বাংলাদেশের পুলিশ হাসপাতালে প্লাজমা থেরাপিতে বিস্ময়কর সাফল্য
বাংলাদেশে আড়াই হাজারেরও বেশি পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে।
সম্প্রতি রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আক্রান্ত এক পুলিশকে প্লাজমা থেরাপি দিয়ে সাফল্য পেয়েছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালটির চিকিৎসকরা বলছেন, প্লাজমা থেরাপি দেওয়া দুই জনের মধ্যে এক রোগীর বিস্ময়কর উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। অক্সিজেন গ্রহণের ক্ষমতা একদিনেই বেড়েছে ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত।
প্লাজমা থেরাপির এই বিস্ময়কর সাফল্যকে কাজে লাগাতে চান তারা। চিকিৎসাধীন অন্য ক্রিটিক্যাল রোগীদের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গতকাল ১৮ মে সোমবার রাতে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মনোয়ার হাসানাত জানান, তারা দুদিন আগে দুই রোগীর জন্য প্লাজমা থেরাপির ব্যবস্থা করেন। এর মধ্যে করোনা ছাড়াও অন্যান্য রোগের কারণে খুবই ক্রিটিক্যাল স্টেজে থাকা এক এসবি সদস্য ছিলেন। প্লাজমা থেরাপিতে তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়ে আবার ফল করে। তার কার্ডিয়াক ও পেডিয়াট্রিক সমস্যা ছিল। পরে গতকাল মারা তিনি যান। কিন্তু অন্য এক রোগীর ক্ষেত্রে বিস্ময়কর সাফল্য পেয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ডিএমপির অপর এক সদস্যকে আমরা প্লাজমা থেরাপি দিয়েছি গত পরশু। এই থেরাপির কারণে তার ভেন্টিলেশন ডিমান্ড অনেক কমে গেছে। অর্থাৎ ভেন্টিলেটর ছাড়াই তার অক্সিজেন গ্রহণের ক্ষমতা বেড়েছে ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত’।
ডা. মনোয়ার হাসানাত খান বলেন, ‘আমরা যথাসম্ভব দুই-এক দিনের মধ্যেই পুলিশ হাসপাতালে রক্ত থেকে প্লাজমা সংগ্রহ শুরু করতে যাচ্ছি। এই সাফল্যকে আমরা কাজে লাগাতে চাই।’
উল্লেখ্য, মানুষের রক্তের জলীয় অংশকে বলা হয় প্লাজমা। রক্তে প্লাজমা থাকে ৫৫ ভাগ। করোনাজয়ীর অ্যান্টিবডি থাকে রক্তের প্লাজমায়।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, করোনায় সংক্রমিত হওয়ার পর যারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন, তাদের প্রত্যেকের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। অর্থাৎ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। করোনাজয়ী ব্যক্তির দেহে তৈরি অ্যান্টিবডি যদি করোনায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া ব্যক্তির শরীরে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
সুস্থ ব্যক্তির দেহ থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে তা করোনায় সংক্রমিত অসুস্থ ব্যক্তির শরীরে প্রয়োগ করা হয় বলে এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে বলা হচ্ছে ‘প্লাজমা থেরাপি’। ⛘