যমুনায় নিয়মিত বন্যা হলে তাজমহলের ঝুঁকি বাড়বে
এবার বিধ্বংসী বন্যা দেখছে উত্তর ভারত। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এই বন্যা তাজমহলকে ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে। জলবায়ু সংকটজনিত চরম আবহাওয়ায় এ ধরনের বন্যা নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠতে পারে। খবর সিএনএন।
গতকাল মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, যমুনার পানি স্মৃতিস্তম্ভ ও প্রধান পর্যটন আকর্ষণের প্রাচীরের কাছে চলে এসেছে। উপচে পড়ছে নদীর বাধ।
তাজমহলের পেছনের একটি বাগানও প্লাবিত হয়েছে। তবে ঐতিহ্যবাহী স্থানটির রক্ষণাবেক্ষণকারী আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই) বলছে, তাজমহল বর্তমানে বন্যার হুমকিতে নেই।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কমপ্লেক্সের বাইরের দেয়ালে বন্যার পানি পৌঁছানো বিরল একটি ঘটনা।
১৭ শতকে উত্তর প্রদেশের আগ্রায় স্ত্রী মমতাজ মহলের স্মরণে তাজমহাল নির্মাণ করেন মুঘল সম্রাট শাহজাহান। প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক এ স্মৃতি স্মারক পরিদর্শন করেন।
বর্ষা মৌসুমে জুন থেকে সেপ্টেম্বর ভারতে প্লাবন নিয়মিত ঘটনা। কিন্তু জলবায়ুর পরিবর্তন এর তীব্রতা ক্রমশ বাড়িয়ে তুলছে। একই সময়ে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন অঞ্চল, আবার কিছু অঞ্চলে দেখা যাচ্ছে প্রয়োজনীয় বৃষ্টির ঘাটতি।
গঙ্গার উপনদী যমুনার প্রবাহ গত সপ্তাহে রেকর্ড সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। এবারের বন্যায় উত্তরের রাজ্যগুলোতে কয়েকশ’ মানুষ মারা গেছে। হাজার হাজার বাসিন্দাকে বাড়ি-ঘর থেকে সরিয়ে নিতে হয়েছে।
হিমালয়ের উৎসস্থল থেকে প্রায় ৮৫৫ মাইল দক্ষিণে বিভিন্ন রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে যমুনা। গত ১৩ জুলাই পানির স্তর ছিল ২০৮ দশমিক ৫৭। ৪৫ বছরের মধ্যে রেকর্ড এ প্রবাহে ভেসে যায় রাজধানী দিল্লির অনেক এলাকা।
বিরামহীন ভারী বৃষ্টিপাত ও ব্যারেজ থেকে পানি ছাড়ার কারণে আগ্রাসহ উত্তর ভারতের বেশ কয়েকটি অংশ আগামী সপ্তাহে বন্যার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিজ্ঞানীরা অনেক দিন ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করে আসছেন। এ কারণে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপ ও রেকর্ড বৃষ্টিপাতের ফলে এশিয়ার বেশিরভাগ অংশ জুড়ে মারাত্মক বন্যা ও ভূমিধস দেখা যাচ্ছে।
এমনিতেই বছরের পর বছর বায়ু দূষণ, পোকামাকড় ও পর্যটকদের ভিড় সহ্য করে আসছে তাজমহল। যা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ সমাধি সৌধ। এর বাইরের অংশ হলুদ-সবুজ হয়ে গেছে।
সাম্প্রতিক তাপপ্রবাহ ও বৃষ্টির কারণে কয়েক ডজন বিশ্ব ঐতিহ্য বন্যা ও ক্ষয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে। চীনের সিল্ক রোডের চতুর্থ শতাব্দির প্রাচীন বৌদ্ধ গুহার ম্যুরাল ও মূর্তি প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে ‘সরাসরি হুমকির’ মধ্যে রয়েছে। ভারী বর্ষণে দক্ষিণ কোরিয়ার কয়েক ডজন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বরে জানিয়েছে দেশটির সংস্কৃতি বিষয়ক কর্মকর্তারা।