ইসরায়েলকে গাজায় শিশু হত্যা বন্ধের আহ্বান ফরাসি প্রেসিডেন্টের
গাজায় গত ৩৫ দিনের স্থল ও বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও নারী। জাতিসংঘ বলছে, গাজায় প্রতি ১০ মিনিটে একটি শিশু নিহত হচ্ছে। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা চলছে আন্তর্জাতিক মহলে। নারী ও শিশু হত্যা নিয়ে এবার মুখ খুললেন ইসরায়েলের মিত্র ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ‘ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজায় শিশু ও নারী হত্যা থামাতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট মাখোঁ।
গতকাল শুক্রবার ফরাসি প্রেসিডেন্টের বাসভবনে বিবিসির নেওয়া এ সাক্ষাৎকারে মাখোঁ বলেন, ‘বোমা হামলার কোনো যৌক্তিকতা নেই। যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ইসরায়েলের লাভ।’
ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষা করার অধিকার আছে উল্লেখ করে মাখোঁ বলেন, ‘আমরা তাদের গাজায় বোমা হামলা বন্ধ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’ তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ফ্রান্স স্পষ্টতই হামাসের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়।’
ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশের মতো ফ্রান্সও হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে চিহ্নিত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অন্য দেশের নেতারা যুদ্ধবিরতির আহ্বানে তাঁর সঙ্গে যুক্ত হোক—তা তিনি চান কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি আশা করি, তাঁরা যুক্ত হবেন।’
গাজায় হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল শুক্রবার বলেছে, ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১ হাজার ৭৮ জন। বাস্তুহারা হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ।
ইসরায়েল বলছে, তারা আন্তর্জাতিক আইন মেনেই সামরিক অভিযান চালাচ্ছে এবং বেসামরিক হতাহত কমানোর জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে। হামলার আগে সতর্কতা জারি করা হচ্ছে এবং জনগণকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে বলেও দাবি ইসরায়েলের।
এদিকে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে প্যারিসে আয়োজিত মানবিক সহায়তা সম্মেলনের পর মাখোঁ বলেন, ‘এ সম্মেলনে উপস্থিত সব সরকার ও সংস্থার স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, যুদ্ধবিরতি ছাড়া আর কোনো সমাধান নেই। মানবিক যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে কোনো যোগসূত্র নেই—এমন বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করা সম্ভব হবে।’
মাখোঁ বলেন, ‘বাস্তবে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বোমা হামলা চালানো হচ্ছে। শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের ওপর বোমা বর্ষণ করা হচ্ছে ও তাঁদের হত্যা করা হচ্ছে। এর কোনো কারণ নেই এবং এর কোনো বৈধতাও নেই। তাই আমরা ইসরায়েলকে থামার আহ্বান জানাচ্ছি।’
তবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হচ্ছে কি না তা বিচার করার দায় তাঁর নয় বলে উল্লেখ করেন মাখোঁ।