মহাকাশে প্রাণের খোঁজ! মঙ্গলগ্রহে সফল অবতরণ
মঙ্গলপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে নাসার মহাকাশযান পারসিভিয়ারেন্স। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা থেকে উৎক্ষেপণের ছয় মাস পর এটি মঙ্গলগ্রহে পৌঁছায়। এটি মূলত মহাকাশচারী রোভার রোবট বহনকারী একটি মহাকাশযান।
বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর ২টা ৫৫ মিনিটে (বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর) মঙ্গলগ্রহ থেকে টুইট করে নিজের সফল অবতরণের তথ্য নিশ্চিত করে এই মহাকাশচারী রোবট ‘পারসিভিয়ারেন্স’।
মার্কিন বার্তাসংস্থা সিএনএন জানায়, লোহিত বর্ণের গ্রহ মঙ্গলে পৌঁছানোর পর এর প্রায় ৪০০ কোটি বছর আগে শুঁকিয়ে যাওয়া একটি লেক থেকে শিলাপাথর, মাটি সংগ্রহের পাশাপাশি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণুজীবের উপস্থিতির খোঁজ শুরু করবে পারসিভিয়ারেন্স।
বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, ৩ থেকে ৪ বিলিয়ন বছর আগে এই স্থানে পানির অস্তিত্ব ছিল এবং এখানেই অণুজীবের উৎপত্তি হয়। জেজেরো ক্রেটার নামক এই গিরিখাত থেকে এরই মধ্যে ছবি পাঠাতে শুরু করেছে রোভারটি।
এছাড়াও এটি সঙ্গে করে নিয়ে গেছে একটি ক্ষুদ্র হেলিকপ্টার, ‘ইনজেনুইনিটি’। সৌরবিদ্যুৎচালিত এই হেলিকপ্টারটি ১০ দিন ধরে সূর্যের আলোয় পুরোপুরি চার্জ হওয়ার পর রোভার থেকে উড্ডয়ন করবে। এরপর এটি চার্জ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত ২০ সেকেন্ড ধরে মঙ্গলপৃষ্ঠের ওপর উড়বে এবং প্রাণের অস্তিত্বের খুঁজতে পারসিভিয়ারেন্সকে সাহায্য করবে।
ছবি তোলার পাশাপাশি শব্দ রেকর্ড করে পৃথিবীতে অডিও ও লিখিত বার্তা পাঠাতেও সক্ষম এই রোবট। ২০৩০ সাল পর্যন্ত এই মহাকাশচারী রোভার মঙ্গলপৃষ্ঠে নজরদারি চালাবে। এরপর মঙ্গলগ্রহের আবহাওয়া ও ভূতাত্ত্বিক তথ্য নিয়ে ফিরে আসবে পৃথিবীতে। পারসিভিয়ারেন্সের পাঠানো সব তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে মঙ্গলগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আদৌ ছিল কি না বা এখানে মানুষের বসবাস সম্ভব কি না সেটিও জানা যাবে।
১৯৭৬ সালে প্রথম মঙ্গলগ্রহে মহাকাশযান পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে এবার বিশ্বের সর্বাধুনিক গবেষণা প্রযুক্তি নিয়ে মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের খোঁজে অভিযান শুরু করলো নাসা। এ অভিযানের সফলতার ওপর ভিত্তি করেই মঙ্গলগ্রহে প্রথম মানুষবাহী মহাকাশযান পাঠাবে বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।❐