কী ছিল প্রশ্নটি ?
ঠিক কী কারণে যে রাশিয়ার ইয়ামাল এলাকার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সাংবাদিক অ্যালিসা ইয়ারাভস্কিয়ার চাকরি গেল সেটা পরিষ্কার নয়। তবে আর যাই হোক, রাশিয়ান কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহি করার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা যে কতটা কঠিন একটি কাজ এই ঘটনায় তারই চিত্র পাওয়া যায়।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রতি বছর বড় করে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তার বক্তব্য শোনার পর তাকে নানা বিষয়ে প্রশ্ন করার জন্যে সাংবাদিকদের ডাকা হয়। সংবাদ সম্মেলন মানেই সেখানে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করবেন এবং যারা সেটি আয়োজন করেছেন তারা উত্তর দেবেন সাধারণত সেরকমই হয়ে থাকে। কিন্তু প্রশ্ন করার জন্য চাকরি হারালেন একজন টেলিভিশন সাংবাদিক। খবর বিবিসি বাংলা’র
কী ছিল প্রশ্নটি ?
রাশিয়ার ইয়ামাল এলাকার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সাংবাদিক অ্যালিসা ইয়ারাভস্কিয়া প্রেসিডেন্ট পুতিনের বাৎসরিক সংবাদ সম্মেলনে গিয়েছিলেন। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে সেখানে প্রশ্ন-উত্তর পর্ব। এরকম সময় মাইক হাতে পেলেন অ্যালিসা ইয়ারাভস্কিয়া। যদিও মাইক্রোফোনটি যাওয়ার কথা ছিল একই চ্যানেলের অন্য এক সাংবাদিকের কাছে, যিনি রেল যোগাযোগের বিষয়ে একটি পৃথক প্রশ্ন উত্থাপন করবে বলে আগে থেকেই ঠিক করা ছিল।
ইয়ারাভস্কিয়া বলেন, “বৈশ্বিক উষ্ণতা ইয়ামাল এলাকার জন্য বড় ধরণের সৌভাগ্য বয়ে আনছে। এর ফলে আর্কটিক সাগরের বরফ গলে যাচ্ছে আর তাতে স্থানীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু একটি সেতু যেখানে স্থানীয় দুটি শহরকে সংযোগ করতে বিরাট ভূমিকা রাখবে সেটাকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার ব্যাপারে আমাদের গভর্নর দিমিত্রি আর্টকিউখভের কোন প্রয়াসই দেখছি না।” তিনি বলেন, ‘আমরা শুনতে পেরেছি এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।’ তাই আমার প্রশ্ন বিষয়টি নিয়ে বড়সড় উদ্যোগ নেওয়া হবে কিনা।
উত্তরে পুতিন বলেন, ব্রিজটি আঞ্চলিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল হিসেবে কাজ করবে। তাই এর দিকে বাড়তি নজর দেওয়া হবে।
যে কারণে চাকরি হারাতে হলো:
ঠিক কী কারণে যে ঐ টিভি সাংবাদিকের চাকরি গেল তা পরিষ্কার নয়। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এই প্রশ্নে নাখোশ হয়েছেন ইয়ামাল অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ। আর তিনি যে প্রশ্ন করেছেন তা অন্য আরেকজনের সেই প্রশ্ন করার কথা ছিল। তাকে মাইক্রোফোন না দিয়ে তিনি প্রশ্ন করা শুরু করেন। এছাড়া যে চ্যানেলে তিনি কাজ করেন সেটির মালিকও স্থানীয় প্রশাসন।
অন্যদিকে আরেক রিপোর্টে বলা হয়েছে, সংবাদ সম্মেলনে তোলা পুতিনের একটি ছবি অ্যালিসা ফেসবুকে পোষ্ট করেছিলেন। যাতে তিনি প্রেসিডেন্টকে কেমন দেখাচ্ছিল সে নিয়ে মন্তব্য করেছেন।
পৃথকভাবে, ইয়ারাভস্কিয়া রাশিয়ার বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন যে, বরখাস্ত হওয়ার চেয়ে পদত্যাগ কোরাটাকেই তার কাছে উত্তম বলে মনে হওয়ায় তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে এই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত তার প্রশ্নের সাথে জড়িত কিনা এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান।
মঙ্গলবার ইজভেস্টিয়া ওয়েবসাইটে মিঃ পুতিনের মুখপাত্র বলেছেন যে ইয়ারাভস্কিয়ার চলে যাওয়ার কারণ জানা যায়নি – তিনি পদত্যাগ করেছেন বা বরখাস্ত হয়েছেন। যদিও বরখাস্তের সিদ্ধান্তটা সম্পূর্ণই নির্ভর করে চ্যানেলের সম্পাদকদের উপর।