মহানবীকে কটুক্তির জেরেই কাবুলে শিখ মন্দিরে হামলা: আইএস
মহানবী হযরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেত্রী নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরেই কাবুলের গুরুদ্বারে জঙ্গি হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করল আইএস গোষ্ঠী।
আফগানিস্তানের একটি গুরুদ্বারে শনিবার গ্রেনেড আর মেশিনগান নিয়ে হামলা চালায় জঙ্গিরা। সেই হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস। সেই সঙ্গে জানিয়েছে, এই হামলা আদতে নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতি তাদের জবাব।
আইএস সংগঠন তাদের প্রচারমূলক ওয়েবসাইট ‘আমাক’-এ ওই হামলা কারণ ব্যাখ্যা করেছে। তারা লিখেছে, ‘শনিবারের হামলার লক্ষ্য ছিলেন, হিন্দু, শিখ ধর্মাবলম্বী এবং সেই সব বিধর্মীরা, যারা প্রথম দুই শ্রেণিকে রক্ষা করে চলেন।’ আইএস জানিয়েছে, ‘নবীর প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশের’ জন্যই এই হামলা করা হয়েছে।
বিজেপি নেত্রী নূপুরের মন্তব্যের জেরে বিতর্ক ক্রমশ ভারত থেকে অন্য দেশেও ছড়িয়ে পড়েছিল। এবার ওই মন্তব্যকেই কাবুলের গুরুদ্বারে হামলা চালানোর কারণ হিসেবে ব্যক্ত করেছে আইএস জঙ্গিরা।
কী ভাবে হামলা হয়েছে, তার বিশদ জানানো হয়েছে ওই ওয়েবসাইটে। আইএস লিখেছে, তাদের এক যোদ্ধা ‘কাবুলের হিন্দু এবং শিখদের ধর্মীয় স্থানে রক্ষীদের হত্যা করে ভিতরে ঢুকে পড়ে। একের পর এক গ্রেনেড হামলা চালায়। মেশিনগানও ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট স্থানে গুলি চালায়।’
শনিবারের ওই হামলায় দুজনের মৃত্যু হয় কাবুলের ওই গুরুদ্বারে। গুরুতর আহত হন ৭ জন।
গত ২৬ মে এক টেলিভিশন বিতর্কে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) তৎকালীন মুখপাত্র নূপুর শর্মা। বিজেপির দিল্লি শাখার তৎকালীন গণমাধ্যম প্রধান নবীন কুমার জিন্দালও টুইটারে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। ওই মন্তব্য নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য এবং বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠলে নূপুর ও জিন্দালকে বহিষ্কার করে বিজেপি।
আফগানিস্তানে ১৯৭০–এর দশকে প্রায় ৫ লাখ শিখ বসবাস করলেও বর্তমানে তা কমে ২০০ জনে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় নারী, শিশুসহ অনেক শিখ ধর্মাবলম্বী গুরুদুয়ারায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। গতকাল সেখানে হামলা হয়।
ভারতীয় প্রতিনিধিদলের কাবুল সফরের পরপরই এ হামলা হলো। ভারত থেকে আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা বিতরণ নিয়ে আলোচনা করতে আফগানিস্তান সফরে যায় ভারতীয় প্রতিনিধিদল। আফগানিস্তানে নতুন করে ভারতীয় দূতাবাস খোলার ব্যাপারে কথা বলেছে প্রতিনিধিদলটি। গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর ভারতীয় দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়।