জাতিসংঘে ‘পানিতে ডুবে মৃত্যু রোধ’ বিষয়ক রেজুলেশন গৃহীত
পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ বিষয়ক ঐতিহাসিক এক রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করেছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ। সে অনুযায়ী ২৫ জুলাইকে ‘বিশ্ব ডুবে-মৃত্যু রোধ প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে গৃহীত এই রেজুলেশনটি উত্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। রেজুলেশনটিতে পানিতে ডুবে মৃত্যুকে একটি ‘নীরব মহামারি’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এধরনের রেজুলেশন এটাই প্রথম। নীরব এই বৈশ্বিক মহামারির বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে নিয়ে আসতে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন গত ২০১৮ সাল থেকে কাজ করে আসছে। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বাংলাদেশের পাশাপাশি রেজুলেশনটিতে সহ-নেতৃত্ব দেয় আয়ারল্যান্ড, এতে সহ-পৃষ্ঠপোষকতা করে ৮১টি দেশ।
পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি, জাতীয় পদক্ষেপকে উৎসাহিত করা এবং এ বিষয়ক সর্বোত্তম অনুশীলন ও সমাধানগুলো পারস্পরিকভাবে ভাগ করে নেওয়ার লক্ষ্যে ২৫ জুলাইকে ‘বিশ্ব ডুবে-মৃত্যু প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে সাধারণ পরিষদ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী বিশ্বে প্রতিবছর ২ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করছে।
রেজুলেশনটিতে পানিতে ডুবে-মৃত্যু রোধ পদক্ষেপটির সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস সম্পর্কিত বৈশ্বিক কাঠামোগুলোর সংযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে জাতিসংঘ গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার বেশ কয়েকটির অর্জনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এটি তাৎপর্যপূর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
রেজুলেশনটির অপারেটিভ অনুচ্ছেদে পানিতে ডুবে-মৃত্যু প্রতিরোধে জাতীয় ফোকাল পয়েন্ট নিয়োগ, জাতীয় প্রতিরোধ পরিকল্পনা ও কর্মসূচি উন্নয়ন, জাতীয় পর্যায়ে আইন প্রণয়ন, সচেতনতা তৈরি করা, আন্তর্জাতিক পদক্ষেপকে সহযোগিতা করা এবং এ বিষয়ক গবেষণা ও উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে সদস্য দেশগুলোকে উৎসাহিত করা হয়েছে।
জাতিসংঘে ৭৫ বছরের ইতিহাসে তুলে ধরা হয়নি এমন একটি বিষয়- পানিতে ডুবে মৃত্যু রোধ-কে আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে নিয়ে আসা এবং এ বিষয়ক একটি রেজুলেশন গ্রহণে নেতৃত্ব দেওয়ার মাধ্যমে বৈশ্বিক সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনে বাংলাদেশ তার একটি প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করল।❐