হেফাজতের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকারের নেতা, মন্ত্রী, এমনকি কোনো কোনো মিডিয়া প্রচার করছে হেফাজতকে বিএনপি ইন্ধন দিচ্ছে, কর্মসূচি পালনে সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু হেফাজতের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই’।
মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে অবৈধ সরকারের পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে মানুষের হত্যার প্রতিবাদে আমরা কর্মসূচি পালন করেছি। সরকার প্রচার চালাচ্ছে, আমরা হেফাজতকে সমর্থন দিয়েছি। উসকানি তো দিয়েছে সরকার।’
তিনি বলেন, ‘হেফাজত কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়। তারা বায়তুল মোকাররমে সাধারণ একটি বিক্ষোভ করতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও পুলিশ তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। গণমাধ্যমে ছবিও এসেছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের এক নেতা গুলি করছে। এই যে মানুষের ওপর আঘাত এসেছে, আমরা তার প্রতিবাদ করেছি। আমাদের হিসাবে গত কয়েক দিনে ১৫ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।’
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণ দেখছি না। সরকারের উদ্যোগটা কোথায়? অথচ আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর কর্মসূচি আগেই স্থগিত করেছি। বর্তমানে সাধারণ মানুষের ওপরে হামলার কারণে রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে বাধ্য হয়েছি।’
ফখরুল বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি, করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। অল্প বয়সীরা আক্রান্ত হয়েছে। ঠিকমতো করোনার টেস্ট হচ্ছে না। আমার ধারণা ১০ শতাংশও করোনা টেস্ট হচ্ছে না। সরকার কখনো করোনার বিষয়টি সঠিকভাবে উপলব্ধি করেনি। সুবর্ণজয়ন্তীর যে উৎসব তার আগেই স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে সতর্ক করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, অবিলম্বে এসব বন্ধ করা দরকার। কিন্তু সরকার গত বছর মার্চেও উৎসব পালন বন্ধ করেনি। এবারও তারা উৎসব পালন বন্ধ করেনি। যখন তাদের বিদেশি মেহমান ও মহারথীরা চলে গেছেন, তখন করোনার বিষয়টি আবার সামনে এনেছে।’
সোম ও মঙ্গলবার বিএনপির কর্মসূচিতে আহত ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে তাদের মুক্তির দাবি জানান ফখরুল।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সভা-সমাবেশ করা মানুষের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু ভোটবিহীন সরকার তাদের অনৈতিক ও ফ্যাসিবাদী শাসনকে দীর্ঘায়িত করতে সভা-সমাবেশে গুলিবর্ষণ, হামলা, মামলা, গ্রেপ্তারসহ দমন, নিপীড়ন চালিয়ে রাজনীতির পথকেই সংকুচিত করে ফেলেছে।’
তিনি বলেন, ‘নওগাঁয় জেলা বিএনপির মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে ৫০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আহত করেছে। পুলিশের গুলিতে নওগাঁ জেলা মহিলাদল নেত্রী কহিনুর ইসলাম মিলি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, সহদফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান।❐