‘নির্বাচনে কারচুপি’ করায় সু চিসহ নেতাদের আটক: সেনাবাহিনী
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে। জরুরি অবস্থা জারি করে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
সোমবার সকালে সেনাবাহিনীর মালিকানাধীন টেলিভিশনে এক ভিডিও ভাষণে সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইং এই ঘোষণা দিয়েছেন।
ভাষণে দাবি করা হয়, গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে কারচুপির জবাবে সরকারের জ্যেষ্ঠ নেতাদের তারা আটক করা হয়েছে।
এর আগে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) মুখপাত্র মিও নয়েন্ট বলেছেন, এনএলডি প্রধান স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি এবং দেশের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ কয়েকজন নেতাকে আটক করা হয়েছে।
তবে তিনি বলেন, ‘আমি জনগণকে বেপরোয়া কিছু না করার অনুরোধ করছি। আমি চাই তারা আইন মেনে চলবে।’
গত বছর নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সু চির এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু সেনাবাহিনী নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তোলে।
গত ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে এনএলডি ৮৩ শতাংশ আসন পায় যাকে সু চির বেসামরিক সরকারের প্রতি সর্বসাধারণের অনুমোদন হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
গত ২০১১ সালে সামরিক শাসন শেষ হওয়ার পর এটি দ্বিতীয়বার নির্বাচন ছিল মাত্র।
তবে সামরিক বাহিনী নির্বাচনের ফলকে বাধাগ্রস্ত করেছে। তারা সুপ্রিম কোর্টে দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং ইলেক্টোরাল কমিশনের প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে।
সম্প্রতি সামরিক বাহিনী নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলার পর থেকে সামরিক অভ্যুত্থানের শঙ্কা দেখা দিয়েছিল।
মিয়ানমার বার্মা নামেও পরিচিত যা ২০১১ পর্যন্ত শাসন করেছে সামরিক বাহিনী। সু চি অনেক বছর ধরে গৃহবন্দী ছিলেন।
সোমবার নবনির্বাচিত সংসদের প্রথম বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেনাবাহিনী অধিবেশন স্থগিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।
এদিকে জরুরি অবস্থা জারির পর রাজধানী নেইপিদো এবং প্রধান শহর ইয়ানগনের রাস্তায় সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে। প্রধান প্রধান শহরগুলোতে মোবাইল ইন্টারনেট এবং কিছু টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম এমআরটিভি জানিয়েছে, তারা কিছু কারিগরি সমস্যার মুখে পড়েছে এবং তাদের সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে।
গত সপ্তাহ সামরিক বাহিনী সংবিধান মেনে চলার অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছে তার পরও এটাকে পুরো মাত্রায় সামরিক অভ্যুত্থান বলেই মনে হচ্ছে। এক দশকেরও বেশি সময় আগে সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল।❐