রাজধানীতে দুই সিটি করপোরেশনে চলছে ভোট গ্রহণ
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে।
শনিবার সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোট একটানা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এবারই প্রথম ঢাকার দুই সিটিতে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে মেয়র পদের প্রার্থীরা লড়ছেন দলীয় প্রতীকে। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারে পিছিয়ে ছিলেন না সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। তাদের প্রচারেও মুখ্য ভূমিকায় ছিল দলীয় পরিচয়। ফলে স্থানীয় সরকারের উন্নয়ন কিংবা নাগরিক সেবার বিষয়টি ছাপিয়ে পুরোপুরি রাজনৈতিক রূপ পেয়েছে এবারের ভোটের লড়াই।
ঢাকার দুই সিটিতে এবার ভোটার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫৪ লাখ। শুক্রবার কঠোর নিরাপত্তায় কেন্দ্রে কেন্দ্রে সরঞ্জাম পাঠানো হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রগুলোতে মক ভোট অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচন কমিশন বলছে, ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়া এবং বাড়ি ফেরার বিষয়ে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে অতীতে নানা অনিয়মের অভিযোগ থেকে রেহাই পেতেই ইভিএমে ভোটের আয়োজন করা হয়েছে।
দুই সিটির মেয়র পদে ইসির নিবন্ধিত ৯টি রাজনৈতিক দলের ১৩ জন প্রার্থী লড়াইয়ে রয়েছেন। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীরা। উত্তরে ৬ জন এবং দক্ষিণে ৭ জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উত্তর সিটির ৬ মেয়র প্রার্থী হলেন- আওয়ামী লীগের মো. আতিকুল ইসলাম (নৌকা), বিএনপির তাবিথ আউয়াল (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শেখ মো. ফজলে বারী মাসউদ (হাতপাখা), পিডিপির শাহীন খান (বাঘ), এনপিপির আনিসুর রহমান দেওয়ান (আম) ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির আহম্মেদ সাজ্জাদুল হক (কাস্তে)। এই সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ৫৪টি পদে ২৫১ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ১৮টি পদে ৭৭ জন লড়ছেন।
দক্ষিণে মেয়র পদে সাত প্রার্থী হলেন- আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস (নৌকা), বিএনপির ইশরাক হোসেন (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলনের মো. আবদুর রহমান (হাতপাখা), এনপিপির বাহরানে সুলতান বাহার (আম), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আকতার উজ্জামান ওরফে আয়াতুল্লা (ডাব) ও গণফ্রন্টের আব্দুস সামাদ সুজন (মাছ)। দক্ষিণ সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ৭৫টি পদে ৩২৭ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ২৫টি পদে ৮২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উত্তর সিটিতে (ডিএনসিসি) ৫৪টি ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩০ লাখ দশ হাজার ২৭৩ জন। দক্ষিণ সিটিতে (ডিএসসিসি) ৭৫ ওয়ার্ডে ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ ভোটার।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটির এক হাজার ১৫০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭২১টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ (ঝূঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, এগুলোতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি এই কেন্দ্রগুলোকে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটির এক হাজার ৩১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮৭৬টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ (ঝূঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করে এসব কেন্দ্রকেও বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকার দুই সিটিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময়ে ঢাকা উত্তরে ৩৬টি ও দক্ষিণ সিটিতে ৫৭টি ওয়ার্ড ছিল। এরপর অবশ্য ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং দুই সিটির ১৮টি করে মোট ৩৬টি সম্প্রসারিত ওয়ার্ডেও ভোট হয় গত বছর। এবার সম্প্রসারিত এলাকাসহ পুরো করপোরেশনে ভোট হচ্ছে। ফলে গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ভোটার ও কেন্দ্র সংখ্যা।