মণিপুরের ইউএনএলএফ ও ভারত সরকারের মধ্যে শান্তি চুক্তি
সরকারের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছে মণিপুরের সবচেয়ে পুরনো সশস্ত্র গোষ্ঠী ইউনাটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (ইউএনএলএফ)। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে মণিপুরের এ শান্তি চুক্তিকে ঐতিহাসিক মাইলফলক বলে আখ্যায়িত করেছেন।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই শান্তি চুক্তি ঘোষণার খবর প্রকাশিত হয়েছে। এতে জানা যায়, চুক্তির বিষয়টি এক্সে পোস্ট করে অমিত শাহ বলেন,’ ইউএনএলএফের সঙ্গে আজ সরকারের শান্তি চুক্তি হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারতের কেন্দ্রীয় ও মণিপুর সরকার ৬ দশকের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের একটি অধ্যায়ের অবসান দেখল।’
অমিত শাহ আরও বলেন, ‘ইউএনএলএফ মণিপুরভিত্তিক প্রাচীনতম সশস্ত্র গোষ্ঠী। তারা সহিংসতার পথ পরিত্যাগ করে মূলধারায় যোগ দিতে সম্মত হয়েছে। আমি তাদের গণতান্ত্রিক ধারায় স্বাগত জানাই এবং শান্তি ও অগ্রগতির পথে তাদের যাত্রায় মঙ্গল কামনা করি।’
এক্সে তার শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, শান্তি চুক্তির পর ইউএনএলএফ এর সদস্যরা অস্ত্র জমা দিচ্ছেন। পরে ইউএনএলএফ-এর চেয়ারম্যান লামজিংবা খুন্দংবাম সংবাদমাধ্যম এএনআইকে বলেন, ‘আমরা আজ ভারত সরকারের সাথে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি।’
গত ৩ মে মণিপুরে জাতিগত সহিংসতা শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো মণিপুর থেকে বড় কোনো শান্তির খবর এলো। গত ১৩ নভেম্বর দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের অধীনে আটটি মেইতেই চরমপন্থী সংগঠনের ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়েছিল এবং তাদের ‘বেআইনি সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল। এই নিষিদ্ধ গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ইউএনএলএফও ছিল।
এবছরের মে মাসের শুরু থেকে কুকি ও নাগা সম্প্রদায়ের সঙ্গে মেইতেই সম্প্রদায়ের বিরোধ চলছে। সংঘর্ষের জেরে এ পর্যন্ত ১৮০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন শত শত মানুষ। ঘরছাড়া হয়েছেন অনেকে। যদিও এনডিটিভি বলছে, ইউএনএলএফের এই শান্তি চুক্তি আসলে মণিপুরে চলমান সহিংসতার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত নয়, এমনটাই মনে করেন ভারতীয় সামরিক বিশেষজ্ঞরা। তবে নানামুখী সহিংসতায় জর্জরিত মণিপুরের জন্য এটি বড় খবর।