সংকটের মধ্যেই ডলারের দাম আরও ২৫ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত
দেশে ডলার সংকট এখনও চলমান। ডলার সংকটের কারণে চাহিদামতো এলসি খুলতে পারছে না ব্যবসায়ীরা। তারপরও ডলারের দাম কমাচ্ছে ব্যাংকগুলো। এর আগে গত ২২ নভেম্বর সবক্ষেত্রে ডলারের দাম ৫০ পয়সা কমানোর পর দ্বিতীয় দফায় আরও ২৫ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আগামী রোববার থেকে প্রবাসী ও রপ্তানি আয় ও ডলার ক্রয়ে দাম কমবে ২৫ পয়সা।
বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কিনতে ডলারের দাম হবে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা, আগে যা ছিল ১১০ টাকা। আর আমদানি দায় মেটাতে ডলারের দাম নেওয়া যাবে ১১০ টাকা ২৫ পয়সা, যা আগে ছিল ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। তবে প্রবাসী আয়ে সরকারের ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি ব্যাংকও একই পরিমাণ প্রণোদনা দিতে পারবে। ফলে প্রবাসী আয় পাঠালে ডলারপ্রতি সর্বোচ্চ ১১৪ টাকা ৭৫ পয়সা পাবেন উপকারভোগীরা।
এবিবি ও বাফেদার এ রকম সিদ্ধান্তে প্রবাসী আয় কমে যাচ্ছে বলে জানান ব্যাংকাররা। তারা বলেন, বর্তমানে যে পদ্ধতিতে ডলারের দাম বাড়তে না দিয়ে স্থানীয় মুদ্রা টাকাকে শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তার প্রভাব পড়েছে প্রবাসী আয়ে। ইচ্ছামতো প্রণোদনা দেয়ার সুযোগ অনেক ব্যাংক কাজে লাগিয়েছে। তাই শুরুতে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছিল। এখন কড়াকড়ি করার পাশাপাশি ডলারের দর কমায় শেষ দিকে রেমিট্যান্স বৈধ পথে আসছে না। তাই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে। এবিবি ও বাফেদার এমন অদ্ভুত সিদ্ধান্তের ফলে পরবর্তীকালে রেমিট্যান্স আরও কমবে শঙ্কা তাদের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ৮৩৯ মিলিয়ন ডলার। পরবর্তী ১৪ দিনে এসেছে ৬৮৯ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ প্রথম দিকে রেমিট্যান্স আসার যে প্রবাহ ছিল, তা শেষ দিকে এসে কমে যাচ্ছে।
জানা যায়, ডলারের জোগান ও চাহিদার ওপর নির্ভর করে সময়ে সময়ে এই সংগঠন দুটি ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করে আসছে। এ দুটি সংগঠন মূলত বাণিজ্যিক ব্যাংক–সংশ্লিষ্ট। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে তারা সময়ে সময়ে ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করছে। তবে এ দুই সংগঠন ডলারের দর নির্ধারণের দায়িত্ব নেওয়ার পর মার্কিন এই মুদ্রার দাম আগের তুলনায় কখনও কমানো হয়নি। তবে এক সপ্তাহের ব্যবধানেই দুইবার কমানো হয়েছে।
এক ব্যাংকার জানান, ধারাবাহিকভাবে টাকার বিপরীতে ডলারের দর বাড়ানোর ফলে আরও বাড়বে এমন আশায় অনেকেই ডলার ধরে রেখেছে। এ কারণে ডলারের চরম সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজের ডলার দেশে আনতে এমন কৌশল নেওয়া হয়েছে।