ভারতে দোকান খোলা রাখায় পুলিশ হেফাজতে অকথ্য যৌন নির্যাতনে পিতাপুত্রের মৃত্যু
দক্ষিণ ভারতের তামিলনাডুতে একজন প্রৌঢ় দোকানদার ও তার ছেলেকে পুলিশ হেফাজতে অকথ্য যৌন নির্যাতন করে পিটিয়ে মারার ঘটনায় সারা দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে।
বিবিসি জানিয়েছে, লকডাউনে নির্ধারিত সময়ের পরেও নিজেদের মোবাইল ফোনের দোকান খোলা রাখার ‘অপরাধে’ ৬২ বছর বয়সী পি জেয়রাজ ও তার ছেলে জে বেনিক্সকে পিটিয়ে মারা হয়।
৬২ বছর বয়সী পি জেয়রাজ ও তার ছেলে জে বেনিক্সের একমাত্র অপরাধ ছিল তারা করোনাভাইরাস লকডাউনে নির্ধারিত সময়ের পরেও নিজেদের মোবাইল ফোনের দোকান খুলে রেখেছিলেন।
মাদ্রাজ হাইকোর্ট এখন এই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে খুনের তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচও তাদের কঠোরতম শাস্তি দাবি করছে।
খবরে বলা হয়, তামিলনাডুর তুতিকোরিন শহরের কাছে সাথানকুলামের বাজারে একটি ছোটখাটো মোবাইল ফোনের দোকান চালাতেন পি জেয়রাজ।
লকডাউনের সময় পুলিশের বাড়াবাড়ি নিয়ে তার একটি মন্তব্য স্থানীয় এক অটোচালক পুলিশকে জানিয়েছিল, পরদিন ১৯ জুন সন্ধ্যায় পুলিশ এসে তাকে দোকান থেকে তুলে নিয়ে যায়।
অভিযোগ করা হয়, তিনি সন্ধ্যাবেলা নির্ধারিত সময়ের পরও নাকি দোকান খুলে রেখেছিলেন।
Horrific. In India, police detained Jayaraj, 60, & his son Fenix, 31, when they kept their mobile phone shop open longer than allowed under Covid-19 lockdown rules. 4 days later, both were dead, after police beat and sexually assaulted father & son. https://t.co/T1Y3jWWhEn pic.twitter.com/pCNxoZnOgd
— Elaine Pearson (@PearsonElaine) June 30, 2020
বাবাকে আটক করার খবর পেয়ে তার ছেলে জে বেনিক্স (৩২) থানায় ছুটে গেলে দেখতে পান, সেখানে তাকে প্রচন্ড মারধর করা হচ্ছে।
তিনি বাধা দিতে গেলে তাকেও পুলিশ লকআপে ঢুকিয়ে নেয় এবং পরবর্তী কয়েক ঘন্টা ধরে দুজনের ওপর চলে পাশবিক অত্যাচার ও নির্যাতন।
ঠিক চারদিন পর জেয়রাজ ও বেনিক্সের লাশ পায় তার পরিবার।
২৩শে জুন জেয়রাজ ও বেনিক্সের মৃতদেহ পাওয়ার পর দেখা যায়, তাদের দুজনেরই যৌনাঙ্গ থেকে প্রবল রক্তক্ষরণ ও সারা শরীরে ব্যাপক মারধরের চিহ্ন স্পষ্ট।
পুলিশের হেফাজতে এই নির্মম হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে রাজ্যে প্রতিবাদ শুরু হয় প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই, যার রেশ এখন দিল্লিসহ সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে।
তামিলনাডুতে বিরোধী দল ডিএমকের সিনিয়র এমপি কানিমোরি বিবিসিকে বলেন, এটা আসলে একটা খুন- পুলিশের হাতে ঠান্ডা মাথায় খুন। সেভাবেই এর তদন্ত করতে হবে।
অভিযুক্ত চারজন পুলিশকর্মীকে প্রথমে সাসপেন্ড করা হলেও মাদ্রাজ হাইকোর্টের মাদুরাই বেঞ্চ গতকাল তাদের বিরুদ্ধে খুনের তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচও তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করছে।
বিবিসি