের মে মাসে তিনি ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আমি মনে করি এটা ভুল ছিল। আমি মনে করি এটি নৈতিকভাবে খারাপ সিদ্ধান্ত এবং চরমভাবে বোকামি।
টুইটারে অধিগ্রহণের পর ইলন মাস্ক বলেছেন, টুইটারকে এমন একটি ‘ডিজিটাল টাউন স্কয়ার’ হিসেবে গড়তে চান, যেখানে কোনো সহিংসতা ছাড়াই সুস্থভাবে বিস্তৃত বিশ্বাস নিয়ে বিতর্ক করা যেতে পারে।
শুক্রবার নিজের ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আমি খুবই খুশি যে, টুইটার এখন বিবেকবান মানুষের হাতে। এটি আর মৌলবাদী বামপন্থী পাগল ও উন্মাদদের দিয়ে পরিচালিত হবে না; যারা সত্যিই আমাদের দেশকে ঘৃণা করে।
ইলন মাস্ক ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি ট্রাম্পের টুইটার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে পারেন। ২০২১ সালে ক্যাপিটল হিল দাঙ্গায় উসকানির অভিযোগে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছিল টুইটার।
ফক্স নিউজ ডিজিটালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলে তিনি টুইটারে ফিরবেন কি না। তবে এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। তবে দাবি করেছেন, মনে হয় না, আমাকে ছাড়া টুইটার সফল হবে।
এসময় টুইটার কেনায় ইলন মাস্ককে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানান ট্রাম্প।
টুইটারে যেমন জনপ্রিয়, তেমন সক্রিয় ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিষিদ্ধ হওয়ার আগে প্ল্যাটফর্মটিতে তার প্রায় আট কোটি অনুসারী ছিল। সেসময় ট্রাম্পের টুইট নিয়ে বিতর্ক হয়ে উঠেছিল নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। তিনি প্রতিদিন এত টুইট করতেন যে, কেউ কেউ তাকে ‘কমান্ডার ইন টুইটস’ বলেও কটাক্ষ করতেন।
তবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কোভিড-১৯ মহামারি ও ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নির্বাচন নিয়ে একের পর এক ভুল তথ্য বা গুজব ছড়িয়ে গেছেন।
২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিল দাঙ্গার দিন মোট ২৫বার টুইট করেছিলেন তিনি। তার কিছু উত্তেজক পোস্ট কংগ্রেসের শুনানিতে প্রমাণ হিসেবেও ব্যবহার হয়েছিল।
শেষপর্যন্ত ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের ১২ বছরের পুরোনো অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয় টুইটার। তৎকালীন কর্তৃপক্ষের উদ্বেগ ছিল, সাবেক প্রেসিডেন্ট আরো সহিংসতা ছড়াতে প্ল্যাটফর্মটিকে ব্যবহার করতে পারেন।
আগামী ৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এমন সময়ে ট্রাম্প টুইটারে ফিরলে তা নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ান