আল-শিফা ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ
গাজা সিটির বৃহত্তম হাসপাতাল আল-শিফায় ইসরায়েলি অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতালটি ছাড়তে শুরু করেছে লোকজন। বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে লোকজনকে হেঁটেই পালাতে দেখা গেছে।
এদিকে গাজার বৃহত্তম শরণার্থীশিবির জাবালিয়ায় জাতিসংঘ পরিচালিত আল-ফাখোরা স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে শিশুসহ ২৮ জন প্রাণ হারিয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শত শত রোগী এবং বেশির ভাগ চিকিৎসাকর্মী আল-শিফা হাসপাতাল ছেড়ে অনির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে রওনা হয়েছেন গতকাল।
হাসপাতালের পরিচালক বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী হাসপাতাল খালি করতে বলেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, পরিচালকের অনুরোধেই তারা লোকজনকে হাসপাতাল ছাড়তে সহায়তা করেছে। বার্তা সংস্থা এএফপির ছবিতে লোকজনকে আল-শিফা হাসপাতাল ছাড়তে দেখা গেছে।
এ সময় তাদের আশপাশে সামরিক বুলডোজার ও ট্যাংক দেখা গেছে। এএফপির সাংবাদিক জানিয়েছেন, গাজার উপকূলের দিকে যাচ্ছিল লোকজন। তাদের মধ্যে অসুস্থ ও আহত লোকজন ছিল। সাংবাদিক জিহাদ আবু শানাব বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী চেকপোস্ট বসিয়ে শুধু নারীদের দক্ষিণে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছিল। পুরুষদের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, আল-শিফা হাসপাতালে ১২০ জন রোগী এবং বেশ কয়েকটি নবজাতক রয়ে গেছে। ইসরায়েলি বাহিনী হাসপাতালের গণকবর থেকে শতাধিক মরদেহ উঠিয়ে নিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরে জাতিসংঘ পরিচালিত আল-ফাখোরা স্কুলে গতকাল শনিবার ভোরের দিকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে। কয়েক হাজার মানুষ ওই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিল।
তাদের মধ্যে একই পরিবারের ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় বলেছে, ওই ৩২ জনের মধ্যে ১৯টিই ছিল শিশু। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, তারা এ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
কিছু জ্বালানি এসেছে
জাতিসংঘ বলেছে, ইসরায়েল দৈনিক দুই দফা জ্বালানি তেল সরবরাহের অনুমতি দেওয়ার পর গতকাল দুপুরে কিছু জ্বালানি এসেছে, তবে আরো অনেক বেশি প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের চাপের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা বলেছিল, তারা দিনে দুটি জ্বালানিভরা ট্রাক গাজা উপত্যকায় প্রবেশের অনুমতি দেবে।
চিকিৎসার জন্য আমিরাতে ১৫ শিশু
জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন—গাজার এমন আহত ফিলিস্তিনি শিশুদের নিয়ে প্রথম ফ্লাইট গতকাল আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে অবতরণ করেছে। বিমানটিতে প্রায় ১৫টি শিশু এবং তাদের পরিবারের সদস্য ছিল। এরা মিসর সীমান্তের রাফাহ ক্রসিং ব্যবহার করে গাজা ছাড়ার পর আমিরাত পৌঁছল।
সংযুক্ত আরব আমিরাত আগামী কিছুদিনের মধ্যে গাজা থেকে প্রায় এক হাজার নারী ও শিশুকে সে দেশের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনার পরিকল্পনা করছে।
সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি