Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
December 22, 2024
হেডলাইন
Homeভারতঈদের জামাতে পুরুষদের সঙ্গে একই কাতারে কলকাতার নারীরা

ঈদের জামাতে পুরুষদের সঙ্গে একই কাতারে কলকাতার নারীরা

ঈদের জামাতে পুরুষদের সঙ্গে একই কাতারে কলকাতার নারীরা

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় এবার ঈদে যোগ হলো নতুন মাত্রা। আরো বেশি জায়গায় জামাতের আয়োজন হলো। তার চেয়েও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা হচ্ছে, এইবার অনেক নারী পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঈদের নামাজ পড়েছেন।

তরুণী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সোফিয়া কাজি, প্রৌঢ়া স্কুল শিক্ষিকা রোশেনারা এবং গৃহবধূ আঞ্জুরা দফাদার! ঈদে কলকাতায় তারা জামাতে নামাজ পড়লেন খোলা ময়দানে। ফলে চোখে ছিল আনন্দাশ্রু। তাদের মধ্যে একমাত্র সোফিয়া কর্মসূত্রে সিঙ্গাপুরে, অস্ট্রেলিয়ায় মসজিদে মেয়েদের দলে নামাজ পড়েছেন। নিউ টাউনের বাসিন্দা রোশেনারা ও আঞ্জুরার আনন্দ তাই আরো বেশি।

এদেরই একজন বলছিলেন, ‘কখনো ভাবিনি, বাড়ির বাইরে অন্য মেয়েদের সঙ্গে জামাতে নামাজ পড়ব।’

গতকাল শনিবার ঈদের সকালে কলকাতার নিউ টাউন-কলকাতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিশাল হলরুমে তারা নামাজ আদায় করেন। শহরের আরেক প্রান্তে মোমিনপুরের সাফিনা আহমেদের অভিজ্ঞতাও একই রকম। এত দিন বাড়িতে নানি বা মায়ের নেতৃত্বে ঈদের নামাজ পড়া হয়েছে। কিন্তু এই প্রথম খোলা মাঠে দল বেঁধে নামাজ পড়েন তিনি। খুশির ঈদে কোলাকুলিতেও ছিল তাদের জন্য বাড়তি আবেগ।

সোফিয়া স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলছিলেন, ‘আমাদের দেশের বেশির ভাগ মসজিদেই পরিকাঠামোর অভাব। নইলে মেয়েরা আরো নানা জায়গায় এমন সুযোগ পেতেন।’ নিউ টাউনে শতাধিক মহিলাকে ঠাঁই দিতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

মোমিনপুরের হুসেন শাহ পার্কের মাঠের একাংশে এবং নিউ টাউন-কলকাতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিশাল হলরুমে এবারই প্রথম ঈদের নামাজে মেয়েরাও যোগ দিয়েছিলেন। বীরভূমের মুরারইয়ের মতো গ্রামবাংলার কোনো কোনো এলাকায় ভারতের মুসলমান নারীরা ঈদের নামাজে যোগ দেন। কলকাতা ময়দানেও কালীঘাট ক্লাবের কাছের মাঠে মেয়েদের ছোট্ট ঈদের জামাত হয়ে আসছিল। এখন এই বৃত্তটা আরো বড় হচ্ছে।

একই চত্বরে মাঝে পর্দা টেনে পুরুষ ও নারীদের জন্য আলাদা জামাতের ব্যবস্থা করা হয়। ইমাম সাহেব মাইকে পুরুষ, মহিলা সবার নামাজই পরিচালনা করলেন। নিউ টাউনের জামাতে কেউ একজন বলেছিলেন, ‘বাংলায় বলুন’। এরপর খুতবার অংশ বাংলাতেই বললেন বালিগড়ির বাসিন্দা হাফেজ কুতুবুদ্দিন মোল্লা। হুসেন শাহ পার্কে এত দিন বরাবর বাংলায়ই খুতবা পড়েছেন ক্যানিংয়ের জীবনতলার একটি মসজিদের ইমাম কারি জিয়াউর রহমান।

মেয়েদের এবং ছেলেদের নামাজ পড়ার সময় হাত আলাদা ভঙ্গিতে রাখার নিয়ম আছে। ইমাম জিয়াউর রহমান সহজ করেই তা বুঝিয়ে দেন। তিনি মুসল্লিদের উদ্দেশে বলেন, ঈদের খুশি হিন্দু, খ্রিস্টান, জৈন, বৌদ্ধ সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে হবে। সেই সঙ্গে দেশ বা সমাজ পাল্টে দিতে মেয়েদের বিশেষ ভূমিকার কথা বারবার উল্লেখ করলেন।

নিউ টাউনের মুসলিম বাসিন্দারা এত দিন ঈদের নামাজ পড়তে আশপাশের কোনো গ্রামের মসজিদ বা কলকাতায় যেতে বাধ্য হতেন। নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের উদ্যোগে এবার প্রথম তারা নিউ টাউনেই নামাজ পড়ার সুযোগ পেলেন। স্থানীয় মেলার মাঠ বা সার্ভিস রোডে জামাত হওয়ার কথা থাকলেও শেষে কমিউনিটি হলে এই সুযোগ পাওয়া যায়।

পুরুষদের পাশাপাশি মেয়েরাও জামাতে নামাজ পড়তে পেরে খুশি আল-আমিন মিশন কর্তা দিলদার হোসেন। তিনি বলেন, ‘সপরিবারে নামাজ পড়তে পারছি বলে ঈদের খুশি ডাবল হয়ে গেল।’ মুম্বাইয়ের দম্পতি জাকির হোসেন মোল্লা ও সাইমা মোল্লাদের জন্য এই প্রথম পাশাপাশি মেয়ে-পুরুষের জামাতে নামাজ পড়ার অভিজ্ঞতা।

নিউ টাউনে লুৎফুল আলম, সৈয়দ হুমায়ুন সিরাজ, আবু সাঈদরা যখন ঈদের নামাজ পড়ছেন- আনন্দে শরিক হয়েছেন সমীর গুপ্ত, বৈজয়ন্তী বাউড়, দীপক বিশ্বাসেরাও। সমীরের কথায়, ‘ঈদের নামাজ এত কাছ থেকে এই প্রথম দেখলাম।’

নামাজ শেষে সেমাই-ফিরনিতে হালকা মিষ্টিমুখের আনন্দ থেকেও মুসলিম, অমুসলিম কেউ বাদ পড়লেন না।

সূত্র : আনন্দবাজার

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment